লুহানস্ক অঞ্চলের পোপাসনা শহরে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত আবাসিক ভবনের পাশ দিয়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন রুশপন্থি সেনা সদস্যরা। বৃহস্পতিবারের ছবি

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে দেশটির সেভেরোদোনেতস্ক শহরেই নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ জন। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরটি বর্তমানে উভয়পক্ষের ভয়ানক লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

এছাড়া যুদ্ধের মধ্যে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সেভেরোদোনেতস্ক শহর থেকে মাত্র ১২ জনকে বের করে আনা সম্ভব হয়। সেভেরোদোনেতস্ক শহরের মেয়র এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে শুক্রবার (২৭ মে) জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

শহরটির মেয়র ওলেক্সান্ডার স্ট্রিউক বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যোদ্ধাদের মধ্যে সেভেরোদোনেতস্কে ভয়াবহ লড়াই চললেও এখনও প্রায় ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার মানুষ শহরটিতে অবস্থান করছেন। এছাড়া উভয়পক্ষের এই লড়াইয়ে শহরটির ৬০ শতাংশ আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক চলা রাশিয়ার সর্বাত্মক এই হামলা সম্প্রতি গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে।

রাশিয়া অবশ্য তিনমাস ধরে সামরিক অভিযান চালালেও রুশ সেনারা প্রাথমিকভাবে প্রায় পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে হামলা পরিচালনা করে। তবে পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী মূল মনোযোগ দেয় ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়। মূলত তখন থেকে এই অঞ্চলে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে রুশ সেনারা।

আরও স্পষ্ট করে বললে, রুশ-ভাষী মানুষকে রক্ষা এবং রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষার কথা বলে দোনেতস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত ডনবাস ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আর এতেই রুশ সেনাদের ব্যাপক গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত হচ্ছে ইউক্রেনের এই শিল্প এলাকা।

বিবিসি বলছে, বর্তমানে ডনবাসের লুহানস্ক অঞ্চলের একমাত্র সেভেরোদোনেতস্ক এলাকাটিই ইউক্রেনের সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী এটিকে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত বাকি ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে।

মেয়র ওলেক্সান্ডার স্ট্রিউক বলেছেন, রাশিয়ার যোদ্ধা ও নাশকতাকারী গ্রুপ শহরের একটি হোটেলে প্রবেশ করলেও ইউক্রেন এখনও শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী শহর লিসিচানস্ক এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের বাখমুত শহরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী প্রধান সড়কটি খোলা রয়েছে, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সড়কে ভ্রমণ বিপজ্জনক।

টিএম