দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দুর্যোগের কারণে আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণও বেশ। সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কাজ করলেও তাদের কাজের পরিধি আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ প্রাপ্তির বিষয়ে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে বাংলাদেশকে— বলছিলেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ’র চেয়ারপার্সন ও সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়।

সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে বাংলাদেশে আয়োজিত আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলন শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট নিরসনে সবচেয়ে বড় আসর ‘কপ-২৮ সম্মেলন’। কপ শুরুর আগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে আয়োজিত আঞ্চলিক সম্মেলনে নিজ নিজ দেশের অবস্থান তুলে ধরেন প্রতিনিধিরা। সেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো, নদীভাঙন, সমুদ্রস্তরের উচ্চতা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট নিয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সংসদ সদস্যদের মধ্যে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানো এবং পরস্পরের সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। চলতি কপের প্রাক-প্রস্তুতিও নেওয়া হয় এ সম্মেলন থেকে।

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট, সমাধান, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং প্রতিবন্ধকতাসহ নানা প্রসঙ্গ নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেন সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়। তার মুখোমুখি হয়েছিলেন মুছা মল্লিক।

২০৩০ সালের মধ্যে উপকূলের ৭১০ কিলোমিটার এলাকা পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের / ফাইল ছবি

ঢাকা পোস্ট : কপ শুরুর আগেই দেশে আঞ্চলিক সামিট শেষ হয়েছে। আঞ্চলিক সামিটে কোন বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল?

তানভীর শাকিল জয় : আঞ্চলিক সামিটে ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলংকাসহ বাংলাদেশের আমরা যারা সংসদ সদস্য রয়েছি তারা এটির আয়োজন করেছিলেন। সামিটে আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যারা সংসদ সদস্য, সিভিল সোসাইটি, আন্তর্জাতিক এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দাতাগোষ্ঠী আছেন, তাদের একটি সম্মিলন ঘটানো। সেখানে জলবায়ু মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতাকে কীভাবে গুরুত্ব দিতে পারি— সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, জ্বালানি ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামিটে বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব সংসদ সদস্য এসেছিলেন তারা বিভিন্ন সেশনে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছেন।

প্রথমে তারা তাদের দেশের অবস্থান তুলে ধরেছেন। এরপর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করতে চাই। এ বিষয়ে আমাদের পারস্পরিক যে সহযোগিতা রয়েছে সেটি কীভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়ে কথা হয়েছে। ইউরোপ ও আফ্রিকাতে একটি মডেল আছে। সেখানে সবগুলো দেশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ ও বায়ুবিদ্যুৎ। উৎপাদিত বিদ্যুৎ তারা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এমন একটি মডেল করা যায় কি না, সে বিষয় জোর দেওয়া হয়েছে।

জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবিলায় আমরা যখন আন্তর্জাতিক সামিটগুলোতে যাই সেখানে দেখতে পাই এক এক দেশের অবস্থান এক এক রকম। বাংলাদেশের এক রকম, ভারতের এক রকম এবং শ্রীলংকায় এক রকম। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মতভেদ কমিয়ে আনার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সংসদ সদস্যদের নিয়ে আঞ্চলিক একটি জোট করা যায় কি না, সে বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এটিও গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষ্য। এ জোট দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জলবায়ু সংকট নিরসনে কাজ করবে। এতে সকল দেশের সরকার কাছাকাছি আসার সুযোগ পাবে। আমাদের পলিসিগুলো এক হবে। একই সঙ্গে আমরা নিজেরাও একটি জোট ও শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারব।

ঢাকা পোস্ট : আঞ্চলিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টারিয়ানদের কেমন সাড়া পাওয়া গেছে?

তানভীর শাকিল জয় : খুব ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। তারা এ বিষয়ে ভীষণ আগ্রহ দেখিয়েছে। নেপাল, ভুটান, ভারত ও শ্রীলংকার সংসদ সদস্যরা এ বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। তার বলেছেন, আমাদের থেমে গেলে চলবে না। আঞ্চলিক জোটকে শক্তিশালী করতে হবে।

সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়ের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক মুছা মল্লিক / ঢাকা পোস্ট

ঢাকা পোস্ট: আগামী কয়েক বছরে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটে বাংলাদেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন?

