দেশের স্বাস্থ্যখাতে আরও পেশাদারিত্বের সুযোগ তৈরি এবং এই খাতের উন্নত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন চিকিৎসা খাত সংশ্লিষ্ট ও বিশেষজ্ঞরা। এ লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিষয়ক জোট গঠনের প্রস্তাব করেন তারা।

সোমবার (১০ অক্টোবর) ব্রিটিশ কাউন্সিলে আয়োজিত ‘প্রেজেন্টেশন অব ফাইন্ডিংস অ্যান্ড রিকোমেন্ডেশন অ্যান্ড ওয়ার্কশপ : এক্সাম্পলস অব হেলথ পার্টনারশিপ অ্যান্ড হেলথ প্রফেশনাল এডুকেশন’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনে তারা এসব কথা বলেন।

এ সময় বক্তারা উচ্চশিক্ষা ও অংশীদারিত্ব, রিসোর্স ও তহবিল তৈরি, নার্সদের জন্য জনসমর্থন বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে স্বাস্থ্য-বিষয়ক পেশাদারিত্বের শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ প্রস্তাব করেন।

গবেষণার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানে বলা হয়, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার পরিধি সম্পর্কে জানতে ডকুমেন্ট, সাক্ষাৎকার ও পর্যবেক্ষণগুলো যাচাই করে দেখা। পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সীমাবদ্ধতা ও সুবিধাগুলো চিহ্নিত করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর অব এডুকেশন ডেভিড মেনার্ড।

এ সময় ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের নার্সদের প্রশিক্ষণের সুবিধা নিয়ে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের অনুরোধের ফলেই এ গবেষণাটি করা হয়েছে। এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাদের দক্ষতা আরও বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারব।

তিনি বলেন, এই গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসকরা বাংলাদেশের বাইরে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে নিজেদের ক্যারিয়ারকে আরও এগিয়ে নিতে পারবেন। এটি আমাদের সামগ্রিক চিকিৎসা শিক্ষাব্যবস্থায় একটি চমৎকার সংযোজন। এ রকম অংশীদারিত্বের সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে আমরা যুক্তরাজ্যের সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কাজ করতে আগ্রহী।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, সবসময় উন্নয়নের যথেষ্ট সুযোগ তৈরিতে ও সুযোগের সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের পাশে থেকেছে যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত ও চিকিৎসা শিক্ষার উন্নয়নে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আইআরডি, সিআইপিআরবির মতো অংশীদার ও সহযোগীদের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের এনএইচএস, হেলথ ইংল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার, এফসিডিও হেলথ টিম এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল সহযোগিতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন তৈরি করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি এই গবেষণাটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে পরিকল্পনায় সহায়তা করবে এবং স্বাস্থ্য-বিষয়ক যোগ্যতার স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবে।

এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ পূরণ করার লক্ষ্যে, স্বাস্থ্যসেবা সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। দেশে বিশ্বমানের চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে হলে ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য অবশ্যই বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ডব্লিউএইচও নির্ধারিত গাইডলাইন পূরণ করে বাংলাদেশে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী তৈরি করার ক্ষেত্রে এই গবেষণাটি মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

টিআই/ওএফ