ক্যানসার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ অসংক্রামক রোগগুলো বাংলাদেশে নীরব মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এসব রোগ প্রতিরোধে বহুমুখী উদ্যোগ নিতে হবে। 

বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর এনসিডি কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (বিএনএনসিপি) আয়োজিত ‘নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ : জনস্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, অসংক্রামক রোগের পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ তামাক ব্যবহার। তামাকের ব্যবহার কমাতে বর্তমান সরকার নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, অসংক্রামক রোগের পেছনে পরিবেশ দূষণ, বায়ু দূষণ, খাদ্যে ভেজাল, অস্বাস্থ্যকর জীবনাচরণ, কায়িক শ্রমের অভাব ইত্যাদি দায়ী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এসব রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগ দরকার।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে কোভিড-১৯ ও অসংক্রামক রোগ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল শাফি মজুমদার।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বহুমুখী উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান।

ওয়েবিনারে বিএনএনসিপির পক্ষ থেকে বিদ্যমান আইনের ছয়টি সংশোধনী প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপান এলাকা বা ডিএসএ রাখার বিধান বাতিল করা, এফসিটিসির আলোকে দোকানে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের আকার নির্ধারণ করে দেওয়া এবং তামাকদ্রব্যের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করা।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে আমাদের বিশেষ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ওপর জোর দিতে হবে। সরকারের একার পক্ষে এসব রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।

ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক একেএম মহিবুল্লাহ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম ও বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডা. মোহাম্মদ জামসেদ। 

এছাড়া বক্তব্য দেন, এনসিডি অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডা. মনিকা অরোরা, কিডনি ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মোল্লাহ ওবায়দুল্লাহ বাকী প্রমুখ।

টিআই/আরএইচ