জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস

বিক্ষোভ দমনে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের হোতাদের ‌‘বর্বর বলপ্রয়োগ’র নিন্দা এবং দেশটির সেনাবাহিনীকে দমন-পীড়ন বন্ধ করে বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। সোমবার জেনেভাভিত্তিক জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের ৪৬তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এই আহ্বান জানান তিনি।

রেকর্ডকৃত ভাষণে তিনি বলেন, ‘ আজ আমি মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে অবিলম্বে দমন-পীড়ন বন্ধের আহ্বান জানাই।’

তিনি বলেন, ‌‌‘বন্দিদের মুক্তি দিন। সহিংসতা শেষ করুন। মানবাধিকার এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনে দেশের জনগণ যে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন; তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুন।’ অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমাদের আধুনিক বিশ্বে অভ্যুত্থানের কোনও জায়গা নেই।’

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার অভ্যুত্থানবিরোধীদের বিক্ষোভ কঠোর হস্তে দমনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতায় ফেরানোর লক্ষ্যে দেশটির লাখ লাখ মানুষ গত ১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করে আসছে। ধীরে ধীরে শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ জোরাল হয়ে ওঠে দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পর।

প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলমান এই বিক্ষোভে ভয়াবহ রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে গত শনিবার। ওই দিন দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দু’জন এবং ইয়াঙ্গুনে তৃতীয় আরেকজনের প্রাণহানি ঘটে।

সেনাবাহিনী জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে সোমবার বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে দিলেও তাতে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দেশটির বৃহত্তম শহর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র ইয়াঙ্গুনে লাখ লাখ মানুষ জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ করেন।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

শনিবারের প্রাণঘাতী ওই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন অ্যান্তনিও গুতেরেস। রোববার এক টুইট বার্তায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণবিনাশী শক্তি প্রয়োগ, ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং হয়রানি গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, জাতিসংঘসহ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্পষ্টভাবে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, অভ্যুত্থানের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং কানাডা।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস