ইউক্রেনের ওপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাশিয়া। ওই সময় থেকেই দেশটির আকাশে মস্কোর যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ক্ষেপণাস্ত্রের ঘনঘন আনাগোনা ঘিরে তৈরি হয়েছিল শঙ্কার কালো মেঘ। আর মাটিতে সেই বিভীষিকা তৈরি করতে শুরু করেছিল রুশ ট্যাঙ্ক। কিন্তু প্রথম থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইউক্রেন। তাদের সেই প্রতিরোধের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে হেজহগ।

সজারুর মতো দেখতে ছোট্ট প্রাণী হেজহগ। তারই আদলে তৈরি এই আশ্চর্য অস্ত্র। কীভাবে কাজ করে এটি। কীভাবে গড়ে তোলে প্রতিরোধ? মূলত এগুলো তৈরি হয় লোহার বিম দিয়ে। সেগুলো কেটে পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে তৈরি করা হয় গার্ডরেল। এই গার্ডরেলগুলোকেই পরপর বসিয়ে রাখা হয় রাস্তায়। আর তাতেই কেল্লা ফতে। তৈরি হয় প্রতিরোধের প্রাচীর। যাকে এড়িয়ে এগোতে হোঁচট খেতে হচ্ছে রুশ ট্যাঙ্ককে।

তবে এ অস্ত্রের জন্ম কিন্তু ইউক্রেনে নয়। গত শতাব্দীর তিনের দশকে চেকোস্লোভাকিয়ায় প্রথমবার দেখা মিলেছিল ‘অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অবস্ট্যাকল ডিফেন্স’ হেজহগের। সেই প্রতিরোধের দেওয়াল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও ব্যবহৃত হয়েছিল। এবার ফের লোহার তৈরি সেই হেজহগই হয়ে উঠল ইউক্রেনীয়দের হাতিয়ার।

কতটা শক্তিশালী এই হেজহগ? জানা যাচ্ছে, একেকটি হেজহগের ওজন ১০০ কেজি প্রায়। এটিকে টপকে পথ চলা খুবই কঠিন। কোনো ট্যাঙ্ক এর ওপর দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেই আটকে যাবে। একই হাল হয় গাড়িরও।

পুতিনের সেনার মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে ইউক্রেনের আবহাওয়াও! দেশের বহু জায়গায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কেরও ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে নেমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে সেখানে যুদ্ধ করা খুব বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে রুশ সেনাদের। 

বিশেষজ্ঞদের দাবি, যে হারে তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে তাতে রাশিয়ার ট্যাঙ্কগুলো অচিরেই একেকটি ফ্রিজারে পরিণত হবে। আশঙ্কা, বহু সৈন্যের মৃত্যু হতে পারে প্রচণ্ড শীতের কারণে। আপাতত সেটাও চিন্তার কারণ মস্কোর।

ওএফ