পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার অনাস্থা ভোট শুরু হওয়ার আগেই দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছে। দুপুরে নামাজের বিরতির জন্য অধিবেশন মুলতবি করা হলেও বিরোধীরা দেশটির ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআইয়ের) আইনপ্রণেতাদের বিরুদ্ধে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ করেছেন।

দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছিলেন গত বৃহস্পতিবার। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে সংসদের ডেপুটি স্পিকার খারিজ করে যে আদেশ দিয়েছিলেন, ওই দিন তা অবৈধ ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট।

শনিবারের নির্ধারিত সময়ে সংসদের অধিবেশন পুনরায় শুরু না হওয়ায় দেশটিতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার ইমরান খানের দলের আইনপ্রণেতারা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তারা যতটা সম্ভব ভোট বিলম্বিত করার চেষ্টা করবেন।

এদিকে, ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খান তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার যেকোনো প্রচেষ্টা বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। চলমান এই সংকট দক্ষিণ এশিয়ার ২২ কোটি মানুষের এই দেশটির রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

গত সপ্তাহে ইমরান খানের মিত্ররা অনাস্থা ভোট আটকে দেয়। কিন্তু দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সেই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে পার্লামন্ট পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।

শনিবার সকালের দিকে সংসদের অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ পর তা মুলতবি করেন স্পিকার আসাদ কায়সার। মুলতবি হয়ে যাওয়া অধিবেশন স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরুর কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অধিবেশন শুরুর কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। 

অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হলে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরিফ নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সংসদের অধিবেশনের শনিবার ভাষণ দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় তিনি স্পিকার কায়সারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভোটাভুটি শুরুর আহ্বান জানান তিনি। 

তখন স্পিকার বলেছিলেন, তিনি আদালতের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন।

৬৯ বছর বয়সী ইমরান খান সামরিক সহায়তায় ২০১৮ সালে পাকিস্তানের ক্ষমতায় আসেন। সম্প্রতি তার মিত্ররা জোট সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন ইমরান খান। বিরোধীরা বলেছেন, করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি এবং পাকিস্তানকে দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে গড়ে তোলার যে অঙ্গীকার দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ইমরান খান, তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস