দীর্ঘ পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন শেষে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিদায় নেয় ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্যসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতার সংকটে পড়ে নূরুল হুদা কমিশন।

নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় নূরুল হুদা কমিশনের রেখে যাওয়া সংকট নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনকে। দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১০ মাস হতে চললো, মাঠের রাজনীতির প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন করতে পারেননি তারা।

রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় আনতে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে বর্তমান কমিশনকে। দলগুলোর কাছে আস্থার কমিশনে পরিণত হতে সাংবিধানিকভাবে দেওয়া সব ক্ষমতা প্রয়োগ করছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে অনিয়মের অভিযোগ এনে সম্প্রতি একটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন বন্ধ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা, এডিসি, পুলিশের কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ মোট ১৩৩ জনকে শাস্তির আওতায় আনতে সুপারিশ করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির কর্তারা

আরও পড়ুন >> বিএনপি নির্বাচনে এলে আমরা খুশি হবো : সিইসি

নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে অনিয়মের অভিযোগ এনে সম্প্রতি একটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন বন্ধ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা, এডিসি, পুলিশের কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ মোট ১৩৩ জনকে শাস্তির আওতায় আনতে সুপারিশ করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির কর্তারা

কে এম নূরুল হুদা কমিশনের ইতিবাচক কার্যক্রমগুলো হলো- রাজনৈতিক দল নিবন্ধনে পৃথক আইন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বাংলায় রূপান্তর, মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ এনআইডি সরবরাহ, প্রবীণ ও অক্ষমদের ঘরে বসে ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি। নেতিবাচক কার্যক্রমগুলো হলো- পুরোনো ভোটারদের স্মার্টকার্ড দিতে না পারা, এনআইডি অনুবিভাগ নিজেদের কাছে রাখতে জোরাল ভূমিকা না রাখা, ইভিএম সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারা এবং ইউপি ভোটের সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণনাশের ঘটনা রুখতে না পারা।

আউয়াল কমিশনের নিয়োগ

চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ওই গেজেটে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও সাবেক সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তার সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চরম আস্থাহীনতার সংকট তৈরি হয় / ফাইল ছবি

চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রথমবারের মতো আইন প্রণয়ন করে সরকার। ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও সুধীজনের কাছ থেকে নাম আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক আহ্বান করে সার্চ কমিটি। সরাসরি ও ই-মেইলের মাধ্যমে সার্চ কমিটির কাছে প্রায় ৫০০ জনের নাম জমা পড়ে। জমা পড়া নাম থেকে প্রথম দফায় ১৪ ফেব্রুয়ারি কমন নাম বাদ দিয়ে ৩২২ জনের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এরপর বিশিষ্টজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মাধ্যমেও বেশকিছু নাম পায় সার্চ কমিটি। সেখানেও কিছু কমন নাম বাদ দিয়ে তালিকায় প্রস্তাবিত নামের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২৯ জনে। এসব নাম থেকে একাধিক দফায় বৈঠক করে ২০ জনের নাম বাছাই করা হয়। দ্বিতীয় দফায় সেটা ১২-১৩ জনে আসে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য যোগ্য ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে জমা দেয় সার্চ কমিটি।

নির্বাচন কমিশনে যোগ দিয়েই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপ শুরু করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নিয়ে ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ করেন তারা

সুষ্ঠু নির্বাচনে রাজনৈতিক সমঝোতায় সিইসি

নির্বাচন কমিশনে যোগ দিয়েই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপ শুরু করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নিয়ে ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ করেন তারা। সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হাবিবুল আউয়াল সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘সমঝোতা জরুরি’ বলে মন্তব্য করেন। সমঝোতা না হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দুরূহ হয়ে পড়বে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন >> নির্বাচনী বছরে ক্ষোভ বাড়ছে ইসি কর্মকর্তাদের

প্রথম সংলাপে সিইসি জানান, দলগুলোর মধ্যে যদি মোটামুটি সমঝোতা না থাকে, পক্ষগুলো বিবাদমান হয়ে যায়, তাহলে আমাদের পক্ষে ভালোভাবে নির্বাচন করাটা দুরূহ হবে। তাই রাজনৈতিক সমঝোতাটা গুরুত্বপূর্ণ। সমঝোতা হলে ইসির কাজ সহজ হবে।

কিছু কিছু রাজনৈতিক দল আছে তারা কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখছে না— উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সবার আস্থা অর্জনে সচেষ্ট থাকাতে হবে। নির্বাচন কমিশনাররাও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন।’ তিনি এ সময় সব দলকে নির্বাচনে আনার পরিবেশ সৃষ্টির কথাও জানান।

নির্বাচনে আনতে ইসি ফোর্স করবে না

আউয়াল কমিশনের ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে চলতি বছরের এপ্রিলে সিইসি জানান, কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটা ফোর্স করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে, কমিশনের দায়িত্ব থাকবে সবাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে আহ্বান জানানোর। সব দল অংশ না নিলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না। গণতন্ত্র বিকশিত হবে না।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) / ফাইল ছবি

প্রথম পরীক্ষায় কুমিল্লা সিটির তফসিল

দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নিয়ম অনুযায়ী এ বছরের ১৬ মে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণের কথা। সেই হিসাবে গত বছরের (২০২১ সাল) ১৬ নভেম্বর থেকে এ সিটির নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়। সর্বশেষ কুমিল্লা সিটির ভোট হয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ। নির্বাচিত কর্পোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ১৭ মে। সেক্ষেত্রে ১৬ মের মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা ছিল।

