নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হলেও অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্বয়ং চিকিৎসক, নার্স ও শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, একটি সার্টিফিকেট বাবদ ৩ হাজার টাকা ফি এবং সমাবর্তন আয়োজন বাবদ আরও ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে বিএসএমএমইউ একটি মানহীন আয়োজন করেছে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত যারা পিএইচডি, এমডি, এমএস, এমফিল, এমএমএড, এমটিএম, এমপিএইচ, ডিপ্লোমা, বিএসসি ইন নার্সিং এবং এমএসসি নার্সিং ডিগ্রি অর্জন করেছেন- এমন তিন হাজার জন এই সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে মেডিসিন অনুষদের প্রায় ৮০০ জন, সার্জারি অনুষদের প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন, শিশু অনুষদের প্রায় ৩০০ জন, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল অনুষদের পাঁচ শতাধিক, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের প্রায় ৩০০ জন, ডেন্টাল অনুষদের শতাধিক স্নাতকোত্তর চিকিৎসক এবং নার্সিং অনুষদের শতাধিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর নার্স।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কনভেনশন হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ।

সমাবর্তনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও অপমানিত

সমাবর্তনে আসা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অপমানিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বিএসএমএমইউ থেকে পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রোঅ্যান্ট্রোলোজিতে এমডি ডিগ্রি নেওয়া রফিকুল ইসলাম নামের এক চিকিৎসক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত জঘন্য ও নিম্নমানের সমাবর্তন অনুষ্ঠান অতীতে কোনোদিন হয়নি এবং হবেও না। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের যেভাবে অপমান করেছে এবং কষ্ট দিয়েছে, তা সীমাহীন। বিএসএমএমইউয়ের মতো স্বনামধন্য একটা প্রতিষ্ঠানের এমন আচরণের জন্য সব সুনাম কলঙ্কিত হয়েছে।

অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, আমি এই প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেও ফেসবুকে কোনো ছবি দেইনি। কারণ দেওয়ার রুচিটাই চলে গিয়েছিল, তাদের আয়োজন নিয়ে ঘেন্না ধরে গিয়েছিল। অফিস-চেম্বার ফেলে শুধুমাত্র আবেগের তাড়নায় ছুটে আসা মানুষগুলোকে এত কষ্ট না দিলেও হতো। প্রিয় এবং প্রাণের প্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউর জন্য আমি লজ্জিত। আর যেন কাউকে এভাবে অপমানিত হতে না হয়।

রনি কবির নামের আরেক চিকিৎসক বলেন, বাজে একটা কনভোকেশনের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হলাম। যাদের জন্য আয়োজন তাদেরকে চরম অপমান, অপদস্থ করে বঙ্গবন্ধুর নামের এই প্রতিষ্ঠানটিকে যারা কলঙ্কিত করেছে, তাদের সকল চিকিৎসকদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

তিনি বলেন, আমাদের কয়েকজনকে অর্ধেক বাজেট দিয়ে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করতে দিলে অনেক ভালো করতে পারতাম। প্রতিজনের ৫ হাজার টাকা কোন খাতে খরচ হয়েছে তার হিসাব সকল চিকিৎসকের কাছে দেয়া উচিত।

হুমায়ুন রসিদ সাগর নামের আরেক চিকিৎসক বলেন, একটা কনভোকেশন একজন ব্যক্তির জীবনে অন্যতম সেরা প্রাপ্তির একটি দিন। স্যুভিনর হিসেবে একটা টাই, মগ, টোকেন বা যেকোনো কিছুই আয়োজন করা যেত যা সারা জীবন সংগ্রহের তালিকায় রাখা যেত। এসবের অর্থ মূল্য তেমন বেশি কিছু না কিন্তু স্মৃতির মূল্য অর্থ দিয়ে প্রকাশ হয় না।

