আইসেসকো–বিএমইউ
চিকিৎসা শিক্ষায় এআই ও জলবায়ু স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগ
চিকিৎসা শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের মতো উদীয়মান হুমকি মোকাবিলায় গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় একযোগে কাজ করবে ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (আইসেসকো) ও বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ)।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীতে বিএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত একাডেমিক-টেকনিক্যাল কোলাবরেশন সভায় এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আধুনিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস এবং পরিবেশগত স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়গুলো ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ) এবং ইসলামিক দেশগুলোর বৈজ্ঞানিক-শিক্ষা সহযোগী সংস্থা আইসেসকো ভবিষ্যত গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রমে যৌথভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে “দি ফিউচার অব মেডিক্যাল এডুকেশন উইথ হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ফর এআই-রিলেটেড অ্যাক্টিভিটিজ অ্যান্ড রিসার্চ” শীর্ষক মুক্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। আলোচনা করেন আইসেসকোর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সেক্টরের প্রধান প্রফেসর ডা. রাহিল কামার। তিনি বলেন, “চিকিৎসা বিজ্ঞান কেবল পরীক্ষাগারে সীমাবদ্ধ না, বরং প্রযুক্তি, পরিবেশ ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে এটি আজ নিবিড়ভাবে জড়িত।”
বিজ্ঞাপন
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। তিনি বলেন, “এআই নির্ভর চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলাই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব ছাড়া তা সম্ভব নয়।” তিনি আইসেসকোর সঙ্গে যৌথ গবেষণা, স্কলারশিপ, প্রশিক্ষণ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি চালুর ওপর জোর দেন।
বক্তব্য রাখেন বিএমইউর জনস্বাস্থ্য ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ফ্যাকাল্টি অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক। তিনি বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে গবেষণার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চিকিৎসা শিক্ষাবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়া আলোচনায় পরিবেশগত স্বাস্থ্যঝুঁকি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো আবহাওয়া-নির্ভর রোগ, এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের মতো বৈশ্বিক স্বাস্থ্য হুমকি বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়। এসব ইস্যুতে যৌথ গবেষণা ও নীতি উন্নয়নের ওপর জোর দেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন। তারা বলেন, এআইভিত্তিক উচ্চশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় দক্ষতার উন্নয়নে বিএমইউ সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
সভা শেষে আইসেসকো পক্ষ থেকে বিএমইউর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন প্রফেসর রাহিল কামার। অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নেরও উত্তর দেন তিনি।
টিআই/এসএম