রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ফাইল ছবি)

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর প্রায় দুই মাসের মাথায় নতুন একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। পামাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন নতুন এই রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ‘সারমাত’। অত্যাধুনিক এই পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রকে বিশ্বসেরা বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

তার দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে মস্কোর শত্রুরা থেমে যাবে এবং (কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে) দ্বিতীয়বার চিন্তা করবে। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথমবারের মতো রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্লেসেতস্ক থেকে পরীক্ষামূলকভাবে নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার (৩ হাজার ৭০০ মাইল) দূরে কামচাটকা উপদ্বীপের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

রয়টার্স বলছে, বছরের পর বছর ধরে সময় নিয়ে তৈরি করা পামাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রটির এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ পশ্চিমা দেশগুলোকে বিস্মিত করেনি। কিন্তু ভূ-রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনাপূর্ণ এমন এক সময়ে এই পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে যখন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর দুই মাসের মাথায়ও দেশটির বড় কোনো শহর দখল করতে পারেনি রুশ সেনারা।

রাশিয়ার দাবি, বিশ্বের আধুনিক কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ‘সারমাত’কে আটকাতে পারবে না। অবশ্য রুশ এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা রয়েছে। এটি ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরোধী সব ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।’

তার দাবি, বিশ্বে দ্বিতীয় আর কারও কাছে এই অস্ত্র নেই এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সেটি আসারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

পুতিন আরও বলেছেন, ‘অনন্য এই অস্ত্রটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধের সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে। একইসঙ্গে বাইরের হুমকি থেকে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যারা উন্মত্ত আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মাধ্যমে আমাদেরকে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাদের জন্য চিন্তার খোরাক জোগাবে।’

এদিকে বুধবার মস্কোয় এক বক্তব্যে পুতিন বলেন, ডনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের অত্যাচার ও দমন অভিযানের কারণে রাশিয়া চলমান বিশেষ অভিযান শুরু করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ডনবাসের লুহানস্ক ও দোনেতস্ক অঞ্চলের বাসিন্দাদের কিয়েভের অত্যাচার থেকে বাঁচানোর জন্য এ অভিযান চালাতে হয়েছে।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অভিযানের প্রায় দুই মাস পূর্ণ হতে চলেছে। এখন পর্যন্ত পশ্চিমা বহু দেশ ইউক্রেনকে সমরাস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে রুশবিরোধী যুদ্ধে কিয়েভকে সহযোগিতা করেছে। যদিও রাশিয়া বলছে, ইউক্রেন দখল করার কোনো ইচ্ছে মস্কোর নেই।

প্রেসিডেন্ট পুতিন জোর দিয়ে বলেন, ডনবাস অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবেই। দোনেতস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বাসিন্দাদের কিয়েভের অত্যাচার থেকে রক্ষা করতে রাশিয়া কাজ করে যাবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি।

টিএম