দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই গড়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে ভাবতেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের মধ্যে যারা রাজনীতি করছেন, তাদেরকে বলব যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই হওয়া উচিত বড় রাজনীতি।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় শহীদ দিবস উপলক্ষে ‌‘ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের নবজাগরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন>>>এখন আর বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সেবায় বঙ্গবন্ধু অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। বিসিপিএস, পঙ্গু হাসপাতালসহ অনেক কিছুই দিয়ে গেছেন। তার দেখানো পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করেছি। সফলভাবে মানুষকে টিকার আওতায় এনেছি।

স্বাচিপ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, স্বাচিপ স্বাধীনতার পক্ষের একটি সংগঠন। সামনে দিনে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ সামনে নির্বাচন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলেই স্বাস্থ্য সেবায় ভালো কিছু হবে, নতুন নতুন চিকিৎসক নিয়োগ পাবে। স্বাচিপ শুধু কাজেই নয়, পরামর্শ দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করবে। আমরা কীভাবে স্বাস্থ্য সেবাকে ভালো করতে পারি, কীভাবে চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদ করা যায়। আপনাদের পরামর্শ আর সহযোগিতা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

জাহিদ মালেক বলেন, আগে চিকিৎসকদের প্রমোশনের বিশাল জট ছিল, যেকারণে আমরা চিকিৎসকদের যথাসময়ে পদোন্নতি দিতে পারছিলাম না, আমাদের অনেক কলেজ, ইনস্টিটিউটে আমরা চিকিৎসক পদায়ন করতে পারছিলাম না। তারপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গেই সই করে দিয়েছেন, এখন আর প্রমোশনে কোনো সমস্যা নেই।

আরও পড়ুন>>>চিকিৎসকরা উপজেলায় যেতে চান না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

হাসপাতালগুলোতে কর্মরত চিকিৎসক-নার্সদের মধ্যে সম্পর্ক আরও ভালো হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক-নার্সরাই সমন্বিতভাবে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকে।

নার্সদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, রোগীদের সেবায় নার্সদেরকে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। রোগীর এটেন্ডেন্সরা সেবা করবে, আর নার্সরা বসে থাকবে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। এটেন্ডেসরা থাকলেও নার্সদের রোগীর সেবার দায়িত্ব পালন করতে হবে।

ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জাতীয় জীবনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা তাদের বুকের তাজা রক্তে পিচঢালা রাজপথ সিক্ত করে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকারকে আদায় করেছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এদেশের জাতীয় জীবনে একটি স্মরণীয় ও তাৎপর্যবহ দিন। আর একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করেই বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা ঘটে এবং শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয় এদেশ ও জাতি।

আরও পড়ুন>>>জরায়ুমুখের ক্যান্সার রোধে সেপ্টেম্বর থেকে টিকা দেওয়া হবে

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা একাডেমী পদকপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু গবেষক সুভাষ সিংহ রায়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল হাসান মিলন।

টিআই/এমএ