প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ। তবে এই সময়ে পরীক্ষাসহ অভ্যন্তরীণ কিছু কার্যক্রম চালু থাকলেও দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি আবারও ঊর্ধ্বগতি ও বিধিনিষেধের ফলে সবকিছু স্তিমিত হয়ে যায়। এ অবস্থায় সেশনজট রোধ ও পরীক্ষার স্বার্থে শিক্ষার্থীদের মেডিকেল ক্যাম্পাসে আনার ব্যাপার প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর।

সোমবার (৯ আগস্ট) সকালে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন।

তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজগুলো চিকিৎসক তৈরির সূতিকাগার। করোনার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমরা কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পরীক্ষাগুলো নিয়েছি। যখনই তাদের পরীক্ষার সময় আসে, ধারাবাহিকভাবে আমরা তাদেরকে পরীক্ষা চলাকালীন ক্যাম্পাসে নিয়ে আসি। সেই হিসেবে আগামীতে আমাদের যে পরীক্ষা হবে, সেই পরীক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসার জন্য একটি প্রস্তাবনা দিয়েছি।'

এনায়েত হোসেন বলেন, 'গত ৬ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এখন কোভিড বিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটি বিষয়টা দেখবে যে, শিক্ষার্থীদেরকে এই মুহূর্তে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা যায় কি না। যাতে করে তাদের সেশন নষ্ট না হয়।'

এটা কী শুধু পরীক্ষার্থীদের জন্য নাকি সার্বিকভাবে মেডিকেল কলেজ খোলার প্রস্তাবনা- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা তো ধারাবাহিকভাবে সবসময়ই পরীক্ষা নিচ্ছি, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসে আবার পরীক্ষা শেষে চলে যায়। যেহেতু সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বগামী তাই এমন একটা প্রস্তাবনাই আমরা দিয়েছি। তবে শিগগিরই পরীক্ষার্থী ছাড়াও বাকি সবাইকেই ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে এনে ক্লাসসহ পড়াশোনা নিয়মিতকরণের কথা ভাবছি।'

এদিকে অধিদফতর সূত্র জানা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে কলেজগুলো বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। এসব শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় আগামী ২০ আগস্ট থেকে মেডিকেল কলেজগুলো খোলার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ২০ আগস্ট থেকে মেডিকেল কলেজে সশরীরে ক্লাস শুরু করতে চান তারা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা মহাপরিচালক বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। আমরা আরও আগেই এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। কারিগরি কমিটি এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করে সিদ্ধান্ত দেবে। এরপর মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।'

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরের ১৭ মার্চ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবিব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সব মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ১৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হলেও পরে তা কয়েক ধাপে বাড়ানো হয়। প্রায় দেড় বছরের মধ্যে বিভিন্ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও সরাসরি পাঠদান বন্ধ রয়েছে। 

টিআই/জেডএস