শিল্পীর চোখে পায়রা সমুদ্রবন্দর

বহু বছরের বঞ্চনা, জনম জনমের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে স্বাধীনতার দূত শুনিয়েছিলেন মুক্তির গান। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’। মুক্তির সেই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে পুনর্জন্ম হয়েছে একটি জাতির। রক্তবন্যা পেরিয়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে শুরু হওয়া শাপমুক্তি পথের বাঁকে বাঁকে ছিল ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত। কিন্তু মুক্তিপাগল বাঙালিকে থামানো যায়নি, অমঙ্গলের বিষদাঁত ভেঙে ঘুরে দাঁড়িয়েছে নতুন সূর্য হাতে, ছড়িয়েছে নতুন আলো বিশ্বভুবনে। জীবনমান, অর্থনীতি, অবকাঠামোসহ বহু খাতে পেছনে ফেলেছে প্রতিবেশীদের। ঢাকা পোস্টের ধারাবাহিক উন্নয়নের গল্পগাথায় আজ থাকছে বন্দর ও অবকাঠামো খাতের সার্বিক চিত্র…

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে শেষ হওয়ার কথা ছিল পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের দুটি প্রকল্পের কাজ। সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রকল্পগুলোর সময় ও ব্যয় বেড়েছে।

প্রকল্প দুটি হলো- ‘পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ এবং ‘পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো/সুবিধাদি উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধিত)’। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে যাবে। এজন্য তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অগ্রাধিকারভিত্তিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে।

করোনার জন্য এ প্রকল্পের ছয় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কার্যক্রমগুলো হলো- ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনের ১৪টি প্যাকেজের কাজ, নির্মাণাধীন জলযানগুলোর বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জাহাজের ট্রায়াল ডেলিভারি, প্রশিক্ষণ ও বন্দরের সম্পূর্ণ মাস্টারপ্ল্যান কার্যক্রম। তবে এখন পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮০ দশমিক ২৬ শতাংশ

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য মতে, ‘পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ প্রকল্পটির বাস্তবায়নের সময় ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী করে মেয়াদকাল বাড়িয়ে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। তিন হাজার ৯৮২ কোটি টাকা থেকে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছে চার হাজার ৫১৭ কোটি টাকা।

আইএমইডি বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের কাজ চলমান। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। বড় প্রকল্প হওয়ায় সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করে দ্রুত প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন যত দ্রুত শেষ হবে তত দ্রুত এ অঞ্চলের অর্থনীতি চাঙা হবে।’

প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের কাজ চলমান। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। বড় প্রকল্প হওয়ায় সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করে দ্রুত প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন যত দ্রুত শেষ হবে তত দ্রুত এ অঞ্চলের অর্থনীতি চাঙা হবে

প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, সচিব, আইএমইডি বিভাগ

অন্যদিকে, ‘পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো/সুবিধাদির উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত। সরকারি অর্থায়নে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে চার হাজার ৩৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্রকল্পের সার্বিক আর্থিক অগ্রগতি ৬১ দশমিক ৮৪ শতাংশ ও বাস্তব অগ্রগতি ৭২ দশমিক ১২ শতাংশ।

প্রায় ছয় হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠছে সমগ্র পায়রা সমুদ্রবন্দর

ফাস্ট ট্র্যাক প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনার জন্য এ প্রকল্পের ছয় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কার্যক্রমগুলো হলো- ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনের ১৪টি প্যাকেজের কাজ, নির্মাণাধীন জলযানগুলোর বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জাহাজের ট্রায়াল ডেলিভারি, প্রশিক্ষণ ও বন্দরের সম্পূর্ণ মাস্টারপ্ল্যান কার্যক্রম। তবে এখন পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮০ দশমিক ২৬ শতাংশ।

