ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি গত ১০ জানুয়ারি হঠাৎই মিডিয়াকে জোড়া সুখবর দেন। প্রথমত, তিনি মা হতে যাচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, গত ১৭ অক্টোবর তিনি বিয়ে করেছেন নায়ক শরিফুল ইসলাম রাজকে।

পরী জানান, ৭ দিনের তুমুল প্রেমের মধ্যেই হুট করে বিয়েটা করেছিলেন তিনি। ফলে স্মরণীয় দিনটাকে সে অর্থে ফ্রেমবন্দিও করা হয়নি। সেই আক্ষেপ ঘোচাতেই সম্প্রতি আয়োজন করা হয় রাজ-পরীর গায়েহলুদ ও বিয়ে অনুষ্ঠানের।

তবে এই আনুষ্ঠানিক বিয়েতে রাজ-পরীর একটি ছবি নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আর এই বিষয়টি বেশ নাড়া দিয়েছে সংগীতশিল্পী, উপস্থাপিকা ও লেখিকা সাজিয়া সুলতানা পুতুলকে। এ নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন পুতুল। যা এরইমধ্যে নেটিজেনদের কাছে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।

পুতুল তার পোস্টে লেখেন, ‘পরীমণিকে কখনো লেখার প্রসঙ্গ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি বলে কখনো লিখিনি কিছুই। মানুষ তার স্বাধীন সত্তায় বাঁচবে এই বিশ্বাসের মানুষ আমি। মানুষের ব্যক্তিগততায় তাই কৌতূহলী হই না। কিন্তু এই ছবিটা চোখে পড়ার পর তাকিয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ। ছবিটা যদিও একটা কৌতুকে পরিণত হয়েছে এরই মধ্যে। কিন্তু ছবির মনস্তত্ত্বটা একটু অন্যরকম।’

এই গায়িকার ভাষ্য, ‘একজন নারী যখন সমাজে নিন্দিত হতে হতে অসম্মানের তলানিতে চলে যায়, অনেক কিছু সয়ে আসা একজন নারী যখন সমাজের পুরুষদের কাছ থেকে গালি ছাড়া আর কিছুই প্রত্যাশা করার সাহস হারিয়ে ফেলে, জীবনের নানান বাঁক দেখে আসা একজন নারী যখন সর্বস্তরে কৌতুকের বিষয় হয়ে যায়, তখন জীবনের বিশেষ একটা মুহূর্তে চোখে জল আসা খুব স্বাভাবিক, তা পর্দার জীবনে তিনি যতো বড় অভিনেত্রীই হোন না কেনো। এই ছবিটায় তিনি একা বসে নেই, তার ভিতরে আরেকটা প্রাণের অস্তিত্ব।’

নায়িকা পরীমণিকে উদ্দেশ্য করে গায়িকা পুতুল লেখেন, ‘পুরুষশাসিত সমাজে নানান রঙের পুরুষের ভিড়ে সবচাইতে বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য মনে হওয়া পুরুষটিকে পাশে নিয়ে একটা বিশেষ মুহূর্ত উদযাপনের সময় তার মনে হয়তো যতোটা না আনন্দ ছিলো, সেরকমই ছিলো কিছু হাহাকার আর স্মৃতি রোমন্থন। সেই স্মৃতি অবশ্যই সুখস্মৃতি নয়। বিয়ের আসরে বসে অভিভাবকহীন একটা সাধারণ মেয়ের যে হাহাকার জাগতে পারে, যে মুখগুলো চোখে ভাসতে পারে, তার ক্ষেত্রেও হয়তো তা হয়েছে।’

পুতুলের ভাষায়, ‘এখানে তাকে আক্রমণ করার সবচেয়ে সহজ অস্ত্রটি হলো, এই অনুভূতি তো তার জীবনে প্রথম নয়। আরও একাধিকবার বিয়ের পিঁড়িতে বসার অভিজ্ঞতা তো তার আছে। কিন্তু একটা জীবন যখন কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকে তখন মানুষের অনিশ্চয়তা বাড়তে বাড়তে আকাশ ছোঁয়। সেখানে আপাতদৃষ্টিতে একটা নিশ্চিন্ত সমাধানের পথ খুঁজে পেলে সেই কান্নাটা আনন্দেরও হতে পারে।’

পুতুল লেখেন, ‘তার এই কান্না বেদনার নাকি আনন্দের তা নির্ধারণ করা সমাজের কাজ নয়। আপাতত অভিনন্দন আর শুভকামনা জানানো যেতেই পারে পরীমণিকে। যে- কাঙ্ক্ষিত ভালোবাসার খোঁজ করতে করতে জীবনটা এতোটা নাটকীয় হলো, তা এবার সত্যি হয়ে ধরা দিক।’

আরআইজে