তানভীর শাকিল জয় : বাংলাদেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। বাংলাদেশ কিন্তু নিজ অবস্থান থেকে অনেক কাজ করছে। আমরা যে সামিট করেছিলাম সেটি কিন্তু শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়। বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো এর ফলভোগী। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশ তার কাজ করল কিন্তু অন্যরা করল না, তাহলে তো ক্ষতি যা হবার আমাদের হবেই। সেই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জলবায়ু সংকট নিরসনে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি জলবায়ু সংকট নিরসনে বিশ্বনেতাদের এক হতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, ক্ষতি যখন হবে সেটি সবারই হবে।

ঢাকা পোস্ট : ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ নিয়ে একটি বিতর্ক চলছে। দুবাইতে চলতি কপে সে সমস্যাগুলোর সমাধান দেখছেন কি না?

তানভীর শাকিল জয় : ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কথা বলা হচ্ছিল। কিন্তু এটি আসলে স্বীকৃতি পাচ্ছিল না। গত কপে এটি প্রথম স্বীকৃতি পেয়েছিল। এই কপে এ ফান্ড আর একটু অগ্রসর হবে। কিন্তু আমরা যদি আশা করি এ কপে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ ভীষণ অগ্রসর হবে, তা কিন্তু হবে না। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশের মতো ক্ষতি খুব কম দেশেই হয়েছে। সুতরাং লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকা উচিত। আমরা অ্যাডাপটেশন ফান্ড, জলবায়ু ফান্ড দেখেছি। এগুলোতে বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রমিজ করা হলেও তেমন কিছুই আসেনি। তবে, আমাদের হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে চেষ্টা করতে হবে। ১০-১৫ বছর সংগ্রাম করার পর আজ আমরা এ অবস্থানে এসেছি। হয়তো আরও সময় লাগবে কিন্তু প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকতে হবে।

ঢাকা পোস্ট : জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ যথেষ্ট মনে করেন কি না?

তানভীর শাকিল জয় : সংকট নিরসনে সরকারের পদক্ষেপ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট বলে মনে করি। আমাদের তো সাধ্য সীমিত। তারপরও জলবায়ু সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী সেই ২০০৯ সালে ১০০ কোটি টাকার তহবিল করেছিলেন। বাংলাদেশ তো চেষ্টা করছে। এ সংকট শুধু দেশীয় প্রচেষ্টাতে সমাধান করা সম্ভব নয়। বিশ্ব ফোরামের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে জলবায়ু শরণার্থী। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষ এক জায়গা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। বিশ্বনেতাদের কাছেও প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অনেকবার তুলে ধরেছেন। আমরা আমাদের অবস্থান সবসময় তুলে ধরছি। এ ছাড়া, নিজেদের সামর্থ্যের মধ্যে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, বিশেষ শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, নদীদূষণ— এগুলো তো প্রকট। এ সংকটগুলো নিরসনে সরকার সচেষ্ট। তবে, আমাদের আরও চেষ্টা করতে হবে।

২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বেড়ে বাংলাদেশের কিছু অঞ্চল ডুবে যেতে পারে। ফলে দেখা দেবে সুপেয় পানির সংকট / ফাইল ছবি 

ঢাকা পোস্ট : বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বেড়ে বাংলাদেশের কিছু অঞ্চল ডুবে যেতে পারে। এ বিষয়ে সরকারের পৃথক কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না?

তানভীর শাকিল জয় : এটি আসলে আমাদের একটা বড় সমস্যা। ক্লাইমেট পার্লামেন্টের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলায় গিয়েছি। সেখানে সুপেয় পানির প্রাপ্যতা খুবই কম। একই সঙ্গে লবণাক্ততা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। ফসলের খেত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষকরা আগে যে লবণাক্ত সহিষ্ণু ফসল উৎপাদন করতেন সে ফসল এখন আর হচ্ছে না। বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার এসব অঞ্চলে বাড়ানো। কৃষি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং নতুন নতুন ফসল উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা চলছে। এ লবণাক্ততা বৃদ্ধি শুধু আমাদের ওপর নির্ভর করছে না। শুধুমাত্র বাংলাদেশ সরকার চাইলেই এর সমাধান করতে পারবে না। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক যে টার্গেট রয়েছে সেটি যদি পূরণ করতে না পারি তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যেমন বাড়বে, লবণাক্ততার কারণে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হব।

ঢাকা পোস্ট : জলবায়ু সংক্রান্ত আইন মানা হচ্ছে না। সরকার কেন এ আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারছে না?

তানভীর শাকিল জয় : এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের অনেক ভালো ভালো আইন আছে। কিন্তু প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে। যতটুকু দরকার ততটুকু (আইন) প্রয়োগ করা যায় না। কলকারখানা, ইটভাটা ও পানির দূষণসহ অনেক সমস্যা আমাদের রয়েছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি যথাযথ আইন প্রয়োগের। কিন্তু অনেক সময় সম্ভব হয় না। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর বেশ একটা প্রভাব ফেলেছে। এ কারণে আমরা জোর করতে পারছি না। বিশেষ করে, কলকারখানা এবং এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা যে একেবারে বাধ্য করব, সেটি করতে পারছি না। কারণ, তারা কোভিড এবং যুদ্ধের কারণে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের তো মানুষকে বাঁচাতে হবে। এ কারণে আইনের প্রয়োগ কিছুটা মন্থর। তবে, সরকার এ ব্যাপারে বেশ সচেষ্ট। সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ যখন কথা বলবে তখন একটি চাপ প্রয়োগ হবে। আমরাও তখন আরও সক্রিয় হয়ে কাজগুলো করতে পারব।

জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে অবহেলিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগসমূহ (এনটিডি) মোকাবিলায় ৭৭৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ দেওয়ার ঘোষণা / ফাইল ছবি

ঢাকা পোস্ট : জলবায়ু ‍সংকট নিরসনে সাধারণ মানুষেরও ভূমিকা আছে। তাদের উদ্দেশে কিছু বলবেন কি?

তানভীর শাকিল জয় : জলবায়ু সংকট নিরসনে তরুণরা দারুণ কাজ করছেন। তারা অনেক ক্ষেত্রে সরকারের চেয়েও ভালো কাজ করছেন। তাদের উদ্যম, উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চাপের সম্মুখীন হয়ে অনেক কাজ করতে বাধ্য হয়। এটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন। তাদের জন্য বার্তা হচ্ছে, তারা যে দারুণভাবে কাজটি করছেন, এটি ধরে রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ যেদিকে যেতে চাচ্ছে তারাই সেটি করে দেখাতে পারবে।

ঢাকা পোস্ট : ঝুঁকি মোকাবিলায় এ মুহূর্তে বাংলাদেশের করণীয় কী?

তানভীর শাকিল জয় : এ মুহূর্তে বাংলাদেশের দুটি করণীয় আছে। প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরীণ দূষণ কমাতে হবে। শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, কলকারখানার ধোঁয়া, ইটভাটার ধোঁয়া কমাতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, আমাদের যে বৈশ্বিক ফোরাম আছে সেখানে আমাদের অবস্থান আরও জোরদার করতে হবে।

দেশের অভ্যন্তরীণ দূষণ যেমন- শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, কলকারখানার ধোঁয়া, ইটভাটার ধোঁয়া কমাতে গুরুত্ব দিতে হবে / ফাইল ছবি  

ঢাকা পোস্ট : জলবায়ু সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগ কীভাবে দেখছেন?

তানভীর শাকিল জয় : আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কাজ করছে, তবে সেটি আমি যথেষ্ট বলে মনে করি না। যথেষ্ট যদি হতো তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবিলায় আমাদের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার কথা বেশি শোনা যেত না। বাংলাদেশে এ সমস্যা নিয়ে তাদের কাজ করার সুযোগ আছে। তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা বেশি। বাংলাদেশের মতো যেসব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত, সেখানে তাদের শক্তিশালী ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। পৃথিবীর ইতিহাস ঘাঁটলে দেখবেন, যুদ্ধ এবং অস্ত্রের পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়। অথচ বিশ্বকে বাঁচাতে আমার ফান্ড পাই না। সুতরাং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আরও কাজ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি।

এমএম/এমএআর/