প্রায় ছয় হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠছে সমগ্র পায়রা সমুদ্রবন্দর। এ বন্দরে তৈরি হচ্ছে কন্টেইনার, বাল্ক, সাধারণ কার্গো, এলএনজি, পেট্রোলিয়াম ও যাত্রী টার্মিনাল। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চল, তৈরি পোশাক, ওষুধ শিল্প, সিমেন্ট, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, সার কারখানা, তেল শোধনাগার ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পসহ আরও অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে

উল্লেখ্য, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে দেশের অর্থনীতি চাঙা হবে। পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের তৃতীয় সামুদ্রিক বন্দর এটি। জেলার কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ও বালিয়াতলী সংলগ্ন রামনাবাদ চ্যানেল ও আন্ধারমানিক নদীর তীরবর্তী টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া স্থানে এ বন্দর অবস্থিত। ২০১৩ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামে ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। একই বছরের ১৩ আগস্ট বন্দরটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

পায়রা বন্দর থেকে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে

সুপরিসর চ্যানেল : বহির্নোঙর থেকে রাবনাবাদ চ্যানেলে ঢোকার পথে পানির সর্বনিম্ন গভীরতা প্রায় পাঁচ মিটার। চ্যানেলের ভেতর এ গভীরতা ১৬ থেকে ২১ মিটার। চ্যানেলের ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় ড্রেজিং করা হলে জোয়ারের সময় ১৬ মিটার গভীর এবং ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট জাহাজ এখানে আসতে পারবে।

পায়রা বন্দর ঘিরে জেগে উঠেছে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল

শিল্প-কারখানা : প্রায় ছয় হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠছে সমগ্র পায়রা সমুদ্রবন্দর। এ বন্দরে তৈরি হচ্ছে কন্টেইনার, বাল্ক, সাধারণ কার্গো, এলএনজি, পেট্রোলিয়াম ও যাত্রী টার্মিনাল। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চল, তৈরি পোশাক, ওষুধ শিল্প, সিমেন্ট, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, সার কারখানা, তেল শোধনাগার ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পসহ আরও অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

সমুদ্রের তীরবর্তী হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে এটি গড়ে ওঠার পর প্রতিবেশী দেশগুলো ট্রানজিট সুবিধা নিতে আগ্রহী হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত ও চীনের সমন্বিত উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে গড়ে উঠছে ইকোনমিক করিডোর। ভৌগলিক অবস্থানগত সুবিধার কারণে সমুদ্রপথে সিল্ক রুটের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে পায়রা বন্দরের 

সার উৎপাদন : বর্তমানে চাহিদার ৩০ শতাংশ সার দেশেই উৎপাদন হয়। ৭০ ভাগ আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ হলে গ্যাসের মাধ্যমে এখানেই সার কারখানা চালু করা সম্ভব হবে।

নতুন কর্মসংস্থান : বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এ বন্দর নির্মাণে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে ইপিজেড, এসইজেড, জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত খাতে বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। নতুন শিল্প এলাকা গড়ে ওঠার সুবাদে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার অধিবাসীরা।

জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রসার : পোশাক শিল্পের পর সবচেয়ে গতিশীল হচ্ছে জাহাজ নির্মাণ শিল্প। দেশে ছোটোখাটো শতাধিক জাহাজ নির্মাণ কারখানা রয়েছে। বিশ্বজুড়ে জাহাজ শিল্পে প্রায় চার হাজার কোটি ডলারের বাজারে বাংলাদেশেরও অংশীদার আছে। এ শিল্প খাতে অচিরেই বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা রফতানিকারক দেশ। তবে এ খাতের অন্যতম সমস্যা হলো চ্যানেলের স্বল্প গভীরতা। পায়রা বন্দর চালু হলে তুলনামূলক গভীর রাবনাবাদ চ্যানেলের সুবিধা নিতে অনেকেই তাদের শিল্প স্থাপনা সরিয়ে আনবেন এখানে।

সমুদ্রের তীরবর্তী হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিবেশী দেশগুলো ট্রানজিট সুবিধা নিতে আগ্রহী হবে

