দুই বছর আগে এক দুর্ঘটনার পর একটি পা কেটে ফেলতে হয় সীমার

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারের ১০ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর একটি ভিডিও ইন্টারনেট দুনিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আর এই জনপ্রিয়তার পেছনে অবশ্য ভালো একটি কারণও আছে। বিহারের জামুই জেলার বাসিন্দা ওই কন্যার নাম সীমা। ইন্টারনেটে লাখ লাখ মানুষের হৃদয় জয় করেছে সে। কারণ প্রত্যেক দিন সে এক পায়ে লাফিয়ে স্কুলে যায়। দুই বছর আগে এক দুর্ঘটনার পর তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। তখন থেকে অদম্য এই কন্যার লড়াই শুরু হয় এক পায়ে ভর করে।

এক পা কাটা হলেও সেটি তার পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসার কাছে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বরং প্রত্যেক দিন এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরের স্কুলে যায় সে। সীমার এক পায়ে লাফিয়ে স্কুলে যাওয়ার একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এই ভিডিও। অনেকেই তার অদম্য লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন।

ভিডিওটি বিহারের পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও রাজনীতিকের নজরে এসেছে। তারাও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন লড়াকু এই কন্যাকে।

করোনাভাইরাস মহামারির সময় ভারতে মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে প্রশংসায় ভাসছিলেন বলিউড অভিনেতা সোনু সুদ। বিহারের সীমার এক পায়ে লড়াইয়ের ভিডিও দেখার পর তার সহায়তাও এগিয়ে এসেছেন তিনি।

ছোট্ট এই শিশুকন্যার ভিডিও রিটুইট করে সোনু সুদ হিন্দিতে লিখেছেন, ‘এখন সে এক নয় দুই পায়ে লাফিয়ে স্কুলে যাবে। আমি তার কাছে টিকিট পাঠাচ্ছি। দুই পায়ে হাঁটার সময় এসেছে তার।’ টুইটে মানবকল্যাণে কাজ করা নিজের গড়া সুদ ফাউন্ডেশনকে ট্যাগ করেছেন তিনি।

বিহার সরকারের ভবন নির্মাণ বিভাগের মন্ত্রী ডা. অশোক চৌধুরীও সীমার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেই ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, আমরা গর্বিত যে আমাদের রাজ্যের শিশুরা শিক্ষার প্রতি সচেতন হচ্ছে, সমস্ত বাধা অতিক্রম করে শিক্ষা গ্রহণ করছে। সীমা এবং তার মতো প্রত্যেকটি শিশুকে চিহ্নিত করে তাদের যথাযথ সাহায্য করা হবে। যাহোক এই কন্যাশিশুর কাছে প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে পোস্টে ট্যাগ করেছেন তিনি।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, সীমার ১০ বছরের লড়াই আমাকে আবেগপ্রবণ করে তুলেছে

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, ‘সব দেশপ্রেমিক মানুষের জন্য সীমা এক অনুপ্রেরণা। সীমার ১০ বছরের লড়াই আমাকে আবেগপ্রবণ করে তুলেছে। দেশের প্রত্যেকটি শিশু সুশিক্ষা চায়। আমি রাজনীতি জানি না, আমি জানি প্রত্যেক সরকারেরই যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে। সীমার মতো প্রতিটি শিশুকে সর্বোত্তম শিক্ষা দেওয়া সব সত্যিকারের দেশপ্রেমী মানুষের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এটাই প্রকৃত দেশপ্রেম।’

এদিকে, ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর বিহারের সরকারি কর্মকর্তারা সীমার স্কুলে যান এবং তাকে একটি তিন চাকার সাইকেল উপহার দেন। এখন তিন চাকার সাইকেলে বসা সীমার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।

সূত্র: এনডিটিভি।

এসএস