গত দুই বছরে দেশের স্বাস্থ্যখাতের অবকাঠামো ও অন্যান্য সেবার পরিধি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।  

তিনি বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে। কমিউনিটি লেভেল থেকে সুপার স্পেশালাইজড পর্যন্ত সরকার স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বাড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকেলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বায়ো-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএমই) বিভাগের ল্যাব উদ্বোধন ও সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, বায়ো-মেডিকেল ডিভাইসের ব্যবহার এখন সর্বত্র বেড়েছে। দেশের সরকারি হাসপাতালে সর্বাধুনিক মেডিকেল ডিভাইস ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। বুয়েটের বায়ো-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও বায়ো-মেডিকেল ডিভাইস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেইস যদি আমাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, জেইস ও বুয়েট তাদের বায়ো-মেডিকেল বিষয়ে প্রাথমিক কাজের জন্য কয়েকটি উপজেলায় সহায়তা চেয়েছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সহায়তার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য দেশের মানুষকে সর্বোত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা। এক্ষেত্রে যারা এগিয়ে আসবে সরকার তাদের সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) নাজমুল হক খান বলেন, আমার মনে হয় সময় এসেছে আমাদের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে বুয়েটের বায়ো-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও জেইস কীভাবে সহায়তা করতে পারবে সে বিষয়ে আলোচনা করার।

অনুষ্ঠানে জেইস গ্রুপের সার্ক অঞ্চলের রিজিওনাল হেড বিকাশ সাক্সেনা বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটে আমরা জেইস 'ল্যাবস@লোকেশন' নামে অত্যাধুনিক ল্যাব উদ্বোধন করতে পেরে আনন্দিত। বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে উদ্ভাবনে আমরা সবসময়ই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিজ্ঞানপ্রেমীদের উন্নত মাইক্রোস্কোপ ও স্বাস্থ্যসেবার সরঞ্জামের মাধ্যমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা দেওয়ার উপর আমরা সবসময় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

তিনি বলেন, এই ল্যাব স্থাপনে ধারাবাহিক সহযোগিতার জন্য আমরা ব্রুকার ন্যানো জিএমবিএইচ-এর ইউরোপ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার জন গিলবার্টকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। রিসার্চ মাইক্রোস্কোপিতে মাইক্রো অ্যানালিসিস টেকনিক সরবরাহের ক্ষেত্রে উভয় সংস্থার দৃষ্টিভঙ্গিতে সামঞ্জস্য রয়েছে।

বিকাশ সাক্সেনা আরও বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে অপার সম্ভাবনা ও প্রতিভা রয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নয়নের পরবর্তী স্তরে পৌঁছানোর জন্য আমাদের শুধু আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বুয়েটের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান, বায়ো-মেডিকেল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তারিক আরাফাত।

প্রসঙ্গত, জেইস বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্ট, আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইএনটি এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অপথালমোলজির সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।

গ্রাহকদের চাহিদা, প্রবণতা, বিক্রয় পরবর্তী সেবা ইত্যাদি বোঝার জন্য ব্র্যান্ডটির একটি শক্তিশালী ডিলার ও সার্ভিস নেটওয়ার্ক রয়েছে। উল্লেখ্য যে, উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎপাদন এবং সংযোজনের পাশাপাশি জেইস- এর সিস্টেমগুলি বিশ্বব্যাপী কাঁচামাল বিশ্লেষণ এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

টিআই/এসকেডি