করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মানবদেহে নানা ধরনের রোগের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, করোনা মানুষের শারীরিক জটিলতা ও মৃত্যু ঝুঁকি তীব্র করেছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য গবেষণার বিকল্প নেই।

মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসিডিডিআর,বির যৌথ আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, করোনা পারে না এমন কিছু নেই। করোনার কারণে মানুষের স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়েছে। চোখের দৃষ্টি শক্তিতে প্রভাব ফেলেছে। হৃদযন্ত্রে প্রভাব ফেলেছে। মানব দেহে বিদ্যমান রোগের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনা নিয়ে ব্যাপক গবেষণার সুযোগ রয়েছে। যাদের করোনা হয়েছে, আবার যাদের করোনা হয়নি, তাদের নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনায় মৃত্যুর হার বেশি, আবার বাংলাদেশে অনেক কম, কেন এরকম সেটা নিয়েও গবেষণা হতে পারে।

তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে রোগের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা যেমন সম্ভব, একইভাবে রোগ প্রতিরোধের উপায়ও জানা যাবে। এটা হলে দেশের মানুষ এবং দেশ উভয়েই অর্থনীতির দিক থেকেও লাভবান হবে।

উপাচার্য আরও বলেন, রোগ প্রতিরোধে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। আর এজন্য গবেষণা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক গবেষণাখাতের মোট অর্থ বর্তমানে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। অতীতে যা দুই বা চার কোটি টাকার বেশি ছিল না।

এ সময় দীর্ঘদিনের কোভিড জটিলতা ও সমাধানের জন্য বিএসএমএমইউয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক এবং আইসিডিআর’বির বিজ্ঞানীদের এই যৌথ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন তিনি।

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ গবেষণার ফলাফলে গুরুতারোপ করে বলেন, কোভিডের দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব এবং তার ধরণ নির্ণয়ে এই গবেষণার ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু কেভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তারা যদি নিয়মিত ফলোআপ না করেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা গ্রহণ না করেন তবে এই গবেষণার স্বার্থকতা ম্লান হয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডাইরেক্টর, সিডিসি) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম তার বক্তব্যে গবেষণাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান জানান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইউএসএআইডির কর্মকর্তা সামিনা চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ডা. মো. ফেরদৌস উর রহমান। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, কার্ডিওলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ এবং আইসিডিডিআরবির নিউট্রিশন ও ক্লিনিক্যাল সার্ভে বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী এবং প্রধান গবেষক ডা ফারজানা আফরোগ গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলগুলো উপস্থাপন করেন। সেমিনারে শিক্ষক, চিকিৎসক, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/এনএফ