ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে চাকরি ছেড়েছেন একজন রুশ কূটনীতিক। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বিরুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভালাদিমির পুতিনের ‘রক্তাক্ত, বুদ্ধিহীন’ যুদ্ধের প্রতিবাদে রাশিয়ার ওই কূটনীতিক তার চাকরি ছাড়েন। সোমবার (২৩ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

পদত্যাগ করা রুশ ওই কূটনীতিকের নাম বরিস বোন্ডারেভ। তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘে রাশিয়ার মিশনে কাজ করছিলেন। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, মস্কোর বিরুদ্ধে তার কথা বলার সিদ্ধান্তের অর্থ ক্রেমলিন এখন তাকে বিশ্বাসঘাতক বলে মনে করতে পারে এবং এটি তিনি আগেই জানতেন।

অন্যদিকে আগ্রাসানের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজনৈতিক কারণে কোনো কূটনীতিকের চাকরি ছাড়ার এই ঘটনা বেশ বিরল বলেই জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। বার্তাসংস্থাটি বলছে, লিংকডইন প্রোফাইলে বরিস বোন্ডারেভ নিজেকে জেনেভায় জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী মিশনের একজন কাউন্সেলার হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘আমি অন্য দিনের মতোই সোমবার সকালে মিশনে গিয়েছি এবং আমার পদত্যাগপত্র দাখিল করেছি। আর এরপরই সেখান থেকে আমি বেরিয়ে আসি।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক চলা রাশিয়ার সর্বাত্মক এই হামলা গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কথা উল্লেখ করে বরিস বোন্ডারেভ বলেন, ‘আমি কয়েক বছর আগেই এ (পদত্যাগের) বিষয়ে চিন্তা করতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু ইউক্রেনে রুশ এই আগ্রাসনের কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়ের মাত্রা আমাকে এটি করতে প্ররোচিত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, তিনি বেশ কয়েকবার দূতাবাসের সিনিয়র স্টাফদের কাছে হামলার বিষয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার দাবি, কিন্তু কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমাকে আমার মুখ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল।

এর আগে বোন্ডারেভ লিংকডইনে তার বিদায়ের ঘোষণা দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি একজন কূটনীতিক হওয়ার জন্য পড়াশোনা করেছি এবং বিশ বছর ধরে একজন কূটনীতিক হিসেবেই কাজ করেছি। (রাশিয়ার পররাষ্ট্র) মন্ত্রণালয় আমার বাড়ি এবং পরিবার হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমি আর এই রক্তাক্ত, বুদ্ধিহীন এবং একেবারে অপ্রয়োজনীয় আগ্রাসনের অংশীদার হতে পারছি না।’

অবশ্য বরিস বোন্ডারেভের পদত্যাগের বিষয়ে জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী মিশন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

টিএম