আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই দেশ থেকে ম্যালেরিয়াসহ সংক্রামক রোগগুলো নির্মূল করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সফলতা এসেছে। ইতিমধ্যেই দেশ পোলিও, কালাজ্বর, যক্ষ্মা মুক্ত হয়েছে। তবে ম্যালেরিয়া এখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। এমনকি এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একক চেষ্টায় সম্ভবও নয়।

বুধবার (১০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বেড়েছে। মৃত্যুর কারণ হলো আক্রান্ত রোগীরা দেরিতে চিকিৎসা নিয়েছেন। করোনায় লকডাউন ছিল, তাই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম মানুষ হাসপাতালে আসতে পারবে না, যে কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাবে। তাই হয়ছে। আমরা চাই না ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধি পাক। তাই সবাই মিলেই কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র দেশে ব্যবস্থা নিলে হবে না, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে সেসব দেশেও যাতে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ বন্ধ হয়ে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের দেশে মশা নির্মূল হলেও বর্ডার দিয়ে মশা তো আর আটকে থাকে না।

জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ম্যালেরিয়া মুক্ত করা। ২০১৪ সালে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ ছিল ৫৭ হাজারের বেশি। বর্তমানে ৬ থেকে ৭ হাজারের বেশি সংক্রমণ হয় না। আমার মতে সঠিকভাবে কাজ করলে ২০৩০ এর আগেই আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব।

যেসব এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি, সেগুলোতে ফোকাস করতে হবে। যারা টি গার্ডেনে কাজ করে, আর্মিতে যারা কাজ করেন, তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। কীভাবে তারা ম্যালেরিয়া মুক্ত থাকতে পারবেন, সেগুলো তাদের বুঝাতে হবে। তবে সচেতনতা হলো বড় বিষয়, বলেন জাহিদ মালেক।

মন্ত্রী আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতে আমাদের বাজেট বেড়েছে। এ বছর ৩৭ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। ডাক্তার-নার্স অনেক বেড়েছে। গত তিন বছরে ১৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের জনবল-অবকাঠামো পর্যাপ্ত হয়েছে। এখন আমাদের কোয়ালিটি বাড়াতে হবে। আমরা মনিটরিংয়ে জোর দিচ্ছি।

আরো জনবল প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এখনও জনবলের ঘাটতি রয়েছে। এখন স্বাস্থ্যখাতে আমাদের দেড় লক্ষ লোক কাজ করছে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে আমরা নতুন অর্গানোগ্রাম তৈরি করছি। সেটি বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের আরও দেড় লাখ লোকবল লাগবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশ রিপ্রেজেনটেটিভ ড. বার্দান জাং রানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।

টিআই/এসকেডি