ছবি: রয়টার্স

প্রতিদিন এক থেকে দেড়লাখ মানুষ শনাক্ত হচ্ছেন করোনা পজিটিভ হিসেবে, কিন্তু তারপরও অধিকাংশ করোনা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। জনসমক্ষে মাস্ক পরিধান ব্যতীত অন্যান্য যাবতীয় করোনা বিধি দেশটিতে কার্যকারিতা হারাবে আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে।

শুক্রবার রাজাধানী ‍সিউলে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ বিষয়ক এক সভায় দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিম বু কিয়াম।

ভাষণে দক্ষিন কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে রাজধানী সিউলসহ পুরো দক্ষিণ কোরিয়ায় রাত্রিকালীন কারফিউ তুলে নেওয়া হবে। পাশাপাশি, যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান বা সমাবেশে ৩০০ বা তার চেয়ে অধিক সংখ্যক মানুষ উপস্থিত থাকতে থাকতে পারবেন।

এছাড়া সরকারের নতুন আদেশ অনুযায়ী ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোকে ধারণক্ষমতার ৭০ শতাংশ মানুষের উপস্থিতি রাখতে পারবে। পাশপাশি, করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর ৭ দিন বাধ্যতামূলক সেলফ আইসোলেশনের যে বিধান এতদিন কার্যকর ছিল, তা ও শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছেন কিম বু কিয়াম।

তবে বাড়ির বাইরে ও জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মাস্ক পরিধান বিষয়ক বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়নি। এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড থেকে সুরক্ষার জন্য মাস্ক খুবই প্রয়োজনীয় এবং সরকার মনে করছে, বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানের বিধি তুলে নেওয়ার মতো সময় এখনও আসেনি।’

করোনা সংক্রমণের উল্লম্ফনের কারণে গত মার্চের শুরু থেকেই ব্যাপক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি। ১৫ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন ৬ লাখ ২০ হাজার মানুষ, যা মহামারির দুই বছরে দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড।

মহামারি শুরুর পর থেকে করোনয় আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী অনুযায়ী, গত ৭ দিনে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১ কোটি ২০ লাখ ৬৫৬ জন এবং কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৯৭১ জনের।

আগের দিন বৃহস্পতিবারও (১৪ এপ্রিল) দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪১৭ জন এবং এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ৩১৮ জনের।

তবে করোনা সংক্রমণের সাপেক্ষে এই রোগে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা এখনো বেশ কম; এবং তার প্রধান কারণ দেশটির জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ কোটি ২০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত এই দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন এবং ৬৪ শতাংশ মানুষ নিয়েছেন টিকার তৃতীয় বা বুস্টার নিউজ।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