নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে পাল্টা-পাল্টি কমিটি ঘোষণায় অচল স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানীর কার্যক্রম। দ্বন্দ্বের জেরে দুই পক্ষ পৃথক কমিটি গঠন করেছিল। আজকের সভায় দুটি কমিটিই বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ১৫ মে ঢাকায় কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে পুনরায় কমিটি গঠন করা হবে।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলা সংগঠনটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দ্বন্দ্ব নিরসনে গঠিত হাইপাওয়ার কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পূর্বে দুই দফা বসা হলেও কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আজকের মিটিং ফলপ্রসূ হয়েছে। এই মিটিংয়ে সন্ধানীর পাল্টাপাল্টিভাবে গঠিত কেন্দ্রীয় দুই কমিটিই বাতিল করা হয়েছে। পূর্বে স্থগিত করা হলেও এবার আমরা দুই কমিটিকেই বাতিল করে দিয়েছি।

ডা. মনিলাল আইচ বলেন, এখন থেকে কেন্দ্রীয় সন্ধানীর নামে তারা কোনো কর্মসূচি পালন বা সভা সেমিনার করতে পারবে না। আগামী ১৫ মে ঢাকায় সব ইউনিটের বৈধ প্রতিনিধিদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মিটিং করে কমিটি গঠন করা হবে।

উপদেষ্টা কমিটির সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বর্তমান ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. মো. আলী আসগর মোড়ল, বিএসএমএমইউয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম সালেক, সন্ধানী প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক ডা. মোশাররফ হোসেন মুক্ত ও ডা. আব্দুল কাইয়ুমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি উপদেষ্টা কমিটির মিটিংয়ে বর্তমান দুই কমিটিই স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এ সময় পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত নবগঠিত দুই কমিটি কেন্দ্রীয় সন্ধানীর ব্যানারে কোনো সভা, প্রচারণা বা কর্মসূচি পালন করতে পারবে না বলে জানানো হয়। তবে শুধুমাত্র রক্তদান ও ত্রাণ কর্মসূচি চলমান থাকবে। এমনকি কমিটি স্থগিত থাকাকালীন সময়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় অফিস উপদেষ্টা পরিষদের চক্ষুদান সমিতির তত্ত্বাবধানে চলবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইউনিটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি আব্দুর রউফ উল্লাসকে সভাপতি এবং সন্ধানী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ইউনিটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি শামীম রেজাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০২১-২২ সেশনের কেন্দ্রীয় পরিষদ গঠন করা হয়। এরপর গত ১২ জানুয়ারি ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে নতুন করে আরেকটি পাল্টা কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. রাফায়েত হোসেনকে (সৌরভ)। সাধারণ সম্পাদক করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের নিশিত কুমার মণ্ডলকে।

সন্ধানীর উপদেষ্টা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি একটি মিটিং ডাকা হয়। সেখানে নানা আলোচনা ও পরামর্শের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. তোসাদ্দেক হোসেন সিদ্দিকী জামালের নেতৃত্বে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইএনটি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটুকে। এছাড়া কমিটির প্রধান উপদেষ্টা করা হয় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে। কমিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, অধ্যাপক ডা. এ কে এম সালেক, সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে সদস্য করা হয়।

টিআই/এসকেডি