টিকিট ছাড়া চিকিৎসা না দিতে চাওয়ায় কর্মচারীর হাতে চিকিৎসক লাঞ্ছিত
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) চিকিৎসা নিতে আসা এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন অর্থোপেডিক্স বিভাগের এক চিকিৎসক। নিয়ম অনুসরণ করে রোগী দেখাতে টিকিট কাটতে বলায় ওই কর্মচারী এবং তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে চিকিৎসকের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৭ মে) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে বিএমইউর অর্থোপেডিক্স বিভাগে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
লাঞ্ছনার শিকার ফেজ বি রেসিডেন্ট (অর্থোপেডিক্স) ডা. মো. আহসান হাবিব জানান, তিনি দুপুরে রুটিন অনুযায়ী বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় ‘ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট’-এর সমস্যায় ভোগা এক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। রোগী ইকবাল বিএমইউরই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।
তিনি বলেন, আমি রোগীকে বলি, নিয়ম অনুযায়ী টিকিট কেটে চিকিৎসা নিতে হবে। তখনই ইকবাল উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি তার সঙ্গে থাকা কয়েকজনকে নিয়ে আমার ওপর চড়াও হন। তারা অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে, আমাকে ধাক্কা দেয়, মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বালেন, এ ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং উপস্থিত নার্সদের সহায়তায় পাশের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) আশ্রয় নেন।
ঘটনার সময় উপস্থিত আনসার সদস্য এবং অন্যান্য হাসপাতাল কর্মচারীরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন অভিযোগ করেন ডা. আহসান হাবিব।
ঘটনার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একজন চিকিৎসক হিসেবে এমন অপমানজনক পরিস্থিতি মেনে নেওয়া কঠিন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। আমাদের অর্থোপেডিক্স বিভাগের জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালনকালে চিকিৎসকের ওপর হামলা হয়। কিছু বহিরাগত ও হাসপাতালের কিছু কর্মচারী এতে জড়িত বলে জানা গেছে। টিকিট নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নেয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে জড়িত স্টাফকে বিভাগীয় শাস্তি দেওয়া হবে। এছাড়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য-প্রমাণ মিললে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। চিকিৎসকের নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।
আরও পড়ুন
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কর্মরত একজন চিকিৎসক কর্মচারীর হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার এ ঘটনায় সহকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক উদ্বেগ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক চিকিৎসকই জানিয়েছেন, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।
টিআই/এমএন