আরও পড়ুন >> রিটার্নিং কর্মকর্তা-এডিসিসহ ১৩৩ জনের শাস্তির সিদ্ধান্ত

ইসির দায়িত্ব নিয়ে আউয়াল কমিশন গত ৫ এপ্রিল প্রথম বৈঠক করে। সেই বৈঠকে কুমিল্লা সিটির ভোট নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তারা। ২৫ এপ্রিল প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভোটের তফসিল দেয় কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন।

প্রথম পরীক্ষায় কুমিল্লা সিটির পাশাপাশি ১৭৬টি ইউনিয়ন পরিষদ, পাঁচটি পৌরসভা এবং চারটি উপজেলা পরিষদে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে বলে দাবি আউয়াল কমিশনের

নির্বাচন যুদ্ধক্ষেত্র নয়

প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সশরীরে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ভোটের মাঠ পরিদর্শনে আসেন সিইসি। বলেন, নির্বাচন যুদ্ধক্ষেত্র নয়। এখানে কেউ পেশিশক্তি দেখিয়ে এবং সহিংসতা করে জয়লাভ করবেন— এ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বর্তমান কমিশনের অধীনে কুমিল্লা সিটির নির্বাচন একটা মডেল হবে।

আরও পড়ুন >> জামায়াত অন্য নামে এলে ৫ কমিশনার বসে সিদ্ধান্ত নেবো : ইসি রাশেদা

প্রথম পরীক্ষায় পাস, দাবি আউয়াল কমিশনের
 
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করার প্রত্যয় ছিল আউয়াল কমিশনের। কিন্তু ভোটে বারবারই বাধা হয়ে দাঁড়ান সংসদ সদস্য বাহাউদ্দীন বাহার। কমিশন এমপি বাহারকে এলাকা ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়েও শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরবর্তী সময়ে ‘বাহার অস্বস্তি’ নিয়ে কুমিল্লা সিটির ভোট সম্পন্ন করে ইসি।

প্রথম পরীক্ষায় কুমিল্লা সিটির পাশাপাশি ১৭৬টি ইউনিয়ন পরিষদ, পাঁচটি পৌরসভা এবং চারটি উপজেলা পরিষদে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে বলে দাবি আউয়াল কমিশনের।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনও বিএনপিসহ অনেকের আস্থা অর্জন করতে পারেনি তার কমিশন / ফাইল ছবি 

১৪ দিনে ৩৯ দলের সঙ্গে সংলাপ

গত জুলাই মাসের ১৪ দিনে সকাল-বিকেল টানা সংলাপের মাধ্যমে ৩৯ দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে ইসি। ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে তারা। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেছিল তৎকালীন কে এম নূরুল হুদা কমিশন। ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত হুদা কমিশনের আমন্ত্রণে ৩৯টি দল সংলাপে অংশ নেয়। তবে, আস্থাহীনতায় আউয়াল কমিশনের ডাকা সংলাপে সাড়া দেয়নি নয়টি রাজনৈতিক দল।

জাতীয় নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে আউয়াল কমিশন। এগুলো হলো- নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগীকরণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ, বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ, নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি ও প্রশিক্ষণ, ভোটার সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ, পর্যবেক্ষণ সংস্থার নিবন্ধন ও নবায়ন কার্যক্রম এবং নির্বাচনী কার্যক্রমে গণমাধ্যমকে আইনি কাঠামোর আওতায় সম্পৃক্তকরণ।

গাইবান্ধার উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা

ভোটকেন্দ্রে নানা অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার মতো সাহসী উদ্যোগ নেয় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। প্রথমে নানা অনিয়মের কারণে ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সিদ্ধান্তে পুরো নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ করে নিজেদের সাহসী অবস্থান জানান দেয় কমিশন। যা সর্বমহলের প্রশংসা কুড়ায়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে আউয়াল কমিশন। এগুলো হলো- নির্বাচন প্রক্রিয়া সময়োপযোগীকরণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ, বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ, নির্বাচনে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহার

আরও পড়ুন >> স্বর্গ থেকে ইসি নিয়ে এলেও নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারবেন না

আরপিও সংশোধনে আইন মন্ত্রণালয়কে আল্টিমেটাম

কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব নেওয়ার পর রিপ্রেজেন্টেশন অব পিপলস অর্ডার (আরপিও) বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেয় সরকারের কাছে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ে সেই প্রস্তাব দীর্ঘদিন পড়ে থাকে। এ বিষয়ে ইসি দুই দফা চিঠি দিয়েও আইন মন্ত্রণালয়ের জবাব পায়নি। অবশেষে সিইসি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আরপিও সংশোধনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের রেসপন্স পেতে আল্টিমেটাম দেন। আইন মন্ত্রণালয় ২৯ নভেম্বর জবাব দিতে বাধ্য হয়

নূরুল হুদা কমিশনের রেখে যাওয়া সংকটে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন— মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা / ফাইল ছবি

গাইবান্ধায় ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কড়া বার্তা

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের ঘটনা ঘটে। অনিয়মের প্রমাণ মেলায় ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় কমিশন। এর মাধ্যমে নিজেদের কঠোর অবস্থানের কথা জানান দেয় আউয়াল কমিশন। শাস্তি পাওয়াদের তালিকায় আছেন রিটার্নিং, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রিসাইডিং ও পুলিশ কর্মকর্তারা।

আউয়াল কমিশনের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচন কমিশন নানা কারণে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন তার মূল ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এটাকে স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে এখনই এর পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

‘অতীতে অনেকে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করেছে। কার্যক্রম-বহির্ভূত অনেক কাজ করেছে। যারা এই কাজে সায় দিয়েছেন তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। বিশেষ করে গত কমিশন নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান কমিশন চেষ্টা করছে, তবে কত দিন এটা থাকবে সেটাই দেখার বিষয়। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতে বর্তমান কমিশনকে প্রয়োজনে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে।’

এসআর/এসএম/এমএআর/