রাজধানীতে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন সংগঠন হাইকেয়ারের উদ্যোগে দিনব্যাপী শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিশেষত শিশুদের নিয়ে হেলথ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। হেলথ ক্যাম্পে শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের শ্রবণ মাত্রা বিনামূল্যে নির্ণয় করা হয়। একইসঙ্গে অভিভাবকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করা।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে হাইকেয়ারের প্রধান কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের সহায়তায় এ হেলথ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।

ক্যাম্প উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাইকেয়ারের সেক্রেটারি জেনারেল তারিকুল ইসলাম খান বলেন, সামাজে যারা শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী আছে, তারাও পড়াশোনা শিখতে পারে। তাদেরও ধীরে ধীরে কথা শেখানো যায়। তারা কানে যতটুকু শুনে, সেটাকে আরও বাড়ানো যায়। সেই মেসেজটা দেওয়ার জন্য আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে যাচ্ছি। তাদের কীভাবে যত্ন নিতে হবে, পড়াশোনা করাতে হবে, তাদের সামাজিক যে অধিকার সেসব বিষয়ে অভিভাবকদের আমরা অবহিত করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আজ থেকে ৪০ বছর আগে সমাজ এমন ছিল না। এখন যেমন ডাক্তারের কাছে অনেক তথ্যপ্রযুক্তি আছে। তখন ডাক্তাররা জানত না একটি প্রতিবন্ধী বাচ্চাকে ভালো করার জন্য কি কি প্রতিবিধান আছে। তখন কোনো পরিবারে এ ধরনের একটি শিশু থাকা মানে সেই পরিবারটির জন্য বড় বোঝা ছিল। অনেকে বাচ্চাকে সমাজে পরিচয় করাত না। তাকে মেহমানের সামনে যেতে দেওয়া হতো না। ওই শিশুর সম্পদ অন্যরা ভোগ করত। এ ধরনের নানা বঞ্চনা সহ্য করত তারা। কিন্তু এখন তাদের জন্য অনেক ভালো, আধুনিক ট্রিটমেন্ট আছে। আমরা সেই মেসেজটা দিচ্ছি সবাইকে। তাদের জন্য হাইকেয়ার কাজ করে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম সিদ্দিক বলেন, আজ প্রতিবন্ধীদের জন্য আইন হয়েছে। এ ধরনের শিশুরা যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোনো একটা বাধার মুখে পড়ে, সেখান থেকে যদি বের করে দেয় কিংবা ঠিকমতো না পড়াতে চায়– এমন কিছু যদি ঘটে, তবে আইনে আছে তাকে পড়ানো ব্যবস্থা করতে হবে। যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেই পদক্ষেপ ওই স্কুলে থাকতে হবে। অন্যথায় ওই স্কুল চলতে পারবে না। একইভাবে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও যদি আপনি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন মনে করেন, তাহলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ আছে। এসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান অডিওলজিস্ট কানিজ ফাতেমা, নির্বাহী পরিচালক আসিফ বিন ইসলাম, নির্বাহী সচিব সায়েম আহমেদ, হাইকেয়ার স্কুল ঢাকার অধ্যক্ষ রওশন আরা, জাতীয় প্রতিবন্ধী বিশেষজ্ঞ হেমায়েতুন্নেসা পাপড়ি প্রমুখ।

টিআই/এসএসএইচ