স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে গৃহীত উদ্যোগ ‘কোভ্যাক্স’ থেকে টিকা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই দেশে করোনার টিকা আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা পোস্টকে তিনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডা. সেব্রিনা বলেন, যে সব দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগ থেকে টিকা নেবে তাদের কোভ্যাক্স একটি চিঠি পাঠিয়েছে। যেহেতু এটার কোল্ট চেইনটাই অন্যরকম, এটা নিয়ে বাংলাদেশ আগ্রহী বা প্রস্তুত কি না, আমরা ফাইজার-বায়োএনটেকের এ টিকা নিতে চাই কি না, তা ১৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বলেছে।

তিনি বলেন, আমরা কোভ্যাক্সের টিকার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। টিকা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জানা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশসহ ১৯২টি সদস্যদেশকে চিঠি দিয়েছে কোভ্যাক্স। কোভ্যাক্সের পক্ষে চিঠিগুলো চিঠি দিয়েছেন গ্যাভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেথ বার্কলি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জানুয়ারির শেষ নাগাদ বা ফেব্রুয়ারিতে কোভ্যাক্স উদ্যোগ থেকে স্বল্পসংখ্যক টিকা দেওয়া হবে। তারা বলছে, এটা টিকা বিতরণের ‘প্রথম ঢেউ’। এ টিকা পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ওষুধ কোম্পানি ফাইজার এবং যেসব দেশ ফাইজারের টিকা সংগ্রহ করেছে, তাদের সঙ্গে কোভ্যাক্স টিকার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে। তার ভিত্তিতে কোভ্যাক্স জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে বা ফেব্রুয়ারিতে সদস্যদেশগুলোকে টিকা দিতে পারবে।

চিঠিতে কিছু শর্তের কথা উল্লেখ আছে
এ টিকা ২০২১ সালের মে মাসের মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে, জাতীয় করোনা টিকা পরিকল্পনায় একাধিক ধরনের টিকা ব্যবহারের ইচ্ছার প্রকাশ থাকতে হবে। এ ছাড়া ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফাইজারের টিকার অনুমোদন করাতে হবে। তার সঙ্গে ফাইজারের দায়মুক্তির একটি ব্যবস্থা থাকতে হবে।

চিঠিতে কিছু সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ জানুয়ারির মধ্যে সদস্যদেশগুলোকে আগ্রহের বিষয়টি কোভ্যাক্সকে জানাতে হবে। ১৯ থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ বা গ্যাভি সংশ্লিষ্ট দেশের আগ্রহপত্র ও অবকাঠামো পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবে। তারা ২৯ জানুয়ারির মধ্যে প্রথম ঢেউয়ের টিকা বিতরণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে এবং সদস্যদেশগুলোকে জানিয়ে দেবে।

ধনী দেশগুলোর প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বান
দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে করোনার ভ্যাকসিন কেনা বন্ধের জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেন, ধনী দেশগুলো কয়েকটি ভ্যাকসিনের বেশিরভাগ সরবরাহ কিনে নিয়েছে। আমি আহ্বান জানাচ্ছি, যারা বেশি ভ্যাকসিন কিনে নিয়েছেন তারা যাতে কোভ্যাক্সের জন্য এগুলো দান করে। সেই সঙ্গে আমি আরও আহ্বান জানাচ্ছি যে যাতে ধনী দেশগুলো করোনা ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করা বন্ধ করে।

সবার জন্য টিকা নিশ্চিতকরণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে গৃহীত উদ্যোগ ‘কোভ্যাক্স’। কোভ্যাক্স উদ্যোগের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বে ২০০ কোটি ডোজ নিরাপদ ও কার্যকর টিকা সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

টিআই/এসএম