বর্তমানে নিউরো সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের চিকিৎসা বাংলাদেশে করতে সক্ষম। তবে প্রয়োজনের তুলনায় দক্ষ লোকবল কম। মানুষের প্রয়োজনে স্নায়ুবিক রোগের চিকিৎসার জন্য নিউরোসার্জন সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোর্সে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে হোটেল রডিসন ব্লু-তে দুই দিনব্যাপী নিউরোস্পাইন সোসাইটি অব বাংলাদেশের (এনএসএসবি) চতুর্থ জাতীয় সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ২১২ জন জন নিউরোসার্জন রয়েছে। কিন্তু দেশের জনগণের অনুযায়ী দরকার ১৬০০ জন নিউরোসার্জনস। একসঙ্গে না পারলেও ধীরে ধীরে এ আসন সংখ্যা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রয়োজনে নিউরোসার্জনসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের অধীনে যেখানে ফ্যাকাল্টি আছে সেখানে আসন সংখ্যা দেরগুণ ও দ্বিগুণ  বৃদ্ধি করা হবে। যেখানে ফ্যাকাল্টি নেই সেখানে আমরা কোর্স বন্ধ করে দেবো। আমরা সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে চাই।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই দেশের সব উন্নয়ন সম্ভব হয়ছে। দেশের স্বাস্থ্যখাতের ভিত্তি বঙ্গবন্ধুর হাতে রচিত হয়েছে। তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার হাতেই পরিপূর্ণতা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস যুদ্ধের মহানায়ক। তার হাতেই দেশের স্বাস্থ্যখাত উন্নত হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের ফলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া লোকের সংখ্যা কমছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম এবং সারাবিশ্বে পঞ্চম অধিকার লাভ করেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতসহ সব খাতের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।

প্রধান অতিথি হিসেবে এ সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলেই স্বাস্থ্য সেক্টরসহ উন্নয়ন হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যসেক্টরের উন্নয়নের ফলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা কমেছে। দেশের গড়ায়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের ওষুধ শিল্পের বিপ্লব ঘটেছে। দেশের ওষুধ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এসব শিল্পের দ্বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই উন্মুক্ত হয়েছে।

মেয়র বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেক্টরের উন্নয়নের ফলে করোনাভাইরাস যুদ্ধে বাংলাদেশে সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। করোনাভাইরাস শুরুর সময় ঘনবসতি হওয়ার ফলে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিডিয়ার সামনে এসে করোনাভাইরাস যুদ্ধে করণীয় সম্পর্কে বলার পর দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ঘুরে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে বারবার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা সব সময় শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিকিৎসকদের দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেন। তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা প্রথম ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্যসেক্টর ঢেলে সাজান। স্বাস্থ্যসেক্টরের উন্নয়নের জন্য তিনি অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে নিউরোসার্জারি বিভাগ চালু করেন অধ্যাপক রশিদ উদ্দিন স্যারকে দিয়ে খুলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আধুনিক নিউরো সার্জারির যাত্রা শুরু হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতায় থাকলে ২০৩২ সালের মধ্যে বাংলাদেশে নিউরো সার্জারির মডেলে রূপান্তরিত করতে পারব। বাংলাদেশে নিউরো সার্জারির মডেলে রূপান্তরিত করতে পারলে দেশের বাইরে আর কোনো মানুষকে যেতে হবে না।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিউরো স্পাইন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউরোস্পাইন সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতিত্ব অধ্যাপক ডা. মো. কামালউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের ডা. এটিএম আসাদুল্লাহ। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে নিউরোসার্জন ও নিউরোস্পাইন সার্জনরা অংশগ্রহণ করেন।

টিআই/এমএ