করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার মাঝে উত্তর কোরিয়ায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ২১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রথম শনাক্ত এবং দেশজুড়ে লকডাউন জারির দু’দিন পর দেশটির কর্তৃপক্ষ প্রাণহানির এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ বলছে, শুক্রবার নতুন করে আরও এক লাখ ৭৪ হাজার ৪৪০ জনের জ্বর শনাক্ত হয়েছে। একই সঙ্গে এদিন জ্বরে ভুগে মারা গেছেন আরও ২১ জন। তবে দেশটিতে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত কতজনের প্রাণহানি ঘটেছে সেবিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানানো হয়নি।

এদিকে, দেশটির নেতা কিম জং উন উত্তর কোরিয়ায় দ্রুত করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তারকে ‘মহাবিপর্যয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। শনিবার এক জরুরি বৈঠকে অংশ নিয়ে দেশে ভাইরাসের বিস্তার মোকাবিলায় সর্বাত্মক যুদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। যদিও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অনেক আগেই দেশটিতে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে। তবে উত্তর কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে দু’দিন আগে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়।

উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাসের বড় ধরনের প্রাদুর্ভাবের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। টিকাদান কর্মসূচির অভাব এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার কারণে দেশটির আড়াই কোটি মানুষ মহামারির মারাত্মক ঝুঁকিতে আছেন। শনিবার দেশটির সরকারি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশজুড়ে অজানা জ্বরে প্রায় ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।

পরীক্ষার সীমিত ক্ষমতা থাকায় দেশটির বেশিরভাগ মানুষের করোনা সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে গত দু’দিন দেশটিতে জ্বরে আক্রান্তের পরিসংখ্যানে উল্লম্ফন দেখা গেছে। যে কারণে উত্তর কোরিয়ায় করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কিম জং উন বলেছেন, প্রতিষ্ঠার পর আমাদের দেশে মারাত্মক মহামারির বিস্তার হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত দেশে ‘মহাবিপর্যয়।’ এই মহামারির বিস্তারের জন্য তিনি ‘আমলাতান্ত্রিক এবং চিকিত্সাব্যবস্থার অক্ষমতাকে’ দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে প্রতিবেশি চীনের মতো দেশগুলোর করোনা মোকাবিলার কৌশল থেকে উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বলছে, গত এপ্রিল থেকে দেশে জ্বরে ভোগার পর অন্তত ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তবে তারা করোনা পজিটিভি ছিলেন কি-না সেবিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে একজন মারা গেছেন, পরবর্তীতে তার নমুনা পরীক্ষায় করোনার অতি-সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।

এসএস