কোভিশিল্ড টিকা

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় চালানের ২০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা থাকলেও, তা আসবে কি না এখনও জানে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় টিকা আসার ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হলে কেউই সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, ‘কাল টিকা আসার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আমি কোনো ধরনের পেপার হাতে পাইনি। দুইদিন ঢাকার বাইরে ছিলাম, গতকাল রাতে এসেছি। আজ আবার অফিস ডে নেই, কাল অফিসে যাব। টিকার বিষয়ে কোনো আপডেট এখনো আমার কাছে আসেনি।’ এ ব্যাপারে ডিজি স্যারই (স্বাস্থ্য মহাপরিচালক) ভালো বলতে পারবেন, যোগ করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অ্যাপ উদ্বোধনের দিনে বলা হয়েছিল ২২ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ ডোজ করোনা টিকা আসবে। এরপর এখন পর্যন্ত আমাকে আর কিছু বলা হয়নি।’

তবে এর আগে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমাদের জানিয়েছিলেন ২২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) ২০ লাখ টিকা আসছে, বলেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরও ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা আসছে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি।

তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার পর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, এমন কারও কথা আমরা শুনিনি। যে টিকাটি দেওয়া হচ্ছে, সেটি ভালো এবং সহনশীল বলে প্রমাণিত।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপনও জানিয়েছিলেন, টিকার দ্বিতীয় চালান আসছে ২২ ফেব্রুয়ারি।

ধৈর্য ধরতে বলেছে সেরাম
সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত করোনার টিকা পেতে বাংলাদেশসহ অপেক্ষায় থাকা বেশ কয়েকটি দেশের সরকারদেরকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

রোববার এক টুইট বার্তায় সেরাম প্রধান আদর পুনাওয়ালা জানান, ভারতের প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ভারসাম্য রাখতে বলা হয়েছে বাকি বিশ্বের প্রয়োজনের সঙ্গে। অন্য দেশগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাধ্যের সবটুকু চেষ্টাই করে যাচ্ছি আমরা। দয়া করে ধৈর্য ধরতে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনার টিকা চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনের অনুমতি পেয়েছে সেরাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির ‘কোভিশিল্ড’-এর ওপর নির্ভর করছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো।

করোনাভাইরাস অতিমারির এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর আশা হয়ে এসেছে টিকা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটেও তৈরি হচ্ছে। এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে টিকার ৫০ লাখ ডোজ পাঠানোর কথা সেরাম ইনস্টিটিউট।

ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবেও বাংলাদেশ সরকার পেয়েছে ২০ লাখ ডোজ টিকা। এই টিকা পাওয়ার পর সরকার গত ২৭ জানুয়ারি থেকে টিকা প্রয়োগ শুরু করে। ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ করা হয়। তারপর ৭ ফেব্রুয়ারি টিকাদান শুরু হয় সারাদেশে।

টিআই/জেডএস