স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ভাবিত ও প্রবর্তিত কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণাটি (কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা) সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা। এটি ‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে সম্প্রতি জাতিসংঘে প্রস্তাব আকারে গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মিলন অডিটোরিয়ামে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কর্তৃক এই রেজুলেশনের অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টা এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক। রেজুলেশনটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ ঘরে বসে বিভিন্ন ধরনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন। এখান থেকে বিনামূল্যে প্রায় ৩২ ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়। তাছাড়া এই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন দেওয়া শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের কথা ভাবছি। বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করা হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে ১৫টি হোস্টেল নির্মাণ করার প্রকল্প পাশ হয়েছে। সারাদেশে আটটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনুমোদন হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। করোনা মহামারিতে চিকিৎসক ও নার্স যেভাবে আন্তরিকভাবে সেবা দিয়ে গেছেন, বিষয়টি আমাদের স্বাস্থ্য খাতকে অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছে।

‘বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে গতবারের তুলনায় চার শতাংশ বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি দাবি রাখি তিনি যেন স্বাস্থ্য খাতে বাজেট আরও বাড়িয়ে দেন। সেই সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ২ হাজার ৬০০ শয্যার হাসপাতাল থেকে ৫ হাজার শয্যার হাসপাতাল করার ঘোষণা দেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেন, বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার বিষয়ে বিপ্লব ঘটিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।

তিনি বলেন, চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই, ডাক্তারদের কাছ থেকেই জামায়াতে ইসলামের ফান্ডিং আসে। এটি খুবই দুঃখজনক।

এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। এ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আ. ফ. ম রুহুল হক, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকে।

এসএএ/কেএ