তিনি বলেন, একেকজন পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েটকে যেভাবে দুপুরের লাঞ্চের জন্য ধাক্কাধাক্কি করতে হয়েছে, তা দেখে অনেকেই বিব্রত বোধ করেছেন। ভবিষ্যতে সমাবর্তন আয়োজনের সময় অবশ্যই কর্তৃপক্ষের সেসব দিক খেয়াল রাখতে হবে। মাননীয় ভিসি মহোদয় অনেক ব্যস্ততার মাঝেও সমাবর্তন আয়োজন করেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা।

স্বর্ণপদকের মনোনয়ন আরও স্বচ্ছ হওয়া উচিত

বিএসএমএমইউয়ের এই সমাবর্তনে ৩৫ জন মেধাবী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চিকিৎসক, সেবিকাকে চ্যান্সেলর কর্তৃক স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়েছে।

সুলতানা জোহরা আরেফিন নামের এক চিকিৎসক বলেন, যারা স্বর্ণপদক পেয়েছে তাদের নামের পাশাপাশি ফ্যাকাল্টি, ইন্সটিটিউট, সেশন, নাম্বার এই কয়েকটা জিনিস বলতে হয়। এতে স্বচ্ছতা থাকতো আর এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠতো না। এখন মনে হচ্ছে স্বর্ণপদক সব বিএসএমএমইউয়ের শিক্ষার্থীরাই নিয়ে গেল। আর আমরা অ্যাফিলিয়েটেড প্রতিষ্ঠানরা হাততালি দেওয়ার জন্যও তাদের সুসজ্জিত কক্ষে ঢুকতে পারলাম না।

তিনি আরও বলেন, বিএসএমএমইউ গবেষণা ডে পালন করে, কিন্তু অ্যাফিলিয়েটেড প্রতিষ্ঠানদের জানায় না। এছাড়া গবেষণা ভাতা দেয় শুধু বিএসএমএমইউর রেসিডেন্সদের। তাদের বাইরের কোন শিক্ষককেও কোনোদিন আমন্ত্রণ জানাতে দেখলাম না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক চিকিৎসক বলেন, শুনেছি সব স্বর্ণপদক বিএসএমএমইউর উপাচার্যের পছন্দমাফিক দেওয়া হয়েছে। সব যদি ওনার পছন্দেই দেওয়া হয়, তাহলে আগেই একটা ঘোষণা দিয়ে দিলেই তো হয়।

আয়োজকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোন জিনিসটা ঠিকমতো করেছেন আপনারা? বিরিয়ানি খাইয়েছেন ঠান্ডা, প্লাস্টিকের চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করেছেন আর যারা সাথে এসেছে তাদেরকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখেছেন, ছবি তোলার মতো কোনো সুনির্দিষ্ট জায়গাও নাই। যা পারেন না, তা করতে যান কেন? নাকি এটা বিএসএমএমইউয়ের কর্মকর্তাদের জন্য কনভোকেশন?

একটি সার্টিফিকেট বাবদ কেন ৩ হাজার টাকা?

সমাবর্তনে সার্টিফিকেট বাবদ প্রতিটি শিক্ষার্থী থেকে ৩ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সমাবর্তন উদ্‌যাপন বাবদ আরও ৫ হাজারসহ প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী থেকে ৮ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে।

সার্টিফিকেট বাবদ যে টাকা নেওয়া হয়েছে, তার তিনভাগের এক ভাগও খরচ হওয়ার কথা নয় বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সাগর আব্দুল হামিদ নামের এক চিকিৎসক বলেন, সমাবর্তন বাবদ বিএসএমএমইউয়ের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে দুদক থেকে তদন্ত বা অডিট হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে নিশ্চিত তারা টাকার ঠিকঠাক হিসাব দিতে পারবেন না।

রিয়াজুল ইসলাম রাকিব নামের আরেকজন বলেন, রাষ্ট্রপতি সম্মাননা পাওয়ার সময় ঠিকমতো তারা নামটাও ঘোষণা করতে পারেনি। গ্র্যাজুয়েট নার্সিং ডিপার্টমেন্টের ৫ জন স্টুডেন্ট গোল্ড মেডেল পেয়েছে, তাদের ২ জনের নামের আগে ডাক্তার বসিয়েছে, আর ৩ জনের নামের আগে নার্স বসায়নি। নামের সাথে অন্তত ডিপার্টমেন্টের নামটাও বলতে পারতেন।

