গোতাবায়া রাজাপাকসের সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করা বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের ধরপাকড় অভিযানের মুখে তারা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পাশের বিক্ষোভের মূল স্থানটি ছেড়ে দিয়েছেন। প্রায় চার মাস পর তারা বুধবার লঙ্কান প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের ওই স্থান থেকে বিক্ষোভ গুটিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন দেশটির হাজার হাজার মানুষ। আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীরা বলেছেন, তারা রাজধানী কলম্বোর গল ফেস সমুদ্রমুখী বিক্ষোভের স্থান থেকে তাঁবু গুটিয়ে নিয়েছেন।

আন্দোলনকারীদের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা ওই এলাকা খালি করার জন্য পুলিশের আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে করা চারটি চ্যালেঞ্জও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। পুলিশ আদেশে বলেছিল, বিক্ষোভের স্থানে টানানো সব তাঁবু আশপাশের হোটেলগুলোর জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।

বুধবার বিক্ষোভের স্থান থেকে তাঁবু এবং অন্যান্য অবকাঠামো গুটিয়ে নিতে দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের। দীর্ঘদিনের এই আন্দোলনের কারণে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

শ্রীলঙ্কার সর্বকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে জ্বালানি, খাদ্য এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতির প্রতিবাদে গত ৯ এপ্রিল কলম্বোতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। ৯ জুলাই কলম্বোতে হাজার হাজার মানুষের গোতাবায়া রাজাপাকসের কার্যালয় দখলে নেওয়ার মাধ্যমে এই আন্দোলন চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। আন্দোলনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে প্রথমে মালদ্বীপ পরে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান গোতাবায়া। পরে সেখান থেকেই ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। 

তার পদত্যাগের কয়েকদিন পর দেশটির সৈন্যরা অভিযান চালিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কার্যালয় থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ওই সময় অন্তত ৮০ জন বিক্ষোভকারী আহত হন এবং পরে তাদের হাসপাতালেও চিকিৎসা নিতে হয়।

তারপর থেকে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগও আনা হয়েছে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস