ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ ঢাকা ওয়াসার কর্মচারীদের কল্যাণে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি। সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা চার হাজারের বেশি। প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআই) প্রকল্পের ৪-৫শ কোটি টাকার দুর্নীতি অভিযোগ তুলে সেই সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল চান ওয়াসার  আলোচিত-সমালোচিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান।

সমিতির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে মে মাসে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার পর সমবায় অধিদপ্তর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। চলতি সপ্তাহে ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এই প্রতিবেদনে সমিতির নিবন্ধন বাতিলের পক্ষে কোনো সুপারিশ করা হয়নি। তবে সমিতির অ্যাকাউন্টে জমা সাড়ে ৬ কোটি টাকা ও ৬৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হওয়ার আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। সমিতির নেতারাও এই একই রকমের আশঙ্কা করছেন।   

সমিতির নেতারা বলছেন, সমিতির প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পদ ওয়াসার কব্জায়। নিজের অনুসারী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাঁচাতে এবং সমিতির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ লুটপাট করতে নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এমডি তাকসিম।

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাবুদ্দিন সরকার ঢাকা পোস্টেকে বলেন, ওয়াসার এমডি এই সমিতির সদস্য  নন। ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী থেকে সর্বনিম্ন কর্মচারী এই সমিতির সদস্য। আমাদের সকলের এক হাজার টাকা শেয়ারে এমন সমিতি। মূলত দুর্নীতিবাজ একটি গোষ্ঠীকে বাঁচাতে তিনি (এমডি) সমিতির নিবন্ধন বাতিল চেয়েছেন। ওই সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদক ইতোমধ্যে মামলা ও চার্জশিট দিয়েছে। তার বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান। 

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন করার কারণে ওয়াসার এমডি আমাকেসহ অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি খেয়েছেন। মূলত তিনি ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সমিতির নেতৃত্ব যাদের হাতে ছিল, তাদের বাঁচাতেই সমিতির বিলুপ্তি চেয়েছেন।   

শাহাবুদ্দিন সরকার এসব দাবি করলেও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সমিতির অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্রও উঠে এসেছে। পিপিআই প্রকল্প খাতে ২০০৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৩ বছরের অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিও দাবি করেছে তদন্ত কমিটি।  

ওয়াসা এমডির আবেদন ও কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে টিমের আহ্বায়ক ও সমবায় অধিদপ্তরের অতিরিক্ত নিবন্ধক মো. আহসান কবীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী অধিদপ্তর বরাবর রিপোর্ট জমা দিয়েছি, যা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত এলে জানতে পারবেন। এ অবস্থায় বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়।

সমিতির নিবন্ধন কেন বাতিল চান তাকসিম?
সমিতির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে তাকসিম এ খানের চিঠিতে লেখা হয়েছে—  ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় চার হাজারের বেশি। ওয়াসার কর্মচারীদের বেশীর ভাগ সদস্যই ওই বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্য। ঢাকা জেলা সমবায় অফিসের রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত ওই সমিতির আর্থিক বিষয় নিরীক্ষণ করা এখতিয়ার জেলা সমবায় অফিসের। মেট্রোপলিটন থানা সমবায় অফিস বিভিন্ন সময়ে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির অডিট করেছে। অডিটে সমিতির আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়ে। যার মধ্যে রয়েছে— সমিতির আর্থিক বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন ব্যতিরেকেই বিভিন্ন খরচ করা, পিপিআই নামক একটি প্রকল্পের আর্থিক হিসাব অডিটে প্রদর্শন না করা, অডিট সংশোধনী দাখিল না করা প্রভৃতি। 

রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী পিপিআই (প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট) কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা ওয়াসার বিলিং ও মিটার কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্দেশ্য ছিল, ঢাকা ওয়াসার স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার পাশাপাশি সমিতি যেন স্বাবলম্বী হয়।
তাকসিম এ খান। ফাইল ছবি। 

প্রায় প্রতিটি অডিট রিপোর্টে ত্রুটির কথা বলা হলেও সমিতির পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনাই পালন করা হয়নি। পিপিআই প্রকল্প খাতে ২০০৫-১৮ সাল পর্যন্ত চার থেকে পাঁচশত কোটি টাকার সম্পৃক্ততা ছিল। কিন্তু সমিতির স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দেড়যুগের বেশি সময় তা ‘আনঅডিটেড’ থেকে গেছে। সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির খামখেয়ালীপনার কারণে এই বিশাল অঙ্কের টাকা কোনো রকম অডিট ছাড়াই অবৈধভাবে ব্যয় হয়। থানা সমবায় অফিসের অডিট দল বিভিন্ন বছরে অডিটকালে ত্রুটিগুলো উল্লেখ করে গেছেন দায়সাড়াভাবে। এ সকল অনিয়মে ব্যাখ্যা তলব, শাস্তির ব্যবস্থা কিংবা সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ঢাকা জেলা সমবায় অফিস।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি ও অপরাপর কিছু প্রভাবশালী কুচক্রী সদস্য কোনো প্রকার আর্থিক বিধি অনুসরণ না করে কয়েকশ কোটি টাকা তছরুপ করেছে। যাচ্ছেতাইভাবে আর্থিক অব্যবস্থাপনা চালিয়ে গিয়ে সমিতির বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের কারণে কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করে সমিতির কার্যক্রম বিলুপ্ত করার মতো পদক্ষেপ নেওয়াকে ন্যায়সঙ্গত বিবেচনা করতে গত ২১ মে মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দেয় ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান।

অধিদপ্তরের তদন্ত রিপোর্টে যা আছে 
ওয়াসার এমডির চিঠির প্রেক্ষিতে ১২ জুন তিন সদস্যের বিশেষ কমিটি গঠন করে সমবায় অধিদপ্তর। সমিতির রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় কমিটি দেখতে পায়, বিশ্ব ব্যাংক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা ওয়াসা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের চতুর্পক্ষীয় বৈঠকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্য ১৯৯৬ সালের ২৫ নভেম্বর ঢাকা ওয়াসা এবং ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তি মোতাবেক পিপিআই (প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট) কার্যক্রমের আওতায় ওয়াসার বিলিং ও মিটার কার্যক্রম শুরু হয়। বিলিং টার্গেটের ১০ শতাংশ সিকিউরিটি মানি জমা দিয়ে ওই পিপিআই কার্যক্রম শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী পিপিআই প্রকল্পে বিলিং ও মিটারের জন্য জনবলসহ যাবতীয় খরচ ঢাকা ওয়াসার বহন করার কথা। প্রথম পর্যায়ে বিলিংয়ের জন্য কমিশন ৬ শতাংশ হলেও পরবর্তীতে তা ১০ শতাংশে বৃদ্ধি করা হয়। 

আর চুক্তি অনুযায়ী এমন কার্যক্রমে নিয়োজিত ওয়াসার কর্মচারীরা বেতন-ভাতাদির পাশাপাশি কাজ অনুযায়ী অতিরিক্ত ভাতা পাবেন। প্রথম পর্যায়ে পিপিআই প্রকল্পের আওতায় সমবায় সমিতির নামে একটি জোন বরাদ্দ হয়। পর্যায়ক্রমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমিতির কার্যক্রমের সফলতার ফলে আরও কয়েকটি জোন সমবায় সমিতির নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকা ওয়াসা হতে একজন পিডি, দুইজন কো-পিডি অন্যদিকে সমবায় সমিতির মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ থেকে একজন চেয়ারম্যান, তিনজন কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ প্রদান করা হয়। তারা প্রকল্পের পরিচালনা ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে।

২০২২ সালের ২৩ জুন ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিমসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সম্পাদক মো. শাহাব উদ্দিন সরকার। কিন্তু বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ না করে মামলার আবেদনটি ফেরত দেন আদালত। একই সঙ্গে দুদকের এখতিয়ারভুক্ত হওয়ায় সেখানে দাখিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলন করে ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয় গত বছর

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে— প্রতি বছর লাভের অংশ সমবায় সমিতির হিসাবে প্রদানের শর্ত থাকলেও ২০০৫-০৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল প্রান্তিকের হিসাব বিবরণী ওই সময়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি পূর্ণাঙ্গভাবে নিরীক্ষকদের নিকট উপস্থাপন করেনি। তদন্তদলের ধারণা ওই সময়ে দায়িত্ব পালনকারী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও প্রকল্পের পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্য ওই অর্থ বিধি বহির্ভূতভাবে ব্যয় করেছেন। ফলে সমিতির সদস্যরা লভ্যাংশ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যয় হওয়ায় ২০১৮-২০২০ সালের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের সুপারিশে সমিতির কার্যক্রমের ওপর সমবায় সমিতি আইন-২০০১ অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, সমিতির নামে জনতা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার কর্পোরেট শাখায় এফডিআর হিসাবে ৬ কোটি টাকা এবং বেসিক ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখায় মেয়াদি আমানত হিসাবে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা জমা রয়েছে। 

অন্যদিকে পিপিআই প্রকল্পের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে অর্থাৎ ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ সমিতির সকল সম্পদ দখলে নিয়ে ব্যবহার করেছে। একই সাথে লিজ আউট চুক্তি চালিয়ে না গিয়ে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ক্রয়কৃত ৪৯ হাজার ৯৯৫ পিস মিটার ও মিটারসহ অন্যান্য মালামাল এবং জোনে রক্ষিত পিপিআইয়ের আরও প্রায় ১২ হাজার ৫০০ পিস মিটার সমবায় সমিতি বা পিপিআই পরিচালনা পর্ষদকে ফেরত দেওয়া হয়নি কিংবা বিক্রিত অর্থ বহুমুখী সমবায় সমিতিকে ফেরত দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ ৩৫ কোটি টাকা মূল্যের মোট ৬২ হাজার ৪৯৫ পিস মিটার ও মিটারের যন্ত্রাংশ ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দখলে রয়েছে বলে তদন্ত কমিটি প্রমাণ পেয়েছে।

তদন্তকালে কমিটি আরও দেখতে পায় প্রকল্পে সমিতির অর্থায়নে ক্রয়কৃত কার ও লেগুনাসহ মোট ২৫টি গাড়ির মধ্যে ২৪টি গাড়ি ঢাকা ওয়াসা ২০১৮ সাল থেকে ব্যবহার করছে।

• বছরে ২ লাখ টাকার পত্রিকা, ওভারটাইমের নামে ১৬২ কোটি টাকা নয়ছয়!

তদন্তকালে দেখা যায় পিপিআই প্রকল্পের বিল বাবদ নিট ১ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার ৭৬৫ টাকা পাওনা রয়েছে। আর জনবল সরবরাহের কমিশন বাবদ ১ কোটি ১২ লাখ ২৬ হাজার ১৯০ ঢাকা ওয়াসার নিকট পাওনা রয়েছে।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ
ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি ২০০৫-২০০৬ অর্থবছর  থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিধিবহির্ভূতভাবে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা, নিরীক্ষা প্রতিবেদনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করাসহ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যয় করেছে। যে বিষয়ে সমবায় সমিতি আইন ২০০১ অনুযায়ী তদন্ত চলমান রয়েছে। ওই তদন্ত শেষ হলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

পিপিআই (প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট) প্রকল্পের নিরাপত্তা জামানত ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা যা সুদ-আসলে প্রায় ১০ কোটি টাকার বেশি, মিটার বাবদ প্রায় ৩৫ কোটি টাকা, কার ও লেগুনাসহ ২৫টি গাড়ি এবং পিপিআই প্রকল্পের বিল বাবদ ২১ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার ৭৬৫ টাকা এবং জনবল সরবরাহের কমিশন বাবদ ১ কোটি ১২ লাখ ২৬ হাজার ১৯০ টাকা ঢাকা ওয়াসার নিকট সমিতির পাওনা রয়েছে।

সমিতিতে বর্তমানে প্রায় ৬ কোটি টাকার এফডিআর ও ব্যাংকে ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৭৮ টাকা জমা আছে। সমিতির নিবন্ধন বাতিল করা হলে সমিতির ওই অর্থ ও সম্পত্তি বেহাত হওয়াসহ সাধারণ সদস্যরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তাই সমিতির নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে অর্থ আত্মসাত ও অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

• ঢাকা ওয়াসায় সমিতির ৩৫৫ কোটি টাকা নয়-ছয়!

যা বলছেন সমিতির নেতারা 
তদন্ত কমিটির কাছে সমিতি লিখিত বক্তব্য প্রদান করেছে। যেখানে সমিতির নেতারা বলছেন, ওয়াসার এমডি সমিতির বিগত নির্বাচনে বাধা, নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী সমিতির ব্যাংক হিসাব নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাচন করার অপরাধে বিভাগীয় মামলা ও সাসপেন্ডসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন। নির্বাচন করার অপরাধে দায়েরকৃত বিভাগীয় মামলা তদন্তে প্রমাণ করতে না পেরে তিনি এখন সমিতির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে পত্র দিয়েছেন। সমিতির ঠিকাদারী কাজের বিল বাবদ প্রায় ২০ কোটি টাকা, ঠিকাদারী কাজে দাখিলকৃত পারফরমেন্স সিকিউরিটি বাবদ ৭.৭০ কোটি টাকার এফডিআর, নতুন ৫০ হাজারসহ প্রায় ৬৩ হাজার পিস পানির মিটার ও যন্ত্রাংশ বাবদ প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের নিকট সমিতির পাওনা। 

এ ছাড়াও পিপিআই প্রকল্পভুক্ত ৭টি জোনের সকল আসবাবপত্র ও অন্যান্য মালামাল ২০১৮ সাল থেকে ঢাকা ওয়াসার দখলে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পদ বেহাত। অন্যদিকে প্রকৌশলী তাকসিম এ খান ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ঢাকা ওয়াসায় কর্মরত আছেন ২০০৯ সাল থেকে, অপরদিকে পিপিআই প্রকল্প চালু হয় ১৯৯৭ সালে। ওয়াসায় যোগদান করার দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর তিনি লুটপাটের অভিযোগ এনেছেন। 

আরএম/এনএফ