যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে করোনা লকডাউন শিথিলে চার স্তরের পরিকল্পনা পেশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। স্থানীয় সময় সোমবার এই পরিকল্পনা উপস্থাপনের সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী জুন মাসের শেষ নাগাদ ইংল্যান্ডের অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর ‘ক্রমশ এবং সতর্ক’ এই পরিকল্পনায় লকডাউন শিথিলের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়েছে স্কুলগুলো। আগামী ৮ মার্চ ইংল্যান্ডের স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হবে।

নিত্য প্রয়োজনীয় নয়— এমন পণ্যসামগ্রীর দোকান, সেলুন, খোলামেলা পানশালা এবং রেস্তোঁরাগুলো খুলে দেওয়া হবে ১২ এপ্রিল। তবে অভ্যন্তরীণ জনসমাগমের জায়গাগুলো যেমন— থিয়েটার ও সিনেমা হল, স্টেডিয়াম, গৃহস্থিত বার ও রেস্তোঁরাগুলো খুলবে আরও কিছুদিন পর— ১৭ মে।

আগামী ২১ জুনের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ সংক্রান্ত যাবতীয় বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। তবে যদি সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হয়, সেক্ষেত্রে লকডাউন শিথিল সংক্রান্ত এই আদেশ স্থগিত করা হবে বলেও জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী।

পুরো যুক্তরাজ্যে অর্থাৎ ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ার‌ল্যান্ডে লকডাউন এবং করোনা বিধিনিষেধ জারি থাকা এলাকাগুলোতে এই আদেশ কার্যকর হবে। তবে স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের যে সব জায়গায় করোনা সংক্রমণ ইতোমধ্যে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে- সে সব এলাকায় শিক্ষার্থীরা সোমবার থেকেই স্কুলে যেতে পারবে।

লকডাউন শিথিলের এই পরিকল্পনা পেশ করে বরিস জনসন বলেন, ‘খুব দ্রুত ব্রিটেন এবং এই বিশ্ব করোনামুক্ত হতে পারবে না, আবার দিনের পর দিন লকডাউন এবং বিধিনিষেধের মধ্যে থেকে আমরা আমাদের অর্থনীতি, শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ও শিশুদের ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখেও ফেলতে পারি না।’

‘বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমাদের পথ একটিই, আর তা হলো— ভয়ভীতিকে পেছনে ফেলে সতর্কতার সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়া। এই পরিকল্পনাকে আমরা বলতে পারি- স্বাধীনতার উদ্দেশে একমুখী যাত্রাপথ।’

গতবছর ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি দেখা দেওয়ার পর থেকে যে কয়েকটি দেশ এই ভাইরাসের সংক্রমণে পর্যুদস্ত অবস্থায় রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র; বিশেষ করে গত ডিসেম্বরে দেশটিতে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন দেখা দেওয়ার পর থেকে ভয়াবহ অবনতি হয়েছে সংক্রমণ পরিস্থিতির।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, ব্রিটেনে করোনায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪১ লাখ ২৬ হাজার ১৫০ এবং এ রোগে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৭৫৭জন। ডিসেম্বরে করোনার নতুন ধরন দেখা দেওয়ার পর থেকে অনেক দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ এখনও বন্ধ রয়েছে ব্রিটেনের।

সূত্র: আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