হিমারস রকেট সিস্টেম

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরুর পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো এই অভিযোগ সামনে আনলো মস্কো। বুধবার (৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত আমেরিকান হিমারস ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু অনুমোদন করছে যুক্তরাষ্ট্র।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগোর কোনাশেনকভ বলেছেন, ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের মধ্যে হওয়া কথপোকথন ইন্টারসেপ্ট করার মাধ্যমে এই বিষয়টি জানা গেছে। অবশ্য বিবিসি স্বাধীনভাবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্রের দাবিটি যাচাই করতে পারেনি।

রাশিয়া এর আগে ইউক্রেনে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ করার জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করেছিল। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনীয়দের ‘বিস্তারিত ও সময়-সংবেদনশীল তথ্য প্রদান করেছে যাতে তারা যে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে তা বুঝতে এবং নিজের দেশকে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে পারে।’

হিমারস এমন একটি রকেট সিস্টেম যা দিয়ে ৭০ কিমি (৪৫ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে পারে। মূলত ইউক্রেনের হাতে আগে যে ধরনের আর্টিলারি ছিল বা ব্যবহার করতো এটি তার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

ইগোর কোনাশেনকভ বলেছেন: ‘কিয়েভের বাহিনীর রকেট ডনবাস এবং অন্যান্য অঞ্চলের জনবসতিতে বেসামরিক অবকাঠামোয় আঘাত হানছে এবং এতে বিপুল বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। আর এর জন্য সরাসরি দায়ী বাইডেন প্রশাসন।’

এর আগে গত এপ্রিল মাসে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছিলেন, ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও এর নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো ইউক্রেনে ছায়াযুদ্ধে জড়িয়েছে। ৭২ বছর বয়সী এই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘যুদ্ধ মানে যুদ্ধই।’

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ সেসময় আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে এক অর্থে যুদ্ধে লিপ্ত। তারা (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে। যুদ্ধ মানে যুদ্ধই।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এই অস্ত্রগুলো বিশেষ অভিযানের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর জন্য বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচিত হবে।’

অবশ্য ইউক্রেনের সংঘাতের সময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে অসংখ্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে, নির্যাতনের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী দোনেতস্কের একটি কারাগারে মস্কো বোমা হামলা করেছে বলে অভিযোগ করে ইউক্রেন।

টিএম