ইউক্রেনজুড়ে বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পশ্চিম, উত্তরের পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় দেশটির সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বৃহত্তম এই যুদ্ধ পঞ্চম মাসে প্রবেশের দিনে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করেছে বলে শনিবার ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তা বলেছেন, শুক্রবার পূর্ব লুহানস্ক অঞ্চলের সেভেরোদনেৎস্ক এবং লিসিচানস্কের শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে রাশিয়া। সেখানকার একটি রাসায়নিক কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে শহরের শত শত বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়েছেন।

সেভেরোদনেৎস্কে রাশিয়ার হামলা তীব্র হওয়ায় সৈন্যদের শহরটি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইউক্রেন। শহরটি রক্ষা করার মতো খুব বেশি কিছু না থাকায় সৈন্যদের ফিরতে বলেছে ইউক্রেন। গত মে মাসে মারিউপোল শহরের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর সেভেরোদনেৎস্কে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল ইউক্রেনের সৈন্যরা।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার সৈন্যদের ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার চার মাস পর সেভেরোদনেৎস্ক থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করল ইউক্রেন। রাশিয়ার চলমান এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুদ্ধে প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও টাল-মাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, রাতভর পুরো ইউক্রেনে ৪৮টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রুশ সৈন্যরা। রাশিয়া এখনও ইউক্রেনকে ভয় দেখাতে, আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছে। মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।

রাশিয়ার সাম্প্রতিক এই অভিযানে লুহানস্কের পুরো নিয়ন্ত্রণ মস্কোর হাতে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের লিসিচানস্ক শহর রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেৎস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে। এই তালিকায় এবার যুক্ত হতে যাচ্ছে সেভেরোদনেৎস্ক।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস