বাইডেনকে শুভেচ্ছা জানাবেন না পুতিন: ক্রেমলিন

বিগত বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দিবস ৪ জুলাই তারিখে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানো হলেও এবার তার ব্যাতিক্রম হচ্ছে।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে ওয়াশিংটনের চরম ‘অবন্ধুত্বপূর্ণ’ আচরণের জেরে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দিবসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ভ্লাদিমির পুতিন কোনো শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাননি বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন।

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এ বছর আসলে (যুক্তরাষ্ট্রকে) অভিনন্দন জানানোর মতো পরিস্থিতি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের অবন্ধুসুলভ বিভিন্ন নীতিই এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী।’

ইউক্রেনে অব্যাহত থাকবে অভিযান

এদিকে সোমবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন। সে বৈঠকে রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

রোববার লিসিচানস্ক শহর দখলের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের পুরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয় রুশ বাহিনী।

লুহানস্কের বিজয়কে অনুপ্রেরণা হিসেবে ধরে নিয়ে রুশ সেনারা যেন ইউক্রেনে তাদের অভিযানের দৃঢ়তা অব্যাহত রাখে— সোমবারের  বৈঠকে শোইগুকে সেই নির্দেশ দিয়ে পুতিন বলেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিামাঞ্চল শাখার সমস্ত ইউনিটকে কেন্দ্রের নির্দেশিত পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।’

‘আমি আশা করি, লুহানস্কে যা হয়েছে— অন্যান্য এলাকায়ও তার ধারবাহিকতা বজায় রাখবে আমাদের সেনারা।’

পাশাপাশি রুশ সেনাবাহিনীর যেসব ইউনিট লুহানস্ক অভিযানে অংশ নিয়েছে, সেসব ইউনিটের সেনাদের আপাতত বিশ্রামে রাখার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দ’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

লুহানস্ক ও প্রতিবেশী প্রদেশ দোনেৎস্ক মিলেই ইউক্রেনের শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চল দনবাস; লিসিচানস্ক বাদে লুহানস্কের বাকি অংশ আগেই দখলে নিয়েছিল রাশিয়া ও তার রুশভাষী ইউক্রেইনীয় মিত্ররা। লুহানস্কের শেষ অবস্থান লিসিচানস্ক থেকে রোববার ইউক্রেইন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার মধ্য দিয়ে ক্রেমলিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হাসিল হলো।

বৃহস্পতিবার ১৩১তম দিনে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে লুহানস্ক ছাড়াও ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।

সূত্র: রয়টার্স, এএফপি

এসএমডব্লিউ