কোভিড-১৯ রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে শহরের পোষা কুকুর ও বিড়ালগুলোর করোনা পরীক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের মেট্রোপলিটন সরকার। খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির। 
 
বিবিসি লিখেছে, দেশে প্রথমবারের মতো কোনো প্রাণী হিসেবে একটি বিড়ালছানার দেহে মহামারি কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর সিউল নগর কর্তৃপক্ষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিল। 

আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে আসার পর কেবল পোষা প্রাণীর মধ্যে জ্বর বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণগুলো দেখা গেলে নমুনা পরীক্ষা করা হবে। আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হলে কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হবে বাড়িতেই। 

সিউলের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা পার্ক ইয়ো-মি মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এসব পোষা প্রাণী আক্রান্ত হলে সেসব প্রাণীকে আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। কেননা মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে করোনাভাইরাস বিস্তার ছড়াতে পারে, এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। 

তবে, মালিক যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকেন কিংবা খুবই অসুস্থ হন অথবা প্রাণীটির যত্ন  নিতে অসমর্থ জন, তাহলে ওই পোষা প্রাণীকে নগর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নেওয়া হবে। 

দক্ষিণ কোরিয়ায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের (মানুষের ক্ষেত্রে) হাসপাতালের ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন না হলে সাধারণত তাদেরকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

পার্ক ইয়ো-মি নগরের বাসিন্দাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, তারা যেন তাদের পোষা প্রাণী নিয়ে ‘যখন হাঁটবেন তখন যেন পাশের কোনো মানুষ অথবা অন্য কোনো পোষা প্রাণী থেকে কমপক্ষে দুই মিটার দূরে রাখেন।’

দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদ সংস্থা ইউনহাপের খবরে বলা হয়েছে, গত মাসের শুরুতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জিনজুর এক ধর্মীয় স্থাপনায় একটি বিড়ালছানা মহামারি করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়।

স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করছে যে, এক মা ও তার মেয়ে ওই ধর্মীয় স্থাপনায় অবস্থান করছিলেন। হয়তো তাদের মাধ্যমেই বিড়ালছানাটি আক্রান্ত হয়েছে। কারণ তারা উভয়ই কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। 

বিশেষজ্ঞরা এর আগে বলেছিলেন যে, কুকুর বা বিড়াল মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের বিস্তার ছড়াতে পারে এমন সম্ভাবনা খুব কমই। যদিও গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ভাইরাসটি বহন করতে সক্ষম হতে পারে বিড়ালরা এবং এক বিড়ালের মাধ্যমে অন্য বিড়ালও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে পারে।

এএস