আফগানিস্তানের দুই উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার ই শরিফ ও কুন্দুজে পৃথক দুই বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ২৩ জন, আহত হয়েছেন আরও বহু। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

মাজার ই শরিফে হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের আফগানিস্তান শাখা ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএস-কে)।

বার্তাসংস্থা এএফপি ও রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুরে আফগাস্তিানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বালখের প্রধান শহর মাজার ই শরিফের সেহ দোকান মসজিদে বোমা হামলা হয়। এটি একটি শিয়া মসজিদ এবং বিস্ফোরণের সময় মসজিদটিতে জোহরের নামাজ চলছিল।

আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১২ জন এবং আরও ৫৮ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে ৩২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বালখ প্রদেশের জনস্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র আহমাদ জিয়া জিনদানি এএফপিকে বলেন, ‘আহতদের যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, সেখানকার পরিস্থিতি খুবই শোচনীয়। আহতদের আর্তনাদ, রক্ত, স্বজনদের হাহাকারে ভরে উঠেছে হাসপাতাল, পুরো শহরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।’

হামলার দায় স্বীকার করে এক বিবৃতিতে আইএস-কে জানিয়েছে, রিমোট কন্ট্রোলচালিত বোমার সাহায্যে ঘটানো হয়েছে এই বিস্ফোরণ।

এদিকে, মাজার ই শরিফে হামলার কাছাকাছি সময়ে বিস্ফোরণ ঘটে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় অপর প্রদেশ কুন্দুজের রাজধানী কুন্দুজেও। এতে নিহত হয়েছেন ১১ জন।

কুন্দুজের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মুখপাত্র ওবায়দুল্লাহ আবেদি এএফপিকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তালেবান সরকারের অধীনে চাকরিরত মেকানিকদের একটি বাসকে লক্ষ্য করে বাইসাইকেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে বাসের ভেতর থাকা মেকানিকদের মধ্যে ৪ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন, আহত হন আরও ১৮ জন। আহতদের হাসপাতলে নেওয়ার পর মারা যান আরও ৭ জন।

এই হামলার দায় অবশ্য এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি স্বীকার করেনি, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা— মাজার ই শরিফের মতো এই হামলার জন্যও দায়ী আইএস-কে।

গত বছর আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান গোষ্ঠী। তারপর গত কয় মাসে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে দেশটির বিভিন্ন শহরে।

প্রায় সবক’টি বিস্ফোরণই ঘটিয়েছে আইএস-কে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে দেশটির সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিমদের গোত্র হাজারা সম্প্রদায়কে। নিজেদের একাধিক বিবৃতি ও ভিডিওবার্তায় আফগানিস্তানের শিয়া সম্প্রদায়কে ‘ধর্মচ্যুত’ বলে উল্লেখ করেছে আইএস-কে।

সুন্নি মুসলিম অধুষিত আফগানিস্তানের মোট ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশই শিয়া।

এসএমডব্লিউ