তিনি বলেন, ৫ হাজার টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছি, গাউনটা ফেরত নিয়ে নিলো। শুনেছি— গাউন নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধার করে আনা। গাউন না দিলেন, অন্তত একটা মগ, টাই, ব্যাগ দেওয়া যেত। সমাবর্তনের স্মৃতি হিসেবে আমাদের কাছে কিছুই থাকলো না। অথচ ৩ হাজার টাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভালোভাবে তাদের স্টুডেন্টদের সমাবর্তন দেয়।

মহিউল আলম সিদ্দিকী নামের এক চিকিৎসক বলেন, আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তখন মনে হয়েছিল এর থেকে খারাপ সমাবর্তন আর হতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশের একমাত্র ফাংশনিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিল। এখন মনে হচ্ছে বিএসএমএমইউর চেয়ে খারাপ সমাবর্তন আর হয় না।

তিনি আরও বলেন, ৫হাজার টাকা নেওয়ার পরেও অংশগ্রহণকারীদের একটা স্মারক উপহার দিতে পারেনি বিএসএমএমইউ। ভাবা যায়? মোট কত টাকা খরচ হয়েছে তাদের এইটার একটা হিসাব দেওয়া উচিত।

বিএসএমএমইউর দুঃখ প্রকাশ

বিএসএমএমইউর চতুর্থ সমাবর্তনে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে স্বীকার করে বিষয়টি নিয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী সকল চিকিৎসক, নার্সদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসএমএমইউয়ের চতুর্থ সমাবর্তন প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির সদস্য সচিব এই দুঃখ প্রকাশ করেন।

এতে বলা হয়, সমাবর্তন উপলক্ষ্যে সাড়ে তিন হাজারেরও অধিক ছবি ও নাম, বিভাগসহ তথ্য সম্বলিত ডাটার কপি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি অফিস থেকে যথাসময়ে সম্পন্ন না করায়, প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির কাছে ডাটার কপি সরবরাহে অত্যন্ত বিলম্ব হয়েছে। এ কারণে সরবরাহকৃত ডাটায় বিভ্রান্তি থাকায় নির্ধারিত সময়ে সমাবর্তনে অংশ নেয়া স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী সকল চিকিৎসক, নার্সদের হাতে চতুর্থ সমাবর্তনের বই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এজন্য প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির পক্ষ থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী সকল চিকিৎসক, নার্সদের কাছে অনিচ্ছাকৃত এই ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি।

সকলের কাছে প্রকাশনা পৌঁছে দেওয়া হবে জানিয়ে আরও বলা হয়েছে, প্রকাশনা ও মুদ্রণ উপ-কমিটির পক্ষ থেকে এই নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে- অতি দ্রুত নির্ভুল কপি স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী সকল চিকিৎসক, নার্সদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।

কমিটিগুলোর বরাদ্দ দিয়েছি, নিজেরা খরচ করিনি : বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ

সমাবর্তন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আগেই একাধিক কমিটি গঠন করে দেয় বিএসএমএমইউ। অন্যান্য কমিটিগুলোর চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দের দায়িত্ব দেওয়া হয় অর্থ কমিটিকে। এই কমিটির প্রধান করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমানকে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, সমাবর্তনে কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা লজ্জিত। বিএসএমএমইউ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে আলাদা, কারণ এখানে আমাদের ছাত্ররাই একেকজন চিকিৎসক। তারা যদি আমাদের বিষয়ে অভিযোগ করে সেটা খুবই দুঃখজনক। এমন অভিযোগে আমরা বিব্রত ও দুঃখিত।

আতিকুর রহমান বলেন, অর্থ কমিটির কাজ হলো টাকা দেওয়া, নিজেদের খরচের কোনো এখতিয়ার নেই। অন্যান্য কমিটিগুলো আমাদের কাছে টাকা চাইবে, সে অনুযায়ী আমরা টাকা দিব। খাদ্য কমিটি আমাদের কাছে যে টাকা চেয়েছে, আমরা সে অনুযায়ী বরাদ্দ দিয়েছি। আপ্যায়ন কমিটি খাবার কিনেছে, তারা যে টাকা চেয়েছে আমরা বরাদ্দ দিয়েছি। প্রকাশনা কমিটি যে টাকা চেয়েছে, সেগুলো আমরা বরাদ্দ দিয়েছি। ডেকোরেশন, সাজসজ্জায় আমাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে, আমরা দিয়েছি। কোনো খাতেই আমরা নিজেরা টাকা খরচ করিনি। যদি কোনো খাতে অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে কমিটির প্রধানরা এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিবেন।

শিক্ষার্থীদের অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেবল সমাবর্তন শেষ হয়েছে, এখনও আমরা খরচের হিসাব নিয়ে বসিনি। হিসাব-নিকাশ হলে পরে বুঝা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় কন্ট্রোল অফিস টাকা কালেক্ট করে, কন্ট্রোল অফিসের কাছেই হিসাব রাখা আছে।

সার্টিফিকেটের তিন হাজার টাকা প্রসঙ্গে বিএসএমএমইউ কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, সার্টিফিকেটের টাকাটা কন্ট্রোল অফিস নিয়েছে। সুতরাং এই বিষয়টা তারাই ভালো বলতে পারবে। যাদের নিয়ে আয়োজন, তারা ছাত্র মানুষ। আমাদেরকে তো সরকার সাবসিডি দিচ্ছে, আমরা চাইলে একটু কম নিতে পারতাম।

অনিয়ম-অভিযোগ প্রসঙ্গে যা বললেন উপাচার্য

অনিয়ম-অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের প্রকাশনা বিভাগ গতকাল ২ হাজার প্রকাশনা নিয়ে ওখানে গিয়েছিল। কিন্তু একটু দেরি হওয়ায় এসএসএফ তাদেরকে ঢুকতে দেয়নি। এমনকি প্রকাশনাটি আমাকেও না দেখিয়ে আমাদের কিছু শত্রুরা এটি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেয়, যদিও জার্নালটি এখনও ফাইনাল হয়নি। কিছু ভুলত্রুটি যেগুলো বলছেন, সেগুলো দেখারই সুযোগ হয়নি। এমনকি আমি এখনো জার্নালটি অ্যাপ্লাই করিনি। আশা করছি অতি দ্রুত ভুল ত্রুটিগুলো কারেকশন করে প্রয়োজনে প্রত্যেকের বাড়িতে জার্নালগুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।

বিএসএমএমইউর দুঃখ প্রকাশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুঃখ প্রকাশ করতে বলেছি এইজন্যে যে, তোমরা এসএসএফ বাধা দেওয়ার আগে কেন নাওনি। এটা নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই, সংশোধিত কপি আমরা প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিব।

খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই : অধ্যাপক শারফুদ্দিন

উপাচার্য বলেন, যেই লোকটি অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সে তো আর জানে না যে, শুধুমাত্র ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে ৮০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকাটা কে দিবে? অবশ্যই শিক্ষার্থীরাই দিবে। এটা শুধু আমাদের নিয়ম না, প্রত্যেকটি জায়গাতেই যাদের কনভোকেশন তাদের টাকা দিয়েই প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।

‘অনুষ্ঠানটিতে খাবার, বিদেশি মেহমানদের থাকা-খাওয়া, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, সবকিছুতেই আমাদেরকে বড় একটা বাজেট খরচ করতে হয়েছে। সুতরাং এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই’, যোগ করেন তিনি।

একটি সার্টিফিকেটের জন্য ৩ হাজার টাকা নেওয়াটা বেশি কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া হয়েছে, সেগুলো তাদের পিছনেই খরচ হয়েছে। এটা শুধুমাত্র এক ছাত্রের বেলায় এরকম নয়, প্রত্যেকের জন্যই নির্ধারিত। এই টাকা আমাদের কারো পকেটে যায়নি।

টিআই/এমজে