সময়টা ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, দেশের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আরও কঠোরভাবে দেখভাল করতে হবে আইএমইডিকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রত্যেক বিভাগ ও জেলায় আইএমইডি’র অফিস স্থাপন করে প্রকল্পের নজরদারি কঠোর করতে হবে।”

আইএমইডি’র কর্মকর্তারা জানান, বিভাগীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) অফিস স্থাপনের পাশাপাশি পদসৃজন করে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে এনইসি সভায় অনুশাসন দেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ওই নির্দেশনা প্রায় দুই বছর পার হতে চললেও এর কার্যক্রম এখনও ফাইল চালাচালিতে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

প্রত্যেক বিভাগ ও জেলায় আইএমইডি’র অফিস স্থাপন করে প্রকল্পের নজরদারি কঠোর করতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে আইএমইডি’র পর্যবেক্ষণগুলো যথাযথ এবং চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে উত্তরণের জন্য সময়োপযোগী সুপারিশগুলো দিতে হবে— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এনইসি সভায় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে আইএমইডি’র পর্যবেক্ষণগুলো যথাযথ এবং চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে উত্তরণের জন্য সময়োপযোগী সুপারিশগুলো দিতে হবে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে আইএমইডি’র পর্যবেক্ষণগুলো অনুসরণের নির্দেশ দেন।

বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপনে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী, সেটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি

সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইএমইডি’র সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সারাদেশে প্রকল্প পরিবীক্ষণের সুবিধার্থে আইএমইডি’র জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এজন্য বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপন করা এবং বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সংশ্লিষ্ট বিভাগে চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনার বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্দেশনা দেন। বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠেয় উন্নয়ন কমিটির সভায় আইএমইডি’র প্রতিনিধি প্রেরণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত প্রগতিশীল মানুষ। তিনি চান আরও কঠোরভাবে প্রকল্পগুলো মনিটরিং করা হোক। কিন্তু সরকারের কিছু আইন-কানুন আছে, যেগুলো অতটা প্রগতিশীল নয়। এখানে টেকনিক্যাল প্রশ্ন একটা উঠেছে, এই টেকনিক্যাল প্রশ্ন সমাধানের জন্য ফাইল চালাচালি হচ্ছে

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান

একনেক বা এনইসিতে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রশ্নে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ব্যবস্থাপনার ঘটতিতেই নির্দেশনাগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন হয় না। প্রধানমন্ত্রীর একটা বড় অফিস আছে, এগুলো উনার অফিসের লোকজন মনিটরিং করতে পারেন। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নিজের পক্ষে তো অনুশাসন দিয়ে আবার সেগুলোর মনিটরিং করা সম্ভব নয়।’

ড. জাহিদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যেকটা নির্দেশনার সময় টাইমলাইন বলে দেয়া হয় যে, এগুলো করেন। কিন্তু এটা কে করবে, কীভাবে করবে, কবে নাগাদ করবে— সেটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া তো উনার অফিসের দায়িত্ব। যেকোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীরই সবকিছু ডিটেইলস মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি শুধু দিকনির্দেশনাগুলো দেবেন, এটাই নিয়ম। এজন্য প্রত্যেকটা অনুশাসন বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের সঙ্গে বসে একটা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা উচিত। এক্ষেত্রে ফলোআপ যদি না হয়, তাহলে বাস্তবায়নে দেরি হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই ফলোআপটা করা উচিত।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ 

তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো পরিবর্তন বা সংস্কারে কিছু কিছু লোক বাধা দেবেই এবং সেটা যদি তাদের ওপর চাপ না থাকে তাহলে সেটা বাস্তবায়ন হবে না। এই চাপটা বা তাগিদটা শুধু এককালীন হলেও হবে না।’

২০১৯ সালের নভেম্বরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপনসহ পদসৃজন ও প্রয়োজনীয় জনবল কাঠামো অনুমোদনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চিঠি দেন। পরিকল্পনামন্ত্রীর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেটির অনুমোদনও দেয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় আইএমইডি’র প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়ে ফেরত পাঠায়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ফাইলটি আইএমইডি থেকে পরিকল্পনামন্ত্রীর দপ্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে

