ছবি: বিবিসি

মহামারির গত ২ বছরে ভারতে করোনায় মৃত্যুর যে সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তা খারিজ করে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই প্রতিবেদনের সঙ্গে ‘বাস্তব অবস্থার কোনো সম্পর্ক নেই।’

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে করোনা মহামারির দুই বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করে ডব্লিউএইচও। সেখানে দাবি করা হয় হয়, মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রায় দেড় কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এবং ভারতে কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে ৪৭ লাখ মানুষের।

সরকারি হিসেব বলছে, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬২ লাখ ৭২ হাজার ৪৬৮ জনের; এবং ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মহামারিতে এ পর্যন্ত ভারতে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে বিজ্ঞানীরা এই কাজের দায়িত্বে ছিলেন তারা শুধু করোনার কারণেই মৃত্যুর সংখ্যা ধরেননি, করোনা হওয়ার পর তার প্রভাবে আক্রান্তদের শরীরে অন্য রোগের কারণে মৃত্যুর সংখ্যাও ধরেছেন। সেজন্যই সরকারি হিসাবের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে বিপুল ফারাক দেখা যাচ্ছে।

সংস্থার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, বিভিন্ন দেশ যেসব তথ্য দিয়েছিল, তার সঙ্গে স্ট্যাটিসটিক্যাল মডেলিং যোগ করে এই সংখ্যা পাওয়া গেছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিন শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পরিসংখ্যান খারিজ করে দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরাকর। বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এর সঙ্গে বাস্তব অবস্থার কোনো সম্পর্ক নেই। এই রিপোর্ট সংখ্যাতত্ত্বের দিক থেকে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও তা প্রশ্নের মুখে পড়তে বাধ্য।’

পৃথক আরেক বিবৃতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যে মেথডলজি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই রিপোর্ট তৈরি করেছে, তা ভুল।’

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এই বিষয়ে পুরো তথ্য দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই তথ্য উপেক্ষা করা হয়েছে। তারা যে সব সূত্র থেকে তথ্য নিয়েছে, যে পদ্ধতিতে মৃতের সংখ্যা গণনা করেছে, এবং তাদের গণনার ফল নিয়ে ভারত প্রশ্ন তুলেছে।'

প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনার সময় ওই রোগের কারণে যেসব মৃত্যু হয়েছে, তার সঙ্গে কো-মর্বিডিটি, অর্থাৎ করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় অন্য কোনো রোগ বা শারিরীক জটিলতাজনিত কারণে ঘটিত মৃত্যুকেও হিসেবে ধরা হয়েছে।

গত বছর করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ভারতে প্রচুর বিতর্ক হয়েছিল। তখন বিভিন্ন রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, কো-মর্বিটিডি বা করোনা হলেও অন্য গুরুতর রোগের কারণে যে মৃত্যু হয়েছে, তার হিসাব করোনায় মৃতদের মধ্যে ফেলা যাবে না।

সূথ্র: ডিডব্লিউ

এসএমডব্লিউ