ছবি: এনডিটিভি

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিল নাড়ুর একটি মন্দির থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবী পার্বতীর একটি মূর্তি চুরি হয়েছিল ১৯৭১ সালে। ৫০ বছর পর সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক নিলাম প্রতিষ্ঠানের নিউইয়র্ক শাখায়।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক নিলাম প্রতিষ্ঠান বোনহ্যামস অকশন হাউসের নিউহয়র্ক শাখার কার্যালয়ে সন্ধান মিলেছে দ্বাদশ শতকে নির্মাণ করা কষ্টিপাথরের সেই মূর্তির।

বোনহ্যামস অকশন হাউস একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন নিলাম প্রতিষ্ঠান, যার সদর দপ্তর যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও এই প্রতিষ্ঠানের শাখা কার্যালয় রয়েছে।

নিউইয়র্ক পুলিশে এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তামিল নাড়ু রাজ্য পুলিশের আইডল উইং মূর্তিটি দেশে ফিরিয়ে আনতে জরুরি কাগজপত্র প্রস্তুত করা শুরু করেছে।

গত কয়েক বছর ধরে ভারত সরকার দেশ থেকে চুরি যাওয়া বা পাচার হওয়া মূর্তি ও প্রত্নতত্ত্ব ফেরত আনতে কাজ করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০০টির বেশি মূর্তি ও প্রত্নতত্ত্ব সফলভাবে ভারতে ফেরত আনা হয়েছে।

তার মধ্যে ২০২০ সালে যুক্তরাজ্য সরকার ভারতকে ব্রোঞ্জের তৈরি তিনটি ভাস্কর্য ফেরত দেয়। যেগুলো ৪০ বছরের বেশি সময় আগে তামিলনাড়ুর মন্দির থেকে চুরি গিয়েছিল।

ফেরত আনা মূর্তিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে ব্রোঞ্জের তৈরি হিন্দু দেবতা শিবের নৃত্যরত ‘নটরাজ’ মূর্তি। ৯০০ বছরের বেশি আগে তৈরি করা সেই মূর্তিটি ২০০৮ সালে ‍অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল গ্যালারি ৫১ লাখ ডলারে কিনেছিল।

নিউ ইয়র্কে দেবী পার্বতীর যে মূর্তি পাওয়া গেছে, সেটি চুরি হওয়ার প্রথম অভিযোগ করা হয় ১৯৭১ সালে নাদানাপুরেশ্বরের শিব মন্দির থেকে। পরে ২০১৯ সালে মন্দিরের ট্রাস্টিরা পুলিশের কাছে মূর্তিটি চুরি যাওয়া বিষয়ক লিখিত অভিযোগ করলে সেটির খোঁজে তদন্ত শুরু হয়।

১৯৭১ সালে ওই মন্দির থেকে পাঁচটি মূর্তি চুরি যায়, যার মধ্যে ৫২ সেন্টিমিটার উচ্চতার ওই দেবী মূর্তিও রয়েছে। বর্তমানে মূর্তিটির মূল্য প্রায় দুই লাখ ১৩ হাজার মার্কিন ডলার বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাকি ৪টি মূর্তির হদিস এখনও পাওয়া যায়নি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দশম শতাব্দি থেকে ১৩শ শতাব্দির মধ্যে ভারতের দক্ষিণে চোল রাজবংশের রাজত্বের শেষ অংশের সময় ওই মূর্তিটি নির্মাণ করা হয়।

বোনহ্যামস অকশন হাউজে বিক্রির জন্য রাখা একটি মূর্তির ছবি দেখে তামিল নাড়ু পুলিশের আইডল উইংয়ের সন্দেহ হলে তারা এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞের মতামত নেন এবং নিশ্চিত হওয়ার পর মূর্তিটির মালিকানা দাবি করেন।

এ বিষয়ে তামিলনাড়ু পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যেহেতু ভারত ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কনভেনশন-১৯৭২’র স্বাক্ষরকারী অংশীদার, তার ভিত্তিতেই আমরা মূর্তিটির মালিকানা দাবি করছি।’

বোনহ্যামস অকশন হাউজের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

এসএমডব্লিউ