উত্তর কোরিয়া একটি ‌‘অজ্ঞাত ক্ষেপণাস্ত্র’ ছুড়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। তবে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণের পরপরই বিকট বিস্ফোরণের পর আছড়ে পড়ে। তবে এতে কোনো হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি-না তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।

রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের একটি বিমানবন্দর থেকে বুধবার ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার যে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থান রয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ের কাছের ওই বিমানক্ষেত্র সেসবের একটি। এর আগে এই বিমানক্ষেত্র থেকে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

উত্তর কোরিয়ার গত কয়েক সপ্তাহে অস্ত্র পরীক্ষা বৃদ্ধির মাঝেই বুধবারের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হল। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় সকালে সাড়ে ৯টার দিকে পিয়ংইয়ংয়ের সুনান এলাকার একটি বিমানক্ষেত্র থেকে উত্তর কোরিয়া অজ্ঞাত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তবে উৎক্ষেপণের পরপরই সেটি ব্যর্থ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়াবিষয়ক সংবাদমাধ্যম এনকে নিউজকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, তারা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। প্রথমে বড় বিমানের চলে যাওয়ার শব্দ শোনা যায়। এরপরই সেটি বিধ্বস্ত হওয়ার মতো ব্যাপক বিস্ফারণের শব্দ পাওয়া যায়। এ সময় রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের আকাশে লাল আভাযুক্ত ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলীর ছবি দেখা যায়।

কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের জ্যেষ্ঠ ফেলো অঙ্কিত পান্ডে এনকে নিউজকে বলেছেন, বিপর্যয়কর ব্যর্থতার সাথে মিল রয়েছে ওই ছবিটির। একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সাধারণত তরল জ্বালানির কারণে লাল আভাযুক্ত কমলা ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়; যা মানুষের জন্য ‘অত্যন্ত বিষাক্ত।’

চলতি বছর এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া মোট ৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। এর মধ্যে নতুন একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলেছে, আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার আগে এর সঙ্গে সংশ্লষ্ট পরীক্ষামূলক কোনো উৎক্ষেপণ ছিল সেগুলো।

সর্বনিম্ন সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার দূরপাল্লার আইসিবিএম উত্তর কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে পারে। আর এসব ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা করা হয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র বহনের উপযোগী করে। উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জাতিসংঘের। 

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকের পর দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক পরীক্ষার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল উত্তর কোরিয়া। কিন্তু ২০২০ সালে দেশটির নেতা কিম জং উন ঘোষণা দেন যে, তিনি ওই প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে আর বাধ্য নন। 

সূত্র: বিবিসি।

এসএস