আজ ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। গত বছরের এই দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।  

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে প্রাপ্তির খাতায় অনেক যোগ থাকলেও কিছু আক্ষেপও ছিল এই অভিনেতার। এক সাক্ষাৎকারে তিনি নকল সিনেমা নিয়ে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘এখন তামিল, তেলেগু সিনেমা মোবাইলে দেখে হুবহু শট দিতে বলেন কিছু পরিচালক। আমরাও বাধ্য হয়ে শট দেই। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যে সব দৃশ্যের হুবহু শট দিচ্ছি ওইসব শিল্পী এবং কালচারের সঙ্গে আমার মিল আছে কিনা? যে শিল্পীর সংলাপ ও চরিত্রে আমি অভিনয় করছি আমার কি তার মতো ফিগার? তাই যদি না হয়, তাহলে তাদের হুবহু নকল করছি কেন?’

চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘শীত, বর্ষা, গ্রীষ্ম নেই, শুটিং সেটে বারমাসই আমের ডাল খেতে হয়। অধিকাংশ শুটিং হয় পরিকল্পনা ছাড়া। কোন শিল্পীর কখন কাজ পরিচালক ঠিকমতো বলতে পারেন না। যে কারণে দেখা যায় শিল্পীরা শুটিং সেটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকেন কিন্তু শুটিং হয় না। এসব কারণে খাবার কখনও সঠিক সময়ে খাওয়া হয় না বরং পরে খেতে হয়। এতে ডাল নষ্ট হয়ে যায়। এই ভুল এড়াতে অনেক সময়ই বলা হয়- ডালে আম দেওয়া হয়েছে।’

সাদেক বাচ্চুর আসল নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কর্মজীবনের দীর্ঘ ৩৩ বছর ডাক বিভাগের কর্মরত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন অভিনয়ে। পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও সিনেমা সব মাধ্যমেই দারুণ অভিনয় দিয়ে দর্শকের মন জয় করেছিলেন তিনি।

নব্বই দশকে এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী’ সিনেমায় অভিনয়ের পর দেশজুড়ে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সাদেক বাচ্চুর। সব মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য-‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবননদীর তীরে’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখি’, ‘বিদ্রোহী, ‘এক পৃথিবী প্রেম’, ‘মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি’, ‘পিতা মাতার আমানত’ ইত্যাদি।

আরআইজে