প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন রাজশাহী জেলায়। রাজশাহীতে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৫৫৮ জন। 

এদিকে, বেশি টিকা নিয়েছেন ঢাকা জেলার মানুষ আর কম নিয়েছেন মেহেরপুর জেলায়। করোনায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়েছে ঢাকা জেলায়, কম সংক্রমণ লালমনিরহাট জেলায়। 

শনিবার (২৮ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টারের বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির এক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

এতে বলা হয়েছে, করোনা উপসর্গে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যে দশ জেলায় তার মধ্যে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম। 

পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, করোনা উপসর্গে নিয়ে ৩৮৩ জনের মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল, ৩৭৩ মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে আছে সাতক্ষীরা জেলা আর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বগুড়া জেলা। এই জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

এছাড়াও যথাক্রমে ময়মনসিংহ জেলায় ৩১৯ জন, কুমিল্লা জেলায় ২৫৩ জন, চাঁদপুর জেলায় ২২৩ জন, ফরিদপুর জেলায় ১৯২ জন, খুলনা জেলায় ১৮২ জন এবং চট্টগ্রাম জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

সবচেয়ে বেশি শনাক্ত যে দশ জেলায় 

বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির (বিপিও) পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে দশ জেলায়। শীর্ষে আছে ঢাকা জেলা। এই জেলায় ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৪৫৪ জনের দেশে করোনা সংক্রমিত হয়েছে। ৯৫ হাজার ৩৪৪ জনের করোনা শনাক্ত নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম জেলা। আর ৩০ হাজার ৫৪০ জন শনাক্ত নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে সিলেট জেলার অবস্থান। 

এছাড়াও যথাক্রমে রাজশাহী জেলায় ২৬ হাজার ২৩০ জন, খুলনা জেলায় ২৬ হাজার ২৩ জন, কক্সবাজার জেলায় ২০ হাজার ৫০৬ জন, ফরিদপুর জেলায় ১৯ হাজার ৯৪৪ জন, কুষ্টিয়া জেলায় ১৬ হাজার ৮৭৪ জন, মুন্সিগঞ্জ জেলায় ১১ হাজার ৪১৪ জন এবং রাজবাড়ী জেলায় ৯ হাজার ৯৫০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। 

সবচেয়ে কম সংখ্যক মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে লালমনিরহাট জেলায়। জেলাটিতে মাত্র দুই হাজার ৫৩০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। 

সবচেয়ে বেশি টিকা প্রয়োগ দশ জেলায় 

বিপিও আরও জানিয়েছে, গত ১৭ আগস্ট পর্যন্ত দেশে সবচেয়ে বেশি টিকা নিয়েছেন ঢাকা জেলার মানুষ আর কম মেহেরপুর জেলার মানুষ। এরমধ্যে ঢাকা জেলায় টিকা নিয়েছেন ২৪ লাখ ২২ হাজার ৯০৫ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ১০ লাখ ৫১ হাজার ৩৮৩ জন, কুমিল্লা জেলায় ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৪২১ জন, ময়মনসিংহ জেলায় ৫ লাখ ৬০৮ জন, রাজশাহী জেলায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৩ জন, গাজীপুর জেলায় ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৮ জন, রংপুর জেলায় ৪ লাখ ১৬ হাজার ৭৬ জন টিকা নিয়েছেন।

এছাড়াও খুলনা জেলায় করোনা টিকা নিয়েছেন ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৯ জন, সিলেট জেলায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৬৩ জন এবং নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৩ লাখ ২৫ হাজার ৮৫৯ জন। আর সারাদেশের মধ্যে সবচেয়ে কম সংখ্যক মানুষ টিকা নিয়েছেন মেহেরপুর জেলায়। এই জেলায় ৬১ হাজার ৩৯১ জন করোনা প্রতিরোধী টিকা নিয়েছেন। 

৬৩ দিন পর মৃত্যু একশর নিচে

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জন মারা গেছেন। এতে ৬৩ দিন পর মৃত্যু একশর নিচে নামল।

এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৯২৬ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৪৩৬ জনের। এর মাধ্যমে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৯ জনে।

এর আগে গতকাল (২৭ আগস্ট) করোনায় ১১৭ জনের মৃত্যু হয়। ২৬ আগস্ট করোনায় ১০২ জনের মৃত্যু হয়, যা গত ৫৮ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২৮ জুন ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। ৫ ও ১০ আগস্ট দেশে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন রোগী মারা যান। ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২শর নিচে নামা শুরু করে।

টিআই/এইচকে