তীব্র খাদ্য ঘাটতি এড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কৃষকদের অধিক পরিমাণে ধান রোপণের আহ্বান জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার দেশটির সরকারের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা কৃষকদের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন।

দেশটিতে ধানের উৎপাদন ৫০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন। যা ইতোমধ্যে তীব্র আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হওয়া শ্রীলঙ্কার বিপর্যয়কর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।

গত সাত দশকেরও বেশি সময় পর শ্রীলঙ্কা এবারই প্রথম সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। দুই কোটি ২০ লাখ মানুষের দ্বীপ রাষ্ট্রের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে গেছে এবং জ্বালানি, খাদ্য এবং ওষুধসহ গুরুত্বপূর্ণ আমদানি পণ্যের অর্থও পরিশোধ করতে পারছে না।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির কৃষিমন্ত্রী মাহিন্দা আমারাবীরা বলেছেন, ‘এটি পরিষ্কার— খাদ্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। আমরা দেশের সকল কৃষককে আগামী পাঁচ থেকে দশ দিনের মধ্যে তাদের ক্ষেতে ধান চাষ করার জন্য অনুরোধ করছি।’

আগামী আগস্টের মধ্যে তীব্র খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য সার আমদানিতে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এই অর্থের ব্যবস্থা করতে রীতিমতো লড়াই করছে দেশটি।

দেশটিতে আগামী মৌসুম শুরু হয় সাধারণত জুনের শুরুর দিকে। সেই সময় প্রয়োজন হলেও চাহিদার বেশিরভাগ সারই অনেক দেরিতে পৌঁছাবে বলে দেশটির একদল বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, আগামী দুই মৌসুমে ধান, চা ও ভুট্টার মতো প্রধান ফসলের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সার পাওয়া যাবে না।

শ্রীলঙ্কার পেরাদেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষির অধ্যাপক বুদ্ধি মারাম্বে বলেছেন, কিছু এলাকায় ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ধানের ফলন ৫০ শতাংশের বেশি হ্রাস পাবে। এমনকি যদি সার আজকেও আনা হয়, তাহলেও ভালো ফসল পেতে তা অনেক দেরি হয়ে যাবে।

কৃষিমন্ত্রী মাহিন্দা আমারাবীরা বলেছেন, ৬৫ হাজার টন সার সংগ্রহের জন্য ভারতের সাথে আলোচনা চলমান আছে। এছাড়াও অন্য সাতটি দেশের কাছে সার সরবরাহের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে সেসব চালান কবে আসবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

গত মাসে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিদেশি ঋণ পরিশোধে নিজেদের অক্ষম ঘোষণা করে। দেশটিতে এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশের বেশি এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৪৬ শতাংশে পৌঁছায়।  

এসএস