ছবি: রয়টার্স

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগ দাবি করে তার সরকারি কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন একদল বিক্ষোভকারী।

এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার সকালের দিকে রাজধানী কলম্বোর একদল বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা চালান, এসময় তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন— ‘রনিল বাড়ি যাও।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হামলার কিছুক্ষণ আগেই নিজেকে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন রনিল বিক্রমাসিংহে। কিন্তু তার এই ঘোষণা বিক্ষুব্ধ লঙ্কানদের একদমই শান্ত করতে পারেনি, কারণ সাধারণ জনগণের কাছে বিক্রমাসিংহে রাজাপাকসে পরিবারের মিত্র হিসেবেই পরিচিত।

ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে ঘোষণার পরেই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন বিক্রমাসিংহে। তার মধ্যেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘাত হয় বিক্ষোভকারীদের। ক্ষুব্ধ জনতাকে পিছু হটাতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস ছোড়ে পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ— প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে দেশ ছেড়ে পালাতে সহায়তা করেছেন রনিল।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। বর্তমানে দেশটিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বলতে আর কিছুই নেই। ফলে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত শ্রীলঙ্কা খাবার, ওষুধ, জ্বালানির মতো অতি জরুরি আমদানিও করতে পারছে না।

বর্তমান এই দুরাবস্থার জন্য দেশটির অধিকাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং তার  বড়ভাই ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে দায়ী করে তাদের পদত্যাগের দাবিতে গত মার্চ থেকেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ জনগণ।

ইতোমধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন গোতাবায়ার বড়ভাই এবং শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর ত্রিকোনমালিতে নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে সপরিবারে রয়েছেন তিনি।

এদিকে, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে ঘোষণার পর বুধবার রাজধানী কলম্বোসহ পশ্চিমাঞ্চলে কারফিউ ও দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন রনিল বিক্রমাসিংহে।

এসএমডব্লিউ