প্রায় ৪ কোটি ৪৪ লাখ মানুষের গণতান্ত্রিক একটি দেশে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইউরোপের শান্তি তছনছ করে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধের পক্ষে তার সাফাই— ‘‘পশ্চিমমুখী আধুনিক ইউক্রেন ক্রমাগত হুমকি হয়ে উঠছে। রাশিয়ার উন্নয়ন ও অস্তিত্ব হুমকির মুখোমুখি হয়েছে। আর নিরাপদ বোধ করা যাচ্ছে না।’’

কয়েক সপ্তাহের বোমা হামলা, হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু এবং লাখ লাখ মানুষের দেশত্যাগে প্রশ্ন উঠেছে, পুতিনের এই যুদ্ধের লক্ষ্য কী এবং এই যুদ্ধ থেকে কি বেরিয়ে আসার উপায় আছে? এসব নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসির পল কিরবি।

পুতিন কী চান?

আগ্রাসনের শুরুতে তিনি যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, যুদ্ধের গতি দেখে মনে হচ্ছে সেটি জলে ভেসে গেছে। তিনি ধরে নিয়েছিলেন, দ্রুতই তিনি এই যুদ্ধে জয়ী হবেন। এমনকি এটিকে তিনি আগ্রাসন অথবা যুদ্ধ বলে স্বীকার করেননি, বরং বিশেষ সামরিক অভিযান বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন।

তবে যে বিষয়টি পরিষ্কার, সেটি হলো তিনি এটিকে রাশিয়ার ইতিহাসের ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ হিসেবে দেখছেন। রাশিয়ার গোয়েন্দাপ্রধান সের্গেই নারিশকিন বলেছেন, ‘রাশিয়ার ভবিষ্যৎ এবং বিশ্বে এর ভবিষ্যৎ অবস্থান এখন ঝুঁকিতে।’

রাশিয়ার নেতাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ইউক্রেন দখল করা, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং পশ্চিমা প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোতে দেশটির যোগদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা চিরতরে গুঁড়িয়ে দেওয়া।

প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার জনগণকে বলেছেন, ‘তার লক্ষ্য ইউক্রেনকে অসামরিকায়ন ও নাৎসিমুক্ত করা এবং গত আট বছর ধরে সেখানে বসবাসরত রুশ-ভাষী জনগণ যারা সরকারের নিপীড়ন ও গণহত্যার শিকার হয়েছেন তাদের রক্ষা করা। ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলে নেওয়া আমাদের পরিকল্পনা নয়। আমরা কারো ওপর কোনো কিছু জোর করে চাপিয়ে দিতে চাই না।’

কিন্তু ইউক্রেনে নাৎসিরা নেই, গণহত্যাও ঘটছে না। তারপরও দেশটির কয়েক ডজন শহর ও নগরীতে নৃশংস বলপ্রয়োগ করছে রাশিয়া। এর ফলে রুশ দখলদারদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক শান্তি আলোচনায় রাশিয়া এখন আর ইউক্রেনের সরকার উৎখাত করতে চায় না এবং এর পরিবর্তে নিরপেক্ষ ইউক্রেন চায় বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

নিরপেক্ষ ইউক্রেন কেন চান পুতিন?

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা পায় ইউক্রেন। এরপর থেকে দেশটি পশ্চিমাদের— ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর দিকে ঝুঁকে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে ‘ঐতিহাসিক রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতা’ হিসেবে দেখে রাশিয়ার নেতা ইউক্রেনের পশ্চিমপ্রীতি শেষ করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছেন।রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয়রা একই জনগোষ্ঠী বলে দাবি করেছেন তিনি। ইউক্রেনের ইতিহাসকে অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, প্রকৃত রাষ্ট্রের কোনো বৈশিষ্ট্য ইউক্রেনের কখনো ছিল না।

২০১৩ সালে রাশিয়াপন্থি ইউক্রেনের নেতা ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর না করার জন্য চাপপ্রয়োগ করেছিলেন পুতিন। এর ফলে দেশটিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়; যা শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইয়ানুকোভিচ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে।

পরে একই বছর রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলের মাধ্যমে এর প্রতিশোধ নেয় এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ উসকে দেয়। রাশিয়া-সমর্থিত ওই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গত ৮ বছর ধরে ইউক্রেনের সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধ ১৪ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে।

২০১৫ সালে যুদ্ধবিরতির পর মিনস্ক শান্তি চুক্তি হলেও কখনোই সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। আগ্রাসন চালানোর আগ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তি চুক্তি ছিঁড়ে ফেলেন এবং রাশিয়া-সমর্থিত ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

ইউক্রেনে সৈন্য পাঠিয়ে তিনি ন্যাটোর বিরুদ্ধে ‘রাশিয়ার ঐতিহাসিক ভবিষ্যৎ’ হুমকিতে ফেলার অভিযোগ করেন। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই তিনি ন্যাটো দেশগুলো ক্রিমিয়ায় যুদ্ধ আনতে চেয়েছিল বলে দাবি করেন।

যুদ্ধ থেকে মুক্তির পথ আছে?

