‘প্রতিটি কর্মের জবাবদিহিতা আছে’, চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের স্মরণ করালেন ভিসি
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ আমাদের খলিফা হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তিনি আসমান-জমিনের সৃষ্টি নিয়ে গবেষণার কথা বলেছেন। ধর্মকে মানুষের কল্যাণে, বিশেষত রোগীদের সেবায় প্রয়োগ করতে হবে।
একইসঙ্গে তিনি উপস্থিত চিকিৎসকদের ‘প্রতিটি কর্মের জবাবদিহিতা আছে’ বলেও স্মরণ করিয়ে দেন।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিএমইউ’র সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের লেকচার হলে ‘ইসলামী চিকিৎসা শিক্ষার বিবর্তন ও নৈতিক অনুশীলন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
বিএমইউ ভিসি বলেন, চিকিৎসকদের পেশাগত দায়বদ্ধতা থেকে রোগীর কষ্ট অনুধাবন করে সেবা দিতে হবে। কোনোভাবেই রোগীকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। ছাত্রদের যথাযথ শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব শিক্ষকদের, সেটাও স্মরণে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি কর্মেরই জবাবদিহিতা করতে হবে। ইসলামী নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করলে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষা দিলে সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যব্যবস্থার নৈতিকতার মানদণ্ডও উন্নত হবে।
অধ্যাপক শাহিনুল আলম আরও বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন রোগীরা। পাশাপাশি চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণাখাতও ক্রমে উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে। ইসলামী নৈতিকতার ভিত্তিতে চিকিৎসা শিক্ষার আধুনিক বিকাশে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি মনে করিয়ে দেন, ধর্ম কেবল ব্যক্তিগত আচার নয়, এটি মানবকল্যাণের পথনির্দেশ। চিকিৎসা পেশায় ইসলামী মূল্যবোধ প্রয়োগ করলে চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্ক হবে বিশ্বাসভিত্তিক, আর সে বিশ্বাসই হবে একটি ন্যায্য ও মানবিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভিত্তি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিকিৎসা শিক্ষাবিদ, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থটস’র সেক্রেটারি জেনারেল ও কিং ফাহাদ মেডিকেল সিটির ফ্যাকাল্টি অব মেডিসিনের প্রফেসর ডা. ওমর হাসান কাসুলে। তিনি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং চিকিৎসা শিক্ষায় ইসলামী নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও আধুনিক শিক্ষার সংমিশ্রণের গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাঁর বক্তব্য শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিএমইউ’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম ও অধ্যাপক ডা. আবু খুলদুন আল মাহমুদ।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রিউম্যাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শোয়েব মোমেন মজুমদার। অনুষ্ঠানের শেষে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থটস’র মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়, যা ভবিষ্যতে ইসলামী চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা এবং নৈতিক অনুশীলনের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
টিআই/এমএসএ