বিল গেটস, ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটস নিজের সব সম্পদ মানবকল্যাণে ব্যায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুক্রবার নিজের ব্যক্তিগত ব্লগে এক লেখায় এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

‘ভবিষ্যত পরিকল্পনা’ শিরোনামের সেই লেখায় বিল গেটস বলেন, ‘আমার নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের সাধারণ জীবনযাপনের জন্য যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তা রেখে বাকি সব অর্থ আমি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

‘এই অর্থদানকে আমি মহৎ আত্মত্যাগ বলতে নারাজ। কারণ, ফাউন্ডেশনে কাজের সুবাদে আমি শিখছি যে কীভাবে বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। ফাউন্ডেশনের কাজ আমাকে আনন্দ দেয় এবং আমি বিশ্বাস করি, এই বিশ্বের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের স্বার্থে নিজের সম্পদ এই সমাজকে ফিরিয়ে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আমার রয়েছে। পাশপাশি আমি আশা করি, সমাজের আরও যারা ধনী ব্যক্তি রয়েছেন, তারাও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসবেন।’

এক্ষেত্রে বিশ্বের অষ্টম ধনী ব্যক্তি ও সফলতম মার্কিন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা ওয়ারেন বাফেটের উদাহারণ টানেন বিল গেটস। ব্লগে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন বাফেট।

‘২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশনকে ৩৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার দিয়েছেন ওয়ারেন(বাফেট)। সর্বশেষ গত জুনেও ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দিয়েছেন তিনি।’

মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী জায়ান্ট মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এ মুহূর্তে বিশ্বের পঞ্চম ধনী ব্যক্তি। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ ৩০ হাজার কোটি (১০৩ বিলিয়ন) ডলার।  

২০০০ সালে বিল গেটস ও তার সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস প্রতিষ্ঠা করেন অলাভজনক সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। জন্মলগ্ন থেকেই বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য, রোগব্যাধি ও অসাম্য দূর করতে কাজ করে যাচ্ছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাসীকে স্বাস্থ্য সহায়তা দেওয়া ও করোনা টিকার গবেষণা বাবদ এ ফাউন্ডেশন ব্যয় করেছে ২০০ কোটি ডলার।

ব্লগবার্তায় ৬৬ বছর বয়সী এই মানবহিতৈষী ধনকুবের জানান, আগামী বছর থেকে থেকে জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন খাতে অর্থ বরাদ্দ আরও বাড়াবে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

‘বর্তমানে আমরা মানবকল্যাণমূলক বিভিন্ন খাতে প্রতি বছর ৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছি। এই বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে এবং ২০২৬ সাল নাগাদ বরাদ্দের পরিমাণ ৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। আমাদের লক্ষ্য একই থাকবে, কিন্তু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী বোর্ড মনে করছে যেসব খাতে আমরা কাজ করছি, সেই কাজকে আরও বিস্তৃত পরিসরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এ কারণেই অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

সূত্র: ব্লুমবার্গ

এসএমডব্লিউ