কিডনি ট্রান্সপ্লান্টসহ (প্রতিস্থাপন) বিভিন্ন চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অসংখ্য রোগী দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। যেকারণে বছরে প্রচুর পরিমাণ অর্থ চিকিৎসাসেবায় বিদেশে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় রোগীদের ঠেকাতে দূতাবাসকে পৃথক একটি সেল গঠনের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (৪ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেল আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই প্রস্তাব করেন।

উপাচার্য বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ট্রান্সপ্লান্টের রোগীরা সেবা নিতে যাচ্ছে। এতে দেশের প্রচুর অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। যদি পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে হয় সেজন্য দূতাবাসে একটি সেল গঠন করে বোর্ডের সুপারিশের মাধ্যমে যেতে হবে। এজন্য দূতাবাসগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার মানুষের কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের লোক বলে সে সক্ষমতা নেই। এজন্য আমরা ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট টিম তৈরি করছি। ট্রান্সপ্লান্ট করার জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করছি।

তিনি বলেন, আমরা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহে তিনটি করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করতে পারি। কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য শিশু হাসপাতাল আমাদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। হার্ট প্রতিস্থাপনের জন্যেও আমরা বিশেষজ্ঞ দল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামি দেশ যেমন ইরান, সৌদি আরব, কুয়েত  ইত্যাদি দেশেও ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে। এতে কোনো ধর্মীয় বাধা নেই। ইসলাম ধর্মসহ হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্মসহ সব ধর্মেই মানবকল্যাণের কথা বলা হয়েছে। মানুষের জীবন বাঁচানোর কথা বলা হয়েছে। তাই এই ধরনের মহৎকাজে অঙ্গদান করলে তাতে কোনো ধর্মীয় বিধি নিষেধ নেই। যাদের মাথায় চুল নেই, আগামীতে আমরণ তাদের জন্য হেয়ার ইমপ্ল্যান্টের ব্যবস্থাও করব।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেলের আহ্বায়ক প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হারুন-অর-রশিদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী। এছাড়াও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মো. আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় মহাদেবমহ অন্যান্য ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/এমএ