প্রধানমন্ত্রী আইএমইডি’র বিষয়টি পরবর্তীতে ফের জানতে চেয়েছে— এমন কথায় ড. জাহিদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জানতে চাইতে হবে কেন? জানতে চাইবে তো উনার অফিস, সঙ্গে সঙ্গে ফলোআপও করবে। এই যে জানতে চাইছেন এটার কী অবস্থা, তার মানে জানানো হয়নি বা করাও হয়নি। এটাও যদি প্রধানমন্ত্রীকে করতে হয়, তাহলে খুবই দুঃখজনক। উনাকে তো একটা টাইমলাইন দিয়ে জানানো উচিত। জানতে চাওয়া হচ্ছে মানে বিষয়গুলোতে অবহেলা করা হচ্ছে। মূলত তদারকির দুর্বলতার কারণেই অবহেলিত থাকে অনুশাসনগুলো।’

এনইসি সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন আইএমইডি’র ভারপ্রাপ্ত সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়েজউল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠান। অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে আইএমইডি সিদ্ধান্ত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। আইএমইডি’র সিদ্ধান্তে বলা হয়- ১. বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে পরিবীক্ষণের সুবিধার্থে আইএমইডি’র সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি টেকনিক্যাল ইউনিট স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও যানবাহন সংগ্রহ করতে হবে। ২. বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় জনবলের পদসৃজনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

আমরা সিপিটিইউ-এর মতো আরেকটি টেকনিক্যাল ইউনিট চেয়েছি। এই টেকনিক্যাল ইউনিট হবে ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে। একটা নতুন ইউনিটের পাশাপাশি প্রত্যেকটা সেক্টরের পদ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে

প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, আইএমইডি সচিব

এরপর ২০১৯ সালের নভেম্বরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে বিভাগীয় পর্যায়ে আইএমইডি’র অফিস স্থাপনসহ পদসৃজন ও প্রয়োজনীয় জনবল কাঠামো অনুমোদনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চিঠি দেন। পরিকল্পনামন্ত্রীর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেটির অনুমোদনও দেয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় আইএমইডি’র প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়ে ফেরত পাঠায়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ফাইলটি আইএমইডি থেকে পরিকল্পনামন্ত্রীর দপ্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

সরকারের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ 

আইএমইডিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রত্যেক বিভাগের আইএমইডি’র চাহিদায় বলা হয়, বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিটি বিভাগে একজন মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিবপর্যায়ের কর্মকর্তা), দুজন পরিচালক (উপসচিবপর্যায়ের কর্মকর্তা), চারজন উপ-পরিচালক/সহকারী পরিচালক (সিনিয়র সহকারী সচিব/সহকারী সচিবপর্যায়ের কর্মকর্তা) এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক সহায়ক জনবলসহ প্রতিটি বিভাগে তিনটি করে গাড়ির সংস্থান রেখে আইএমইডিকে শক্তিশালী করতে হবে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের এ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীসহ পরিকল্পনামন্ত্রী নীতিগত অনুমোদন দেন। প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালের মে মাসে আইএমইডি’র প্রস্তাব অনুমোদন করলেও এটা বাস্তবায়ন না হওয়ায় কর্মকর্তারা হতাশ প্রকাশ করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ

আইএমইডি’র চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রত্যেক বিভাগে একজন পরিচালক, একজন উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক দুজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা তিনজন, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একজন, হিসাবরক্ষক একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক তিনজন, ড্রাইভার একজন, অফিস সহায়ক চারজনসহ মোট ১৪৪ জনবলের জন্য সম্মতি দেয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, রুলস অব বিজনেস- ১৯৯৬ (সংশোধিত ২০১৭) অনুযায়ী মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রম মূলত নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা, মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন, আইনগত বিষয়ে মন্ত্রীকে সহযোগিতা ইত্যাদি। সচিবালয় নির্দেশমালা- ২০১৪ অনুযায়ী, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিভাজন-অনুবিভাগ, অধিশাখা ও শাখার মধ্যে সীমিত এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের শাখা/অধিশাখা বিভাগীয় পর্যায়ে স্থাপনের সুযোগ নেই।

অহেতুক সেমিনার, অহেতুক আলোচনা, অহেতুক বিদেশ ভ্রমণ, অহেতুক গাড়ি ব্যবহার— এগুলো সার্বিকভাবে কম হতে হবে। এটা আমার জেনারেল প্রিন্সিপাল। না খেয়ে টাকা বাঁচাতে হবে না, ভালো করে খান কিন্তু কাজটা ভালোভাবে করেন

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান

এমতাবস্থায়, মাঠপর্যায়ে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প নিবিড় পরিদর্শনের জন্য বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের আওতায় বিভাগীয় অফিস স্থাপনের পরিবর্তে উক্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আইএমইডি’র অধীনে একটি নতুন ডিপার্টমেন্ট গঠন এবং উক্ত ডিপার্টমেন্টের অধীন বিভাগীয় পর্যায়ে শাখা অফিস স্থাপনের প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এ বিষয়ে আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাজেট ম্যানেজমেন্ট কমিটি (বিএমসি) হয়েছে। আমি সেখানে আইএমইডি’র গাড়ি, জনবল এবং আরও যা যা সংকট আছে সবকিছু বলেছি। আমরা রাজস্ব খাত থেকে আগামী অর্থবছরে ছয়টা গাড়ি চেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘এনইসির সিদ্ধান্তে আইএমইডিকে শক্তিশালী করার বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেটা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় অধিদপ্তর করে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বলেছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, এনইসি যেভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল ওইটাই রিভাইজ ফর্মের মাধ্যমে শক্তিশালীকরণের কাজ এগিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমার প্রথম দাবি হচ্ছে, আমাকে ছয়টা গাড়ি দিতে হবে। এতদিন একটা প্রকল্পের আওতায় গাড়ির সুবিধা পেয়েছি। কিন্তু প্রকল্প শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী গাড়িগুলো পরিবহনপুলে জমা দিয়েছি। অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, গাড়ি কিনলে তো ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছি, আইএমইডিকে ছয়টা গাড়ি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিনিয়োগ হিসেবে মনে করি আমি। সরকার যদি গাড়িগুলো আইএমইডিকে দেয় তাহলে বড় বড় প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে মনিটরিং করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।’

ব্যবস্থাপনার ঘটতিতেই নির্দেশনাগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন হয় না। প্রধানমন্ত্রীর একটা বড় অফিস আছে, এগুলো উনার অফিসের লোকজন মনিটরিং করতে পারেন। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নিজের পক্ষে তো অনুশাসন দিয়ে আবার সেগুলোর মনিটরিং করা সম্ভব নয়

ড. জাহিদ, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট

এখন আইএমইডিকে অধিদপ্তর করবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘অধিদপ্তর না, সক্ষমতা বাড়ানো হবে। বিভাগীয় অফিস স্থাপনের পরিবর্তে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আইএমইডির অধীন একটি নতুন টেকনিক্যাল ইউনিট গঠন এবং কেন্দ্রীয়ভাবে শক্তিশালীকরণের জন্য পদসৃজন করা হবে। আমরা সিপিটিইউ-এর মতো আরেকটি টেকনিক্যাল ইউনিট চেয়েছি। এই টেকনিক্যাল ইউনিট হবে ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে। একটা নতুন ইউনিটের পাশাপাশি প্রত্যেকটা সেক্টরের পদ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে।’

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত প্রগতিশীল মানুষ। তিনি চান আরও কঠোরভাবে প্রকল্পগুলো মনিটরিং করা হোক। কিন্তু সরকারের কিছু আইন-কানুন আছে, যেগুলো অতটা প্রগতিশীল নয়। এখানে টেকনিক্যাল প্রশ্ন একটা উঠেছে, সরকার বিভাগীয় পর্যায়ে আলাদা ব্রাঞ্চ খুলতে পারে না। সব দপ্তরই আমাদের দপ্তর। এই টেকনিক্যাল প্রশ্ন সমাধানের জন্য ফাইল চালাচালি হচ্ছে। তবে আমরা আপাতত বেশি বেশি দিয়ে, বেশি বেশি ভ্রমণ করে, বেশি বেশি মনিটরিং করে এটা পূরণের চেষ্টা করব।’

মন্ত্রী বলেন, আমরা এটা পরিবর্তন করে, মন্ত্রণালয় কীভাবে বিভাগীয় পর্যায়ে এটা ঘুরিয়ে বা এড়িয়ে গিয়ে করতে পারে সেটার চিন্তা-ভাবনা চলছে। আমরা একটা রাস্তা বের করব। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো দেখা। এই দেখার পথই বের করব।’

আইএমইডি’র ব্যাপক সক্ষমতার অভাব রয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মোটা দাগে তারা যা চাইবে তাই দেয়া হবে। তবে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাস্টিফাই করতে হবে, কেন চাচ্ছে, কী উদ্দেশ্যে চাচ্ছে? আমাদের বুঝিয়ে বা সরকারকে বুঝিয়ে তারপর নিতে হবে। আর অহেতুক সেমিনার, অহেতুক আলোচনা, অহেতুক বিদেশ ভ্রমণ, অহেতুক গাড়ি ব্যবহার— এগুলো সার্বিকভাবে কম হতে হবে। এটা আমার জেনারেল প্রিন্সিপাল। না খেয়ে টাকা বাঁচাতে হবে না, ভালো করে খান কিন্তু কাজটা ভালোভাবে করেন।’

এসআর/এমএআর