দেশে যথাযথ সেবা না পেয়ে প্রতিবছর অসংখ্য ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, রোগীরা বাইরে চলে যাওয়ায় দেশের অনেক অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগে ক্যান্সারের চিকিৎসায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ব্যাকিথেরাপি ‘থ্রি-ডাইমেনশনাল কনফরমাল থেরাপি (থ্রিডিসিআরটি)’ মেশিনের উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশে ১৫ লাখ ক্যান্সারের রোগী রয়েছে। প্রতি বছর আরও ২ লাখ ক্যান্সার রোগী বাড়ছে। প্রতি বছর ১ লাখ ৫০ হাজার ক্যান্সারের রোগী মারা যায়। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েই বেশি সংখ্যক ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। ক্যান্সার চিকিৎসায়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, রোগীর কোথায় ক্যান্সার অবস্থিত তা নির্ণয় করে টার্গেট থেরাপি দেওয়া হবে এই ব্যাকিথোরপি (থ্রিডিসিআরটি) মেশিন দিয়ে। এখানে লিনিয়্যাক মেশিনের মাধ্যমেও ক্যান্সার চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকে। এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেডিও থেরাপি ও কেমো থেরাপির মাধ্যমেও চিকিৎসাসেবা চলছে।

তিনি আরও বলেন, ইদানিং বাংলাদেশে তরুণীদের ব্রেস্ট ক্যান্সার বেশি ধরা পড়ছে। ৩০-৫০ বছর নারীরা বেশি জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের স্ক্রেনিং করার জন্য একটি সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। রক্তের ক্যান্সার রোগীদের সেবার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগও কাজ করছে। এছাড়া ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজর রয়েছে। তিনি আটটি বিভাগে আটটি ক্যান্সার হাসপাতাল করছেন। ক্যান্সার  প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি। সচেতন হলে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে তা নিরাময় যোগ্য।

এর আগে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৩ উপলক্ষে ‘ক্লোজ দ্য কেয়ার গ্যাপ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লক থেকে শুরু হয়ে বট তলা, এ-ব্লক, টিএসসি, ডি-ব্লক, সি-ব্লক প্রদক্ষিণ করে জামে মসজিদ হয়ে ক্যান্সার ভবনে গিয়ে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার, ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের ডিভিশন প্রধান অধ্যাপক ডা. সারওয়ার আলম, অধ্যাপক ডা. আব্দুল বারী, অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান ভূইয়া, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রি. জে ডা. রেজাউর রহমান, ভিসির একান্ত সচিব-১ সহযোগী অধ্যাপক (সার্জিক্যাল অনকোলজি) ডা. মো. রাসেল, ক্লিনিক্যাল অনকোলজির সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদিয়া শারমিন, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুন অর রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/এসএম