বিদ্যুৎ উৎপাদন : ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছাতে চায় বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে উপকূলীয় এলাকায় ৫/৬টি কয়লাচালিত বিদ্যুৎ স্থাপনা গড়ে তুলছে সরকার। ইতোমধ্যে পায়রা বন্দরে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের লক্ষ্যে চীনা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে নর্থওয়েস্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কয়লা আনলোড করার জন্য একটি কয়লা টার্মিনাল নির্মাণ হচ্ছে পায়রা বন্দরে। এসব কার্যক্রমের ফলে বিপুল রাজস্ব আয়ের সুযোগ তৈরি হবে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে খাদ্যশস্য সরবরাহ : সড়কপথের তুলনায় নৌপথে যাতায়াত ও মালামাল সরবরাহ অধিকতর সহজ ও সাশ্রয়ী। বরিশাল হয়ে খুলনা ও মাদারীপুর অঞ্চলে সিমেন্টের ক্লিংকার এবং খাদ্যশস্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে পায়রা বন্দর।

ট্রানজিট সুবিধা ও ইকোনমিক করিডোর : সমুদ্রের তীরবর্তী হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে এটি গড়ে ওঠার পর প্রতিবেশী দেশগুলো ট্রানজিট সুবিধা নিতে আগ্রহী হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত ও চীনের সমন্বিত উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে গড়ে উঠছে ইকোনমিক করিডোর। ভৌগলিক অবস্থানগত সুবিধার কারণে সমুদ্রপথে সিল্ক রুটের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে পায়রা বন্দরের।

ব্লু ইকোনমি : সমুদ্রপথে ব্যবসার পরিধি বিস্তার, সাগরের খনিজ সম্পদ কাজে লাগিয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জন, সামুদ্রিক মাছের যথাযথ ব্যবস্থাপনা এবং সমুদ্র পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার মাধ্যমে সুনিশ্চিত হবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রগতি। ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা কাজে লাগানো হলে দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকার পাশাপাশি বিপর্যয় ও দুর্যোগ প্রতিরোধ হবে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গার ওপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে সমুদ্রের তলদেশের প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার এলাকার জৈব-অজৈব সব সম্পদের মালিকানা বাংলাদেশের। এখানে প্রায় ২০০ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাসের মজুত রয়েছে।

অভ্যন্তরীণ রুটের সংযোগ : পদ্মাসেতু চালু হলে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা সৈকত পর্যন্ত চারলেনের সড়ক নির্মাণ হবে। ফলে পায়রা বন্দরের সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ সুগম হবে। রেলপথের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য জেলার সঙ্গে যুক্ত থাকবে পায়রা বন্দর। পায়রা থেকে নৌপথে দেশের বিভিন্ন স্থানের নৌযান চলাচলে বর্তমানে দুটি রুট রয়েছে। একটি পটুয়াখালী হয়ে বরিশাল, অন্যটি ভোলার পশ্চিম থেকে শুরু করে কাজল এবং তেঁতুলিয়া নদী হয়ে কালিগঞ্জ। আকাশপথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি বিমানবন্দর গড়ে উঠবে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধ : বরিশাল বিভাগীয় অঞ্চল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস কবলিত এলাকা। পায়রা বন্দর প্রকল্প চালু হলে একে ঘিরে গড়ে উঠবে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। এসব স্থাপনা রক্ষায় উপকূলজুড়ে গড়ে তোলা হবে সবুজ বেষ্টনী ও ইকো ট্যুরিজম। ফলে প্রতিহত হবে ঝড়ের আঘাত। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আরও সহজ হবে।

কুয়াকাটাকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প : এক বা একাধিক পাঁচ তারকা মানের হোটেল স্থাপনের মাধ্যমে এলাকাটিকে সহজেই একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্রে উন্নীত করা সম্ভব।

এসআর/ওএফ/এমএআর/