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াকের বিশ্বাস, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দুই দেশের মাঝে যুদ্ধবিরতি শুরু হতে পারে। কারণ রাশিয়ার সৈন্যরা তাদের বর্তমান অবস্থানে আটকে আছেন।

সমঝোতার অগ্রগতি নিয়ে উভয়পক্ষ ইতিবাচক কথা বলেছে। পোডোলিয়াক বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তার দাবি-দাওয়ার বিষয়ে নমনীয় হয়েছেন।

যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট চেয়েছিলেন ইউক্রেন ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত পূর্বাঞ্চলকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ইউক্রেনকে সংবিধান পরিবর্তন করে ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

ক্রিমিয়ার ভবিষ্যৎ অবস্থা, রাশিয়া-সমর্থিত লুহানস্ক ও দনেৎস্কের স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো এখনো সমাধান থেকে অনেক দূরে রয়েছে। কিন্তু পরবর্তী কোনো সময়ে যদি উভয়পক্ষ এসব সংকট সমাধানে একমত হয়, তাহলে তারা চুক্তি ভঙ্গকারী নাও হতে পারে।

এখন মনে হচ্ছে, রাশিয়া ইউক্রেনের নেতৃত্ব অপসারণ এবং বেলারুশের মতো একটি পুতুল সরকার সেখানে বসাতে পারবে না বলে মেনে নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধের শুরুতে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, ‌‘শত্রুরা আমাকে এক নম্বর এবং আমার পরিবারকে দুই নম্বর লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে।’

বিশ্লেষণী সংস্থা আরপলিটিক এবং কার্নেগি মস্কো সেন্টারের তাতিয়ানা স্টানোভায়া বলেছেন, পুতিনকে অনেক সীমিত একটি তালিকা মেনে নিতে হবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ ইউক্রেনের নিজস্ব সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী থাকার পরও দেশটিকে নিরপেক্ষ এবং নিরস্ত্রীকরণ করার চিন্তা-ভাবনা করছে রাশিয়া। দেশটিকে অস্ট্রিয়া অথবা সুইডেনের মতো করতে চায় মস্কো। যদিও এই উভয় দেশই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। অস্ট্রিয়া নিরপেক্ষ হলেও সুইডেন নয়। এমনকি দেশটি জোট সংশ্লিষ্ট না হলেও ন্যাটোর সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়।

ইউক্রেনের দাবি কী?

দেশটির প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা বলেছেন, ইউক্রেনের দাবি-দাওয়া একেবারে পরিষ্কার। যুদ্ধবিরতি এবং রাশিয়ান সৈন্য প্রত্যাহার। একই সঙ্গে আইনি দিক থেকেও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে, যা ইউক্রেনকে মিত্র দেশগুলোর জোট থেকে সুরক্ষা, কোনো আক্রমণ হলে সক্রিয়ভাবে প্রতিরোধ এবং সংঘাতে ইউক্রেনের পক্ষে সরাসরি অংশ নেবে।

জাতিসংঘের সাবেক মধ্যস্থতাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক মার্ক ওয়েলারের মতে, যুদ্ধ-পূর্ববর্তী অবস্থার মতো রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহার নিশ্চিত করাই কেবল ইউক্রেনের দাবি নয়, বরং পশ্চিমের জন্য একটি শেষ সীমারেখাও টানতে হবে, যা রাশিয়ার আরেকটি ‘শীতল সংঘাত’ মেনে নেবে না।

রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনও তাদের অবস্থান নমনীয় করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনীয়রা এখন বুঝতে পারছেন যে, ন্যাটো ইউক্রেনকে তাদের সদস্য হিসেবে স্বীকার করবে না; এটি সত্য এবং এটি অবশ্যই স্বীকৃতি পাবে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম পিবিএসকে জেলেনস্কির উপদেষ্টা পোডোলিয়াক বলেছেন, আমরা এমন নথিপত্র নিয়ে কাজ করছি, যা নিয়ে প্রেসিডেন্টরা আরও বেশি আলোচনা এবং স্বাক্ষর করতে পারবেন। অবশ্যই আগামী কিছু সময়ের মধ্যে এটি আসছে। কারণ যুদ্ধ অবসানের এটাই একমাত্র উপায়।

ন্যাটোর সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাবেন পুতিন?

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পশ্চিম এবং তার ৩০ সদস্যের প্রতিরক্ষামূলক সামরিক জোটের প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ইউক্রেনের সাথে আপসের বিষয়টি তিনি হয়তো বিবেচনা করবেন। কিন্তু পুতিনকে নিয়ে পশ্চিমের একটি লক্ষ্য রয়েছে। আর সেটি হলো— রাশিয়ায় সমাজকে বিভক্ত করা এবং শেষ পর্যন্ত এটিকে ধ্বংস করে দেওয়া।

যুদ্ধের আগে তিনি কয়েকটি দাবি জানিয়েছিলেন। তার মধ্যে আছে, ন্যাটোর ঘড়ির কাঁটা ১৯৯৭ সালে ফিরিয়ে নেওয়া, পূর্ব ইউরোপমুখী সম্প্রসারণ বন্ধ, ১৯৯৭ সাল থেকে জোটে যোগ দেওয়া সদস্য দেশগুলো থেকে ন্যাটোর সৈন্য ও সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া এবং রাশিয়ার সীমান্তের কাছে অস্ত্র মোতায়েন না করা। তার মানে মধ্য ইউরোপ, পূর্ব ইউরোপ এবং বাল্টিক অঞ্চলে ন্যাটোর উপস্থিতি নয়।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের দৃষ্টিতে ১৯৯০ সালে পশ্চিমারা পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো জোটের এক ইঞ্চিও সম্প্রসারণ ঘটাবে না বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটি থেকে সরে গেছে। এই প্রতিশ্রুতি করা হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে। তবে তৎকালীন সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের প্রেক্ষাপটে পূর্ব জার্মানির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

পরবর্তীতে গর্বাচেভ বলেছিলেন, ন্যাটোর সম্প্রসারণের বিষয়টি সে সময় আলোচনাই করা হয়নি। এখন যা পরিস্থিতি, তা দেখে মনে হচ্ছে পুতিন তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইউরোপীয় শহরগুলোকে ধ্বংস করতে আগ্রহী। এ নিয়ে পশ্চিমা নেতারা এখন কোনো বিভ্রান্তির মধ্যে নেই।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজের বিশ্বাস, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ‘তার বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ইউরোপ দখল করতে চান’ এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়েছেন। শোলৎজ এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপ মহাদেশের ইতিহাসের বাঁক বদলের কথা বলেছেন।

যুদ্ধের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র তার জাতীয় অঞ্চলের বাইরে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল রাশিয়া। স্বল্প এবং মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সীমিত করার পাশাপাশি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপারে একটি নতুন চুক্তির আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আপাতত সেই আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ।

কার্নেগি মস্কো সেন্টারের তাতিয়ানা স্টানোভায়া নতুন স্নায়ুযুদ্ধের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তিনি বলেন, আমার দৃঢ়ভাবে মনে হচ্ছে যে, পশ্চিমকে একটি নতুন হুমকির ব্যাপারে প্রস্তুত হওয়া উচিত। সেটি আমরা যা কল্পনা করেছি, তারচেয়েও বেশি সামরিক ও আক্রমণাত্মক হবে।

রাশিয়ার জন্য এরপর কী?

ইউক্রেনে আগ্রাসন ঘিরে পশ্চিমের প্রতিক্রিয়ার মাত্রা দেখে কিছুটা অবাক হয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। কারণ তিনি জানতেন ন্যাটোর সদস্যরা কখনোই ইউক্রেনের মাটিতে পা রাখবে না। তবে ইতোমধ্যে যেসব নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিতে নাটকীয় প্রভাব ফেলছে, তা হয়তো তিনি ধারণাও করতে পারেননি। আর এ নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তিনি।

বিভিন্ন উপায়ে রাশিয়ার অর্থনীতিকে লক্ষ্য বানিয়েছে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা:

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ জব্দ এবং বড় বড় ব্যাংকের সুইফট লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে।

• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করেছে; ইইউ এক বছরের মধ্যে রাশিয়ার গ্যাস আমদানি দুই-তৃতীয়াংশ কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এছাড়া যুক্তরাজ্য ২০২২ সালের শেষ নাগাদ রাশিয়ার তেল আমদানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

• রাশিয়া এবং ইউরোপীয় বিভিন্ন কোম্পানির বিশাল বিনিয়োগের রুশ নর্ড স্ট্রিম ২ গ্যাস পাইপলাইনের অনুমোদন স্থগিত করেছে জার্মানি।

• ইইউ, যুক্তরাজ্য ও কানাডার আকাশসীমায় রাশিয়ার সব এয়ারলাইন্সকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

• রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং দেশটির অনেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ইউক্রেনের সাথে কোনো শান্তি চুক্তি হলেও তা এসব নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটাবে না এবং ভ্লাদিমির পুতিন সেটা ভালো করেই জানেন। এসবের পরিবর্তে তিনি যুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাশিয়ানদের চেপে ধরেছেন। দেশটিতে ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতাকারী প্রায় ১৫ হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার প্রায় সব স্বতন্ত্র গণমাধ্যমের টুটি কার্যত চেপে ধরা হয়েছে। 

দেশটিতে কার্যকর রাজনৈতিক বিরোধিতাকারী নেই বললেই চলে। কারণ তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন অথবা বিরোধীনেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মতো তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার জনগণ সর্বদা ধূর্ত ও বিশ্বাসঘাতকদের থেকে সত্যিকারের দেশপ্রেমিকদের আলাদা করতে সক্ষম